সরেজমিন। চলছে জমি নিয়ে আলোচনা। নিজস্ব চিত্র
কন্যাশ্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা ঘোষণা হয়েছিল আগেই। বাকি ছিল জমি চিহ্নিত করা। শুক্রবার সেই কাজ অনেকটা এগিয়ে রেখে গেলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী তথা নদিয়ায় তৃণমূলের পরিদর্শক পার্থ চট্টোপাধ্যায়। কৃষ্ণনগর সরকারি মহাবিদ্যালয়ের মাঠ পরিদর্শন করে বললেন, “জমি পছন্দ হয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা, জমিটা শিক্ষা দফতরের নামেই আছে। ফলে সুবিধাই হল।” তাঁর কথায়,“আমি মুখ্যমন্ত্রীকে বলব। সিদ্ধান্ত তিনিই নেবেন।”
কিছুদিনের মধ্যেই জেলা সফরে আসার কথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তার আগেই কোন জমিতে বিশ্ববিদ্যালয় হবে তা নিশ্চিত হয়ে যাবে বলে মনে করছেন জেলা প্রশাসনের কর্তাদের অনেকেই। কারণ, জেলা সফরে মুখ্যমন্ত্রীর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিলান্যাস করার সম্ভাবনা প্রবল। প্রথমে যে জমির কথা বলা হচ্ছিল সেটা যে উপযুক্ত নয় তা জানিয়ে দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী। বাকি থাকছে কলেজের এই সাড়ে বারো একর জমি। জেলার প্রশাসনের কর্তা থেকে শুরু করে শাসক দলের স্থানীয় নেতা—প্রত্যেকেই চাইছেন শহরের ভিতরে এই মাঠেই তৈরি হোক কন্যাশ্রী বিশ্ববিদ্যালয়।
প্রথম দিকে ভাবা হয়েছিল, শহরের প্রান্তে গোদাডাঙায় পুরসভার জমিতে তৈরি হবে বিশ্ববিদ্যালয়টি। জেলা প্রশাসনের কর্তারা গিয়ে সেই জমি দেখেও আসেন। কিন্তু এই জমি তাঁদের সে ভাবে পছন্দ হয়নি। কারণ, ওই জমির পাশেই পুরসভার ময়লা ফেলার জায়গা। চার দিকে প্রবল দুর্গন্ধ, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ। তার উপরে জায়গাটি শহরের বাইরে। শিক্ষামন্ত্রী নিজেও সে কথা জানিয়েছেন এ দিন। জেলা প্রাশাসনের পাশাপাশি জেলার তৃণমূল নেতারাও যে ওই জমিটি পছন্দ করছেন না, তা তাঁরা এ দিন পার্থবাবুকে বুঝিয়ে বলেন।
বামফ্রন্টের আমলে কলেজের মাঠে উন্নতমানের ‘ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ড’ বানানো শুরু করেছিলেন তৎকালীন সাংসদ জ্যোর্তিময়ী সিকদার। কিন্তু সেই সময় বিরোধী দলে থাকা তৃণমূলের নেতাদের পাশাপাশি শহরের নাগরিক সমাজের একটা অংশ তাতে প্রবল বাধা দেন। মাঠ খারাপ হবে, পরিবেশ নষ্ট হবে বলে দাবি করার পাশাপাশি তাঁরা জানিয়েছিলেন, কৃষ্ণনগর সরকারি কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত করতে গেলে জমি কম পড়বে। মাঝ পথে আটকে যায় সেই প্রকল্প। সেই মাঠেই কন্যাশ্রী বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হতে খুব খুশি সেই তৃণমূল নেতারা। সেইসময়ে তাঁরা বাধা দিয়েছিলেন বলেই আজ ওই জমি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ব্যবহৃত হতে পারছে বলে দাবি করেছেন তাঁরা। গৌরীশঙ্কর দত্ত, উজ্জ্বল বিশ্বাসরা সেই ইতিহাসও এ দিন শিক্ষামন্ত্রীর সামনে তুলে ধরেন।