সুতিতে ড্রোনের মাধ্যমে হারিয়ে যাওয়া মোষ উদ্ধার। —নিজস্ব চিত্র।
অন্তঃসত্ত্বা একটি মোষ হারিয়ে গিয়েছিল ৬ দিন আগে। মোষের মালিক মাধাই ঘোষ বলেন, “লক্ষ টাকার উপর দাম মোষের। প্রতিদিন ৬-৭ কিলো দুধ দেয়। বেশ কয়েকটি মোষ পুষেই চলছে সংসার।’’ সেই মোষ হারিয়ে যাওয়ায় চিন্তায় পড়েছিলেন তিনি। পাড়ার লোকজনের পরামর্শে এক পরিচিতের কাছ থেকে ড্রোন ভাড়া করে তা হোগলার ঘন জঙ্গলের উপর দিয়ে ওড়াতেই ছবিতে দেখা যায় হারিয়ে যাওয়া মোষটি ঘাড় উঁচু করে দেখছে।
ফের জঙ্গলের খুব কাছ দিয়ে ড্রোনটি ওড়ানো হয়, যাতে আরও পরিষ্কার ভাবে দেখা যায় মোষটির ইতিমধ্যে বাচ্চাও হয়েছে, সে দাঁড়িয়ে মায়ের পাশেই। জঙ্গলের ৮-৯ ফুট মাথার উপর দিয়ে ড্রোন উড়তেই ড্রোনের শব্দের পিছনে বাচ্চাকে নিয়ে ছুটতে শুরু করে মোষটি। সামনেই মাধাই দাঁড়াতেই থমকে দাঁড়িয়েছে মোষও। ড্রোন নামল মাটিতে, মাধাই গায়ে মাথায় হাত বোলাতেই মোষও চলল বাড়ির চেনা পথে, মায়ের পিছনে তার বাচ্চা। মাধাই বলেন, ‘‘দেশ সত্যিই উন্নত হয়েছে।’’
এক পেশাদার চিত্রগ্রাহকের কথায়, “আমাদের এলাকায় বিয়ে সহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে এখন ড্রোনের মাধ্যমে ছবি তোলা হয়। বাজারেও কিনতে পাওয়া যায় ড্রোন ১ থেকে দেড় লক্ষ টাকার মধ্যে।ভাড়াতেও পাওয়া যায় প্রতিদিন ৩ হাজার টাকায়। সব ক্ষেত্রে ড্রোন নিষিদ্ধ নয়।’’
কিন্তু প্রশ্ন, এ ভাবে ড্রোন উড়িয়ে নজরদারি চালানো যায়? আইন কী বলে? জঙ্গিপুরের পুলিশ সুপার পিভিজি সতীশ বলেন, ‘‘সীমান্তে ও অসৎ উদ্দেশ্যে ড্রোন ব্যবহার করা যায় না।কিন্তু ফোটোগ্রাফি, ভিডিয়োগ্রাফি থেকে ই-কমার্স ডেলিভারির কাজেও ড্রোন ব্যবহার হচ্ছে। এর জন্য নির্দিষ্ট আইন রয়েছে। পুলিশের কড়া নজরদারিও রয়েছে ড্রোনের ক্ষেত্রে।”
অসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রকের তরফে ড্রোন ওড়ানোর ক্ষেত্রে কিছু নির্দেশিকা রয়েছে। ভারতে যে কোনও ব্যক্তি ড্রোন ওড়ালে সেই নিয়ম প্রযোজ্য হবে।
পুলিশ সূত্রে খবর, দেশে কে ড্রোন ওড়াতে পারে, তা নির্ভর করে কী ড্রোন ওড়ানো হচ্ছে এবং সেই ড্রোনের সঙ্গে কী ধরনের অনুমতি নেওয়া হয়েছে। ওজন অনুসারে ড্রোন বিভিন্ন ভাগে ভাগ করা হয়েছে। ২৫০ গ্রামের কম ওজনের ড্রোন ওড়াতে কোনও লাইসেন্স অথবা অনুমতির প্রয়োজন নেই। ২ কেজি ওজনের ড্রোনগুলি মাইক্রো ড্রোন ও ২৫ কিলো ওজনের ড্রোনগুলি স্মল ড্রোন। এই ধরনের ড্রোন ওড়ানোর জন্য বিশেষ অনুমতির প্রয়োজন। বিমানবন্দর, সামরিক বাহিনীর ঘাঁটি বা বিশেষ জায়গায় নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।