—ফাইল চিত্র।
রাসে নগর পরিক্রমার জন্য একাধিক নিয়ম কানুন বেঁধে দিল প্রশাসন। অন্য বারের মতো এ বার আর বিপুল আকারের শোভাযাত্রা নয়। শান্তিপুরের বারোয়ারি এবং বিগ্রহ বাড়িগুলির জন্য একাধিক বিধির কথা বৈঠকে জানিয়ে দেওয়া হল প্রশাসনের তরফে।
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রাস উৎসবে প্রতি বছরেই শান্তিপুরে প্রচুর মানুষের ভিড় হয়। এ বারের অতিমারির আবহে অবশ্য জাঁকজমক ছেড়ে সচেতনতার দিকেই নজর দিচ্ছেন সকলে। শুক্রবার প্রশাসনের তরফে শান্তিপুর থানায় রাসের উদ্যোক্তাদের নিয়ে একটি বৈঠক হয়। সেখানে একাধিক বিধির কথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। শান্তিপুরের রাসের এক বড় আকর্ষণ রাসের শোভাযাত্রা। নানা বিগ্রহ বাড়িগুলি তাঁদের বিগ্রহ নিয়ে এবং বারোয়ারিগুলি তাঁদের প্রতিমা নিয়ে সুদৃশ্য ট্যাবলো, আলোকসজ্জা সহকারে নগর পরিক্রমায় বার হয়। শোভাযাত্রার নির্দিষ্ট পথ ধরে গিয়ে বারোয়ারিগুলি তাদের প্রতিমা বিসর্জন দেয়, আর বিগ্রহবাড়িগুলি তাদের বিগ্রহ নিয়ে নিজেদের দেবালয়ে ফিরে যায়। বিগ্রহবাড়ির সঙ্গে থাকে রাইরাজা, ময়ুরপঙ্খী গান-সহ অন্য আকর্ষণ। তবে এই বছর এ সবের অনুমতি মিলছে না। প্রশাসনের তরফে উদ্যোক্তাদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, শোভাযাত্রার যে নির্দিষ্ট পথ আছে সেই পথ ধরেই যাওয়া যাবে প্রতিমা নিয়ে। তবে প্রতিমা এবং বিগ্রহ নিয়ে জাঁকজমক সহকারে শোভাযাত্রা হবে না। প্রতিমা বা বিগ্রহের সঙ্গে থাকবে একটি আলোর ব্যবস্থা। এ ছাড়া আর কোনও ট্যাবলো ইত্যাদি থাকবে না। আবার বিগ্রহ বাড়ির ক্ষেত্রে বলা হয়েছে সঙ্গে একটি কীর্তনের দল রাখা যাবে।
শান্তিপুরের বেজপাড়া কমলেকামিনী জানিয়েছে তারা কোনও শোভাযাত্রায় এ বার যোগ দেবে না। তাদের সম্পাদক বান্টি বসু বলেন, “আমরা শুধু প্রতিমা নিয়ে বিসর্জন দেব। শোভাযাত্রার খরচের বদলে এ বার আমাদের মণ্ডপে স্যানিটাইজ়ার টানেল এবং দর্শকদের জন্য মাস্ক, স্যানিটাইজ়ারের ব্যবস্থা করছি।” ভারতমাতার মানস দে, নতুনপাড়া অভিযাত্রী সঙ্ঘের সুনীল সিংহেরা বলছেন, “প্রশাসনের দেওয়া নির্দেশিকাকে মান্যতা দিয়েই আমরা এ বার ব্যবস্থা নেব।”
বিগ্রহ বাড়ির অনেকেই এ বার নগর পরিক্রমায় বিগ্রহ নিয়ে বেরোবে না বলে জানিয়েছে। আবার কেউ বিগ্রহ রাসমঞ্চে আনা হবে না বলে জানাচ্ছে। শান্তিপুরের বিগ্রহ বাড়ি সমন্বয় সমিতির সম্পাদক শশাঙ্ক চক্রবর্তী বলেন, “গতবারের তুলনায় এ বার অনেক কম বিগ্রহ বাড়ি নগর পরিক্রমায় বেরোবে। আমাদের তরফে যাবতীয় সতর্কতা
নেওয়া হবে।”
শান্তিপুরের পুর-প্রশাসক অজয় দে বলেন, “উদ্যোক্তাদের জন্য যাবতীয় নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে প্রশাসনের তরফে। ট্যাবলো, আলোকসজ্জা নিয়ে শোভাযাত্রা এ বার হবে না।”