ছবি সংগৃহীত
মন্দিরের বন্ধ দরজা খুলল না ভক্তদের জন্য। নবদ্বীপ ও মায়াপুরে সোমবার আন-লক দ্বিতীয় পর্বেও বন্ধ রইল নবদ্বীপের মহাপ্রভু, পোড়ামা কিংবা মায়াপুর ইসকনের প্রধান ফটক। যদিও ১ জুন প্রথম পর্বের আন লক শুরু হওয়ার পরই মঠমন্দির খোলার ক্ষেত্রে সবুজ সঙ্কেত দিয়েছিল রাজ্য সরকার। সামাজিক দূরত্ব-সহ বিভিন্ন স্বাস্থ্যবিধি মেনে, নির্দিষ্ট সংখ্যক ভক্তদের নিয়ে মন্দির খোলার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। ৮ জুন থেকে আন-লক দ্বিতীয় পর্বে আরও বেশি শিথিলতা দিলেও মঠমন্দিরের সিংহদ্বার বন্ধই রইল।
বিভিন্ন মন্দির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন তাঁরা পরিস্থিতির দিকে সতর্ক নজর রাখছেন। অবস্থা বুঝে মন্দির খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তড়িঘড়ি কিছু করার কথা ভাবছেন না কেউই। নদিয়া জেলা তো বটেই এ রাজ্যের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন কেন্দ্র গঙ্গার দু’পারের নবদ্বীপ ও মায়াপুর। পর্যটনের উপরেই নির্ভর করে এখানকার স্থানীয় অর্থনীতি। দেশি-বিদেশি পর্যটকদের আনাগোনায় উপচে পড়া ভিড় গত আড়াই মাস ধরে অন্তর্হিত। কবে খুলবে মন্দির? কবে আবার পর্যটকের ঢল নামবে মায়াপুরে? এই প্রসঙ্গে ইসকনের জনসংযোগ আধিকারিক রমেশ দাস বলেন, ‘‘বহিরাগতদের জন্য এখনই মন্দির খোলার কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। তবে মায়াপুর ইসকন মন্দির এবং সংলগ্ন অঞ্চলে যে সমস্ত গৃহীভক্তরা আছেন আপাতত কেবল তাঁরাই প্রবেশাধিকার পাবেন। এ জন্য মূল ফটকের বদলে অন্য একটি ছোট দরজা খোলা থাকবে।”
তবে যে নির্দিষ্ট সংখ্যক ভক্ত আপাতত প্রবেশ এবং দর্শনের সুযোগ পাচ্ছেন, তাঁদের জন্য সুনির্দিষ্ট কিছু নিয়মাবলী তৈরি করা হয়েছে ইসকনের তরফে। সকাল ন'টা থেকে বারোটা এবং বিকেল চারটে থেকে ছ’টা এইটুকু সময় মন্দিরে প্রবেশ করতে পারবেন তাঁরা। মন্দির প্রবেশ ও প্রস্থানের জন্য নির্দিষ্ট একমুখী পথ তৈরি করা হয়েছে। মন্দির চত্বরে প্রবেশের পর পা ধুয়ে, হাত স্যানিটাইজ় করে তবে ওই সংরক্ষিত পথে মন্দিরে প্রবেশ করা যাবে। সেখানে নির্দিষ্ট পথ দিয়ে প্রথমে পঞ্চতত্ত্ব, তার পর নৃসিংহদেব এবং সব শেষে রাধাকৃষ্ণ বিগ্রহ দেখে ভক্তদের বেরিয়ে যেতে হবে। পাঠকীর্তন করার কোনও সুযোগ থাকবে।
ইসকনে বহিরাগতদের প্রবেশ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এখনই প্রবেশাধিকার দেওয়ার কথা ভাবছি না, পরিস্থিতির দিকে সতর্ক নজর রাখা হচ্ছে। তবে বিশ্বের যে কোনও প্রান্তের ভক্তরাই যেহেতু মায়াপুর টিভির মাধ্যমে ভোর থেকে রাত পর্যন্ত ইসকন মন্দিরের যাবতীয় কর্মকাণ্ড বাড়ি থেকে দেখতে পাচ্ছেন, তাই এই মুহূর্তে তাঁদের মন্দিরে না আসলেও অসুবিধা নেই।’’
এখনও মায়াপুর মন্দিরের বাইরে সমস্ত কিছু বন্ধ। চলছে না বাস। সামান্য দু’-একটি টোটো বা ভ্যানরিকশার ভরসায় বহিরাগত যাত্রীরা এলে বিপদের মধ্যে পড়তে পারেন, আশঙ্কা কর্তৃপক্ষের। ইসকন কর্তৃপক্ষের উদ্বেগের আরও বড় কারণ মায়াপুরের মন্দিরের বাইরের একাধিক হোটেল বা সরকারি অতিথিশালায় ভিন্ রাজ্য থেকে আসা শ্রমিকদের কোয়রান্টিন সেন্টার করা হয়েছে। সব মিলিয়ে এখনই মায়াপুর সাধারণের জন্য খুলে দেওয়ার উপযুক্ত নয় বলেই মনে করছেন ইসকন কর্তৃপক্ষ।
তাই শুধু মন্দির নয়, অতিথিশালার অনলাইন বুকিং পর্যন্ত বন্ধ রাখা হয়েছে। পরিস্থিতি বুঝে পরিবর্তন সহকারে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন ইসকন কর্তৃপক্ষ।