টান পড়ল রথের রশিতে। লালবাগে। ছবি: গৌতম প্রামাণিক
বিকেলে পথঘাট যখন একটু ফাঁকা, লালগোলার রাজ পরিবারের দধিবামনদেব পুরোহিত ও রাজ পরিবারের সদস্য সৌরভ রায়ের কোলে করেই চুপিসারে গেলেন মাসির বাড়ি। নশিপুর আখড়ার রথ গুলোর মধ্যে পিতলের দু’টি রথ বাইরে বের করে পুজো করা হয়। জিয়াগঞ্জের সাধকবাগে মন্দিরের ভিতরে জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রাকে রেখেই বিশেষ পুজো পাঠ হয়।’’
বেলডাঙার অনেক বৈষ্ণব আখড়ায় এই রথ যাত্রা দিন টির একটা বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। মঙ্গলবার রথ এই উপলক্ষে খুবই সচেতন ছিলেন আখড়া কর্তৃপক্ষ।
শক্তিপুর থানার শক্তিপুর কাছাড়িপাড়ার গোপাল আশ্রম। প্রায় ১৭৫ বছরের এই বৈষ্ণব মঠের প্রতিষ্ঠাতা গৌরপদ দাস বর্তমানে সেটি পরিচালনা করছেন মদনমোহন দাস। তিনি জানান, রথযাত্রা উপলক্ষে এই মঠে রথ সাজিয়ে পুজো করা হয়। অন্য বছর সেই রথ পথ প্রদক্ষিণ করলেও এবার রথ রাস্তায় নামেনি। সন্ধ্যায় মন্দিরে বিশেষ পুজোপাঠের আয়োজন করা হয়। নানা প্রকার ভোগ সহকারে পুজো শেষে ভক্তদের প্রসাদ বিতরণ করা হয়। তারপর রথের গান পরিবেশিত হয়। গানের পদকার বৃন্দাবনদাস। যে গান গাওয়া হয় তা অনেকটা এই রকম, ‘নীলাচলে জগন্নাথ রায়। গুণ্ডিচা-মন্দিরে চলি যায়।। অপরূপ রথের সাজনি। তাহে চড়ি যায় যদুমণি।। দেখিয়া আমার গৌরহরি। নিজ-গন লইয়া এক করি।। মাল্য চন্দন সবে দিয়া। জগন্নাথ নিকটে যাইয়া।।’’ এ ছাড়া কয়েকশো বছরের প্রাচীন বেলডাঙা মাড্ডার প্রাচীন বৈষ্ণব আখড়া গোবিন্দ মন্দিরে মঙ্গলবার সকাল থেকে রথ উপলক্ষে শালগ্রাম শীলা স্নান করানো হয় বিশেষ রীতি মেনে। সেবাইত ত্রিনয়ন চক্রবর্তী জানান, পাথরের পাত্রে গঙ্গাজলে ১০৭টি তুলসী পাতা, চন্দন, বিভিন্ন সুগন্ধী সহকারে স্নানের পর শুরু হয় বিশেষ পুজো। সঙ্গে বিভিন্ন ফল, চিঁড়ে, নারকেল দিয়ে ভোগ দেওয়া হয়।
দুপুরে অন্ন ভোগ, সন্ধ্যায় শীতল দেওয়া হয় আরতি হয়। বেলডাঙা পুরসভা এলাকার প্রাচীন রথ গোঁসাই বাড়ির রথ। বেলডাঙার প্রাচীন রথের অন্য তম। সোজা রথে এলাকার বিভিন্ন রাস্তায় রথ পরিভ্রমণ করে ফেরে। তবে এ বছর করোনা পরিস্থিতির কারণে রথ বাড়ির বাইরে যায়নি। সেবাইত কল্পনা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সকাল থেকে রথ উপলক্ষে শ্রীকৃষ্ণের পুজো হয়েছে। সকাল, দুপুর, সন্ধ্যায় পুজো ভোগরাগ হয়েছে। সোজা রথে রথের প্রদক্ষিণ না হলেও উল্টো রথে প্রদক্ষিণ করানোর পরিকল্পনা রয়েছে।’’