জেএনএম মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাসে স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের চার আধিকারিক। চলছে অধ্যক্ষের ঘরে বৈঠক। নিজস্ব চিত্র।
কেউ এক মাস আগে, কেউ দু’সপ্তাহ আগে অস্ত্রোপচারের জন্য নির্দিষ্ট বিভাগ থেকে তারিখ পেয়েছিলেন। অথচ গত ৯ অগস্ট থেকে শুরু হওয়া চিকিৎসক পড়ুয়াদের আন্দোলনের জেরে কল্যাণী জেএনএম মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগে অস্ত্রোপচার হচ্ছে না। বিপাকে পড়েছেন রোগী ও তাঁর আত্মীয়েরা। তবে সঙ্কটজনক রোগীর জরুরি অস্ত্রোপচার হচ্ছে বলে দাবি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, চিকিৎসক পড়ুয়াদের আন্দোলনের আগে প্রতিমাসে গড়ে সাড়ে পাঁচশো পূর্ব নির্ধারিত অস্ত্রোপচার হত জেএনএম মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। অর্থাৎ প্রতিদিন গড়ে ১৮-২০ জন রোগীর ‘কোল্ড অপারেশন’ বা ‘পূর্ব নির্ধারিত অস্ত্রোপচার’ হত হাসপাতালে। আন্দোলনের জেরে তা নেমে এসেছে দুই-তিনটি অস্ত্রোপচারে।
চিকিৎসকদের অনেকেই জানান, এমন অনেক ছোট, বড় অস্ত্রোপ্রচার রয়েছে যা মহকুমা, স্টেট জেনারেল হাসপাতালে সম্ভব নয়। ফলে জেলা তো বটেই, পার্শ্ববর্তী হুগলি, পূর্ব বর্ধমান, উত্তর ২৪ পরগনা জেলা থেকে রোগীরা এই হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে আসেন। তাঁদের অনেককে ‘কোল্ড ওটি’-র দিন ঠিক করে দেওয়া হয়। অস্ত্রোপচারের সংখ্যা কমে যাওয়ায় বাধ্য হয়ে রোগীদের একাংশ এখন বিভিন্ন বেসরকারি নার্সিংহোম বা হাসপাতালে উপর নির্ভরশীল হচ্ছেন।
আগামীতে কল্যাণী জেএনএম মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে পরিষেবা পুরোদমে স্বাভাবিক হলেও কোল্ড ওটি-র ক্ষেত্রে রোগীদের তারিখ পেতে চরম হয়রানি হওয়ার আশঙ্কাও করছেন চিকিৎসকাদের একাংশ। 'কোল্ড ওটি' বা পূর্বনির্ধারিত অস্ত্রোপচার করার ক্ষেত্রে সমস্যা কোথায়? জেএনএম কর্তৃপক্ষের দাবি, অস্ত্রোপচারের ক্ষেত্রে সিনিয়র চিকিৎসক, নার্সিং স্টাফ ছাড়াও চিকিৎসক পড়ুয়াদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। তাঁরা যেহেতু কর্মবিরতিতে শামিল হয়ে প্রতিবাদ করছেন, তাই তাঁদের ছাড়া অস্ত্রোপচার সম্ভব হচ্ছে না।
বিষয়টি নিয়ে কল্যাণী জেএনএম মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সুপার অতনু বিশ্বাস বলেন, "সমস্যা খুব বেশি নয় এমন রোগীদের ক্ষেত্রে 'কোল্ড ওটি' বা পূর্ব নির্ধারিত সময়ে অস্ত্রোপচার করা হয়। সে ক্ষেত্রে অস্ত্রোপচার কয়েক দিন বাদে করালে সমস্যা হওয়ার কথা নয়। তবে জরুরি অস্ত্রোপচার সময়ে হচ্ছে। প্রসূতি বিভাগেও অস্ত্রোপচারের কাজ স্বাভাবিক রয়েছে। আমরাও চেষ্টা করছি, পরিস্থিতির যত দ্রুত স্বাভাবিক করা যায়।’’