কল্যাণী স্টেশনে সম্বল সাধারণ সিঁড়িই।। ছবি: সুদেব দাস।
কেউ এসেছেন মুর্শিদাবাদ থেকে। কেউ আবার উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগর থেক।
ওঁদের কেউ যাবেন রাজ্যে হৃদ্রোগের একমাত্র সরকারি হাসপাতাল গান্ধী মেমোরিয়ালে। কেউ আবার কল্যাণী জেএনএমে। ট্রেনে চেপে কল্যাণী স্টেশনে নামার পর স্টেশনের বাইরে আসতে হলে রোগীদের সিঁড়ি ভেঙে ওঠানামা করতে হয়। রাজ্যের প্রথম পরিকল্পিত শহর মেডিক্যাল হাবের তকমা পেলেও স্টেশনে নেই চলমান সিঁড়ি। থার ফল ভুগতে হয় রোগী বা তাঁদের আত্মীয়দের।
কল্যাণী স্টেশনের পূর্ব দিকে রয়েছে গান্ধী মেমোরিয়াল হাসপাতাল। এমসে যেতে হলেও রোগীদের নামতে হয় কল্যাণী স্টেশনে। স্টেশনের পশ্চিম দিকে রয়েছে কল্যাণী জেএনএম মেডিকেল। রয়েছে ইএসআই হাসপাতালও। এই সব সরকারি হাসপাতাল ছাড়াও এই শহরে রয়েছে খান পনেরো নার্সিংহোম। নদিয়া ছাড়াও পার্শ্ববর্তী জেলাগুলি থেকে প্রতি দিন রোগীরা আসেন। তাঁদের অনেকেই ট্রেনে কল্যাণী স্টেশন হয়ে হাসপাতালে যাতায়াত করেন।
সোমবার সকালে হৃদ্রোগের চিকিৎসা করাতে গান্ধী মেমোরিয়াল হাসপাতালে গিয়েছিলেন ধানতলার থানার আড়ংঘাটার সত্তরোর্ধ্ব বাসিন্দা সুবীর সরকার। কিন্তু ট্রেন থেকে নামার পর স্টেশনের বাইরে যেতেই তাঁর প্রায় আধ ঘণ্টা সময় লেগে যায়। বৃদ্ধ বলেন, "এমনিতেই আমি অসুস্থ। তার উপর সিঁড়ি ভাঙার ধকল এই বয়সে আর নিতে পারি না। একটু একটু করে সিঁড়ি ভেঙেছি, আর জিরিয়েছি। এত কষ্ট হবে আগে জানলে, চিকিৎসা করাতেই আসতাম না।" রোগীর পরিজনদের একাংশের আক্ষেপ, স্টেশনে চলমান সিঁড়ি না থাকায় হাসপাতালে যাতায়াতের ক্ষেত্রে প্রতিনিয়ত সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। প্রবীণ নাগরিকদের তো বটেই, অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদেরও যথেষ্ট সমস্যা হচ্ছে।
কল্যাণী মেডিক্যাল কলেজ ও জহরলাল নেহরু মেমোরিয়াল হাসপাতালের অতিরিক্ত মেডিক্যাল সুপার চিকিৎসক অতীন্দ্রনাথ মণ্ডল বলেন, "কল্যাণীর মতো রেল স্টেশনে অবশ্যই চলমান সিঁড়ি থাকা জরুরি। হৃদ্রোগী ও অন্তঃসত্ত্বাদের অনেকেরই সিঁড়ি ভেঙে ওঠা-নামা ঠিক নয়। অবশ্যই এ ব্যাপারে রেলের উদ্যোগী হওয়া উচিত।"
পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র বলেন, "অমৃত ভারত প্রকল্পে কল্যাণী স্টেশনকে ঢেলে সাজা হবে। ওই প্রকল্পেই চলমান সিঁড়ির হবে।" কবে তা হবে তা অবশ্য নির্দিষ্ট করে জানাতে পারেননি রেল কর্তৃপক্ষ।