বগুলা গ্রামীণ হাসপাতালের নাম বদল হতেই বিক্ষোভ স্থানীয়দের। —নিজস্ব চিত্র।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে মৃত ছাত্রের নামে নদিয়ার বগুলা গ্রামীণ হাসপাতালের নতুন নামকরণ হতেই শুরু হল বিক্ষোভ। বুধবার সকালে হাসপাতালের সামনে জড়ো হন প্রচুর স্থানীয় মানুষ। তাঁদের দাবি, মৃত ছাত্রের নামে হাসপাতালের নামকরণ করা যাবে না। বিক্ষোভকারীদের প্রশ্ন, কেন গ্রামীণ হাসপাতালের সামনে থেকে বগুলা নাম সরিয়ে দেওয়া হল? তাঁদের যুক্তি, মৃত ছাত্রকে স্মরণ করে তাহলে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়েরও নাম বদলে ফেলা হোক। এর পর হাসপাতালের নতুন নাম রং দিয়ে মুছে দেন তাঁরা।
গত ৯ অগস্ট যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক প্রথম বর্ষের ছাত্রের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়। র্যাগিং করে তাকে মেরে ফেলা হয়েছে বলে অভিযোগ করে পরিবার। মৃত ওই ছাত্রের বাড়ি বগুলায়। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাত্রের বাবা-মায়ের সঙ্গে দেখা করেন নবান্নে। মৃতের মাকে চাকরি দেওয়ার পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী জানান, বগুলা গ্রামীণ হাসপাতালের নাম পরিবর্তন করে মৃত পড়ুয়ার নামে নামকরণের সিদ্ধান্তের কথা। সোমবার রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে একটি গেজেট প্রকাশ করে তার প্রক্রিয়া শুরু হয়। মঙ্গলবার জেলা স্বাস্থ্যকর্তাদের চিঠি দিয়ে স্বাস্থ্য দফতর নাম পরিবর্তনের কথা জানিয়েও দেয়। দ্রুত আইনি প্রক্রিয়া শেষে বুধবার আনুষ্ঠানিক ভাবে মৃত ছাত্রের নামে হাসপাতালের উদ্বোধন করার কথা ছিল জেলাশাসকের। নীল রং দিয়ে হাসপাতালের নতুন নাম লেখা হয়েছিল। কিন্তু তার কয়েক ঘণ্টা আগেই শুরু হয় বিক্ষোভ।
স্থানীয়দের দাবি, দরকারে হাসপাতালের অন্য কোনও ভবন তৈরি করে মৃতের ছাত্রের নামে তার নামকরণ হোক। ওই হাসপাতালের সঙ্গে বগুলার আবেগ জড়িয়ে আছে। তাই ‘বগুলা’ শব্দ বাদ দেওয়া যাবে না। বিক্ষোভকারীদের তরফে স্থানীয় শিক্ষক নবেন্দু অধিকারী বলেন, ‘‘প্রয়োজন হলে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করা হোক। কোনও ভাবেই হাসপাতাল থেকে ‘বগুলা’ নাম বাদ দেওয়া যাবে না।’’ অন্য দিকে, হাসপাতাল সুপার বীরেন মজুমদার জানান, তিনি নির্দেশ অনুসারে কাজ করেছেন। এই বিক্ষোভকে তিনি ‘অনভিপ্রেত’ বলে মন্তব্য করেন। তাঁর কথায়, ‘‘স্বাস্থ্য দফতর থেকে যে নির্দেশিকা এসেছিল, সেই অনুযায়ী কাজ করেছি। কেউ নাম মুছে দিলে আমাদের কিছু করার নেই। তবে এই ঘটনা না হলেই ভাল হত।’’