অসুস্থ নাজমুল শেখকে নিয়ে রানাঘাট ফুটব্রিজের নীচে বসে পরিবার। মঙ্গলবার। —নিজস্ব চিত্র।
বয়স মাত্র আট। বুকে যন্ত্রণা। শেষ এক মাসে একাধিক চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গিয়েও সেই যন্ত্রণা কমেনি। শেষ পর্যন্ত চিকিৎসকদের পরামর্শে ছোট্ট নাজমুল শেখকে নিয়ে বেলডাঙা থেকে কল্যাণী জেএনএম মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে যাচ্ছিলেন অভিভাবকেরা।
মঙ্গলবার ভোরে বাড়ি থেকে বেরিয়ে মুর্শিদাবাদের বেলডাঙা স্টেশন থেকে ট্রেন ধরেছিলেন তাঁরা। সকাল সাড়ে ৭টা নাগাদ রানাঘাট পৌঁছতেই থমকে গেল ট্রেন। মদনপুরে রেল অবরোধ। দীর্ঘক্ষণ সেখানেই অপেক্ষা করে শেষে রানাঘাট থেকেই বাড়ি ফিরতে বাধ্য
হল নাজমুল।
এ দিন বেলা প্রায় সাড়ে ১১টা নাগাদ রানাঘাট ১ নম্বর প্ল্যাটফর্মে ফুট ওভারব্রিজের নীচে এক কোণে অসুস্থ নাজমুলকে নিয়ে বসে থাকতে দেখা যায় তার পরিবারকে। যন্ত্রণায় ছটফট করতে থাকা একরত্তি ছেলেকে বুকে আগলে কখনো তাঁরা হাতপাখা দিয়ে বাতাস করছেন, কখনও চোখে-মুখে জল দিচ্ছেন। তাঁদেরও চোখে-মুখে আতঙ্কের ছাপ। কিছু সময় পর পর তাঁরা রেলপুলিশ ও সহযাত্রীদের কাছে জানতে চাইছিলেন, ট্রেন
কখন চলবে।
অসুস্থ বালকের মাসি শেখ মনিজা বলেন, "মুর্শিদাবাদের অনেক জায়গাতেই চিকিৎসা হয়েছে। কিন্তু ওকে সুস্থ করতে পারিনি। চিকিৎসকেরা বলেছেন, ওর বুকে জল জমে রয়েছে। তাই যন্ত্রণা কমছে না।কল্যাণীর বড় সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছিলাম। অবরোধের জেরে আটকে গিয়েছি।"
শুধু তো তাঁরাই নন। চার ঘণ্টা রেল অবরোধের কারণে চরম ভোগান্তির শিকার হয়েছেন যাত্রীদের একাংশ। যেমন কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে সময় মতো পৌঁছতে পারেননি দত্তপুলিয়ার বাসিন্দা প্রভাত রায়। তিনি বলেন, "মা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। দুপুর ১২টা নাগাদ অস্ত্রোপচার হওয়ার কথা। সকাল ১১টার মধ্যে হাসপাতালে পৌঁছব বলে অফিসে ছুটি নিয়েছি। মায়ের রক্ত লাগবে, তার জন্য আমারই ব্লাড ব্যাঙ্কে রক্তদান করার কথা। সব গোলমাল হয়ে গেল।"