কিরীটেশ্বরী ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র। নিজস্ব চিত্র
দিন কয়েক থেকে ভুগছিলেন নবগ্রাম কালীগঞ্জের বাসিন্দা বছর ষাটেকের জালিমাবিবি। শুক্রবার দুপুর একটার সময় নিজের ছেলের মোটরবাইকে চড়ে কিরীটেশ্বরী প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ডাক্তার দেখাতে এসেছিলেন তিনি। কিন্তু এসে দেখেন হাসপাতালে তালা ঝুলছে। চিকিৎসক বা ফার্মাসিস্ট কেউ নেই। কাজেই ডাক্তার না দেখিয়েই ফিরে যেতে হয় জালিমাকে। অনেকে লালবাগ মহকুমা হাসপাতালে ডাক্তার দেখিয়ে বাড়ি ফিরছেন। অথচ এই করোনার আবহে প্রতিদিনই ডাক্তার আসার কথা কিরীটেশ্বরী প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, আগে কিরিটেশ্বরীর স্থানীয় বাসিন্দাদের চিকিৎসার জন্য প্রায় ২০ কিলোমিটার পথ উজিয়ে যেতে হয় নবগ্রাম ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আর নয়তো গঙ্গা পেরিয়ে সেই লালবাগ মহকুমা হাসপাতালে। পরে ১৯৭০ সাল নাগাদ তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধার্থশঙ্কর রায়ের দফতরে চিঠি করে কিরীটেশ্বরীতে একটি হাসপাতাল তৈরির আবেদন জানান স্থানীয় বাসিন্দারা। স্থানীয় বাসিন্দাদের কথা ভেবে কিরীটেশ্বরীতে একটি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র সরকারি তরফে তৈরি করা হয়। কিরীটেশ্বরী গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার সবকটি গ্রামের মানুষের চিকিৎসার জন্য একমাত্র ভরসা ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্র।
হাসপাতাল তৈরির পর থেকে রোজ নিয়মিত চিকিৎসকও মিলত। তবে, এখন তা আর মেলেনা। তবে এক জন করে হোমিয়োপ্যাথ চিকিৎসক রোজ আসেন বটে। তবে, তিনিও দুপুর দু'টোর আগেই চলে যান বলেই দবি স্থানীয় বাসিন্দাদের। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, যেখানে করোনা ও লকডাউনের পরিস্থিতিতে জেলার চিকিৎসা পরিষেবা আরও ভালো হচ্ছে সেখানে কিরীটেশ্বরী হাসপাতালে প্রতিদিন অ্যালোপ্যাথের চিকিৎসকই মিলছে না। এই ক'দিনে ভিন্ রাজ্য থেকে প্রায় দু'শো পরিযায়ী শ্রমিক ফিরেছে গোটা কিরীটেশ্বরীতে। এ অবস্থায় হাসপাতালে অ্যালোপ্যাথ চিকিৎসক না মেলায় চিন্তা সকলেরই। ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক জ্যোর্তিময় চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ডাক্তারের ঘাটতি রয়েছে। তবুও সকল ডাক্তাররাই নিজেদের কাজ ঠিক মতই করছেন।’’