বিধি না মানা ভিড় উপচে পড়ল বহরমপুরের রাস্তায়। ছবি: গৌতম প্রামাণিক।
আদালতের নিষেধাজ্ঞাকে কার্যত বুড়ো আঙুল দেখিয়ে মঙ্গলবার ভৈরব ভক্তদের ভিড় উপচে পড়ল বহরমপুরে। মানুষের উচ্ছ্বাসে উধাও হলো কোভিড বিধি। ভৈরবের শোভাযাত্রার জেরে দীর্ঘ সময় একপ্রকার অবরুদ্ধ থাকল নেতাজী রোড থেকে কাদাই হয়ে খাগড়া পর্যন্ত প্রায় দেড়-দু কিলোমিটার রাস্তা। ভিড়ে আটকে গেল করোনা রোগীর অ্যাম্বুল্যান্স। আর দুর্ঘটনা এড়াতে শোভাযাত্রার রাস্তা জুড়ে নীরবে হাঁটলেন পুলিশ কর্তারা।
বহরমপুর মাতৃসদনে এখনও দু’জন করোনা রোগী চিকিৎসাধীন। সেখান থেকে করোনা আক্রান্ত গোকর্ণ ব্লক হাসপাতালের এক চিকিৎসককে কল্যাণী নিয়ে যাওয়ার পথে আটকে পড়ে বাকরুদ্ধ অ্যাম্বুল্যান্স চালক মনোজিৎ দে কিছু বলতেই চাইলেন না। একটু পরে ওই হাসপাতালের সামনে দিয়েই প্রবল উন্মাদনায় এগিয়ে গেল মাস্কহীন মানুষের ভিড়। তারস্বরে বাজল মাইক। অল্প হলেও ভৈরব বিসর্জনে পুড়লো শব্দবাজিও।
রাজ্যের স্বাস্থ্য বুলেটিন অনুযায়ী জেলায় এই মুহূর্তে অ্যাক্টিভ করোনা রোগীর সংখ্যা ৫৫ জন। জেলা জুড়ে এখনও জারি রয়েছে সরকারের কঠোর বিধি নিষেধ। কিন্তু মঙ্গলবার দূর্গা প্রতিমা বিসর্জনের ভিড়কেও ছাপিয়ে গেল ভৈরব বিসর্জনের শোভাযাত্রা। করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কার মধ্যেই ভৈরব শোভাযাত্রায় মানুষের সেই আগল ভাঙা ভিড় দেখে প্রমাদ গুণলেন জেলার চিকিৎসক শিবির।
মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার অমিয় কুমার বেরা বলেন, “জীবিকার প্রয়োজনে কিছু ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হয় বাধ্য হয়ে। কিন্তু সতর্ক থাকতে উৎসবে ভিড় নিয়ন্ত্রণ করাই যায়।” খাগড়া নিমতলা ভৈরব কমিটির সদস্য অনির্বাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন “মানুষের আবেগের কাছে আমরা অসহায়।” ভৈরব সমিতির যুগ্ম সম্পাদক পেশায় আইনজীবী সৌগত বিশ্বাস মানুষের কোর্টে বল ঠেলে জানালেন “আমাদের মুখে মাস্ক ছিল। শোভাযাত্রায় অংশ নেওয়া মানুষের মুখে মাস্ক না থাকার দায় কি আমাদের?” সদর মহকুমাশাসক প্রভাত চট্টোপাধ্যায় বলেন, “এত বারণ সত্ত্বেও মানুষ যখন বিধি উপেক্ষা করলেন তখন একে দুর্ভাগ্য ছাড়া কী বলব?” তবে এ বছর নিষেধ মেনে বাজেনি ডিজে, ভিড়ও ছিল নিয়ন্ত্রিতই, প্রতিমা বিসর্জন শেষে এমনটাই দাবি করলেন উদ্যোক্তারা।