বিদ্যুৎ যে থাকবে না, তা আগেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে। ভরসা ছিল একমাত্র জেনারেটরটি। কিন্তু, মঙ্গলবার কার্যক্ষেত্রে সেটিই ভোগাল শক্তিনগর জেলা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে।
যান্ত্রিক গোলযোগের কারণে তা চালানোই গেল না। ফলে আঁধারে ডুবে গেল পুরো হাসপাতাল। ঘণ্টাখানেকের চেষ্টায় জেনারেটরটি ঠিক হয়। তার কিছুক্ষণের মধ্যে ফিরে আসে বিদ্যুৎ। তবে এই ঘটনা প্রমাণ করে দিন যে, বিদ্যুৎ বিভ্রাট হলে তার জন্য মোটেই তৈরি নয় এই হাসপাতাল।
অবশ্য, লোডশেডিং চলাকালীন হাসপাতালের জেনারেটর বিকল হওয়া নতুন কিছু নয়। এর আগে এ মাসের প্রথম সপ্তাহে লোডশেডিং চলাকালীন কৃষ্ণনগর সদর হাসপাতালের তিনটি জেনারেট পর পর অকেজো হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত টর্চ জ্বেলে অস্ত্রপচার করতে হয়েছিল। মঙ্গলবার জেলা হাসপাতালের আর এক ক্যাম্পাস শক্তিনগর জেলা হাসপাতালেও তার পুনরাবৃত্তি ঘটল।
তার জেরে গুমোট গরমে গলদঘর্ম হতে হল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীদের। সমস্যায় পড়তে হল প্যাথলজি বিভাগে আসা রোগীগের। এক্স রে বিভাগ-সহ অন্য বিভাগেও সমস্যা দেখা দেয়।
বিদ্যুতের লাইনের আশপাশের গাছের ডালগুলি তারের উপর এসে পড়েছিল। সেই জন্য রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানী জানিয়েছিল মঙ্গলবার বিধ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে গাছের ডাল ছাঁটা হবে। এই কাজের জন্য গত মঙ্গলবারও এক ঘণ্টা বিদ্যুত ছিলনা।
বিশাল হাসপাতালে জেনারেটর মাত্র একটি। এদিন সেই জেনারেটরটি চালাতে গিয়ে যান্ত্রিক গোলযোগ দেখা দেয়। তাহেরপুরের বাসিন্দা পরিতোষ ঘোষ তাঁর বৃদ্ধা মা সাবিত্রী ঘোষকে নিয়ে সিটি স্ক্যান করাতে এসেছিলেন জেলা হাসপাতালে। বিদ্যুত বিভ্রাটের জেরে তা পিছিয়ে যায়।
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তাপস রায় বলেন, ‘‘জেনারেটরটি বিকল হয়ে পড়ায় সামান্য সময়ের জন্য সমস্যা হয়েছিল। পরে অব্শ্য পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।’’
বিদ্যুত বণ্টন কোম্পানীর কৃষ্ণনগরের ডিভিশনের ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার রাজু মন্ডল জানান, সমস্যা যাতে না হয়, তার জন্য শহরে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে ডাল ছাঁটা হয়। কিন্তু, তা আগে থেকে জানিয়েই করা হয়েছিল। এদিন সকাল সাতটা থেকে প্রায় ১০টা পর্যন্ত ওই এলাকায় বিদ্যুত সরবরাহ বন্ধ ছিল।
শক্তিনগর জেলা হাসপাতালের একটি জেনারেটর কয়েক বছর আগে থেকেই বিকল হয়ে রয়েছে। ফলে একটি ১২৫কেভির জেনারেটর চালিয়ে হাসপাতালে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা স্বাভাবিক রাখা হয়। কিন্তু এদিন সকাল ৯টা নাগাদ সেই জেনারেটরে যান্ত্রীক ত্রুটি দেখা দেয়। ফলে লোডশেডিং চলাকালীন জেনারেট বিকল হওয়ায় বিদ্যুতহীন হয়ে পড়ে হাসপাতাল।
যদিও শক্তিনগর হাসপাতাল সুপার শচীন সরকারের দাবী, লোডশেডিংয়ের জন্য কোনও সমস্যা হয়নি। তিনি বলেন, ‘‘এদিন লোডশেডিং হবে জানা ছিলনা।’’
পুর্ত দফতরের ইলেক্ট্রিক্যাল বিভাগ হাসপাতালের বিদ্যুত লাইনের দেখভাল করে। জেনারেটরের দেখভালও তারাই করে। এই বিষয়ে তিনি কিছু বলতে রাজি হননি পুর্ত দফতর (ইলেক্ট্রিক্যাল) এর এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার অমিত দাস কার্য়ত হুমকির সুরে জানিয়ে দেন, সকালের বিষয় নিয়ে তিনি সন্ধ্যায় মন্তব্য করবেন না। হুমকি দেওয়ার সময় তিনি জেলাশাসকের নামও ব্যবহার করেন। জেলা শাসক সুমিত গুপ্তা বলেন, তিনি বিষয়টি নিয়ে অমিতবাবুর সঙ্গে কথা বলবেন।