Murshidabad

২৪ ঘণ্টার মধ্যে আবার খড়গ্রামে অধীর! কংগ্রেস কর্মী খুনের নেপথ্যে গ্রাম্যবিবাদ, দাবি তৃণমূলের

রবিবার সকাল ৯টার কিছু পরে দলীয় কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে নিহত ফুলচাঁদের বাড়িতে পৌঁছন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। কথা বলেন নিহতের আত্মীয়-পরিজনদের সঙ্গে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ জুন ২০২৩ ১২:০০
Share:
One more arrested on Khargram murder case, Adhir Ranjan Chowdhury meets the died congress worker\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\'s family

নিহত কংগ্রেস কর্মী ফুলচাঁদ শেখের বাড়িতে অধীর চৌধুরী। — নিজস্ব চিত্র।

মুর্শিদাবাদের খড়গ্রামে গত শুক্রবার কংগ্রেস কর্মী খুনের ঘটনা ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপান-উতোর। শনিবার খড়গ্রাম থানার রতনপুর-নলদ্বীপ গ্রামে নিহত কংগ্রেস কর্মী ফুলচাঁদ শেখের বাড়িতে গিয়েছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। রবিবার আবার সেখানে যান তিনি। তাঁর অভিযোগ, ফুলচাঁদকে যারা হত্যা করেছে তারা ‘সরকারি’ লোক। ওই গ্রামের বাসিন্দাদের নিরাপত্তার দাবিও তিনি তুলেছেন প্রশাসনের কাছে। অধীরের ওই মন্তব্যের বিরোধিতা করেছেন মুর্শিদাবাদের তৃণমূল নেতারা। তাঁদের দাবি, ফুলচাঁদ খুন হয়েছেন গ্রাম্যবিবাদের জেরে তৈরি রেষারেষি থেকে। পুলিশ ওই ঘটনায় আরও এক জনকে গ্রেফতার করেছে। এ নিয়ে ধৃতের সংখ্যা বেড়ে হল তিন।

Advertisement

রবিবার সকাল ৯টার কিছু পরে দলীয় কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে নিহত ফুলচাঁদের বাড়িতে পৌঁছন অধীর। কথা বলেন নিহতের আত্মীয়-পরিজনদের সঙ্গে। এর পর সাংবাদিক সামনে রাজ্যের শাসকদল এবং প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন তিনি। অধীর বলেন, ‘‘গবাদি পশুর লেজ পর্যন্ত কেটে দিয়েছে। এ তো মধ্যযুগীয় অত্যাচারের নিদর্শন পাচ্ছি আমরা। শিশুরা জানে না তাদের বাবা খুন হয়ে গিয়েছে। এই পাশবিকতার কি কোনও প্রয়োজন ছিল? পঞ্চায়েত নির্বাচনের নামে এই বাংলার গরিব পরিবারের উপর পাশবিক অত্যাচার কেন হল? তার জবাব কারা দেবে? গত কাল আমি হাসপাতালে গিয়েছিলাম। দেখলাম, এক জন বয়স্ক মহিলার হাতের অর্ধেকটা কেটে দেওয়া হয়েছে।’’ অধীরের দাবি, ‘‘পুলিশ গড়িমসি কাটিয়ে দু’তিন জনকে গ্রেফতার করেছে। আমরা পুলিশের কাছে দাবি করতে চাই, এই গ্রামে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হোক। এখানকার মানুষ আতঙ্কে আছেন এখনও। কারণ, যারা খুনি, তারা শক্তিশালী। দু’তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে তাদের শক্তি কমে গিয়েছে এমন নয়। তারা সরকারি লোক। এই গ্রামের বাসিন্দাদের নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব প্রশাসনের।’’ বিষয়টি নিয়ে আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। নিহত ফুলচাঁদের বাড়ি থেকে বেরিয়ে খড়গ্রামে প্রতিবাদ মিছিল করেন তিনি।

অধীরের মন্তব্য নিয়ে কান্দির বিধায়ক তথা বহরমপুর সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অপূর্ব সরকার বলেন, ‘‘গ্রাম্যবিবাদের জেরে এই ঘটনা ঘটেছে। পারিবারিক রেষারেষি থেকেই খুন হয়েছেন ফুলচাঁদ। প্রত্যেকেই কোনও না কোনও রাজনৈতিক মতাদর্শে বিশ্বাস করেন। কিন্তু প্রতিটি খুনের পিছনে রাজনীতি থাকে না। কংগ্রেসের পায়ের নীচে মাটি নেই, তাই এমন একটি মর্মান্তিক ঘটনাকে রাজনৈতিক ইস্যু হিসাবে খাড়া করার চেষ্টা করছে। অধীর চৌধুরীকে আজ আর কেউ ডাকেন না। তাই উনি যেখানে পারেন, ছুটে যান।’’

Advertisement

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ফুলচাঁদ খুনের ঘটনায় শনিবার রাতে তল্লাশি চালিয়ে ইমরান শেখ নামে আরও এক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে মাড়গ্রামের একটি বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয় তাঁকে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই বাড়িতে আত্মগোপন করে ছিলেন ইমরান। বহরমপুর পুলিশ জেলার সুপার সুরিন্দর সিংহ বলেন, ‘‘অভিযোগের ভিত্তিতে তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তদন্ত চলছে। বাকিদেরও গ্রেফতারের চেষ্টা হচ্ছে।’’

শুক্রবার সন্ধ্যায় খড়গ্রামের রতনপুর-নলদ্বীপ গ্রামে কংগ্রেস কর্মী ফুলচাঁদকে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি করে খুন করা হয় বলে অভিযোগ। সেই ঘটনাকে ঘিরে তোলপাড় মুর্শিদাবাদ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement