জিয়াগঞ্জ সদরঘাট থেকে ১৯ কিলোমিটার সাঁতার প্রতিযোগিতার সূচনা মুহূর্ত। রবিবার দুপুরে। ছবি: গৌতম প্রামাণিক
‘ঘরের ছেলে’কে হারিয়ে জঙ্গিপুরের আহিরণ ঘাট থেকে বহরমপুরের গোরাবাজার কলেজ ঘাট পর্যন্ত ভাগীরথীর বুকে ভারতের অন্যতম ৮১ কিলোমিটার দীর্ঘ সাঁতার প্রতিযোগিতা জিতে নিলেন কলকাতার দেবরাজ পাত্র।
রবিবার ভাগীরথীতে ৮১ কিলোমিটার সাঁতার প্রতিযোগিতার সঙ্গে অনুষ্ঠিত হয়েছে জিয়াগঞ্জের সদরঘাট থেকে বহরমপুরের গোরাবাজার কলেজ ঘাট পর্যন্ত ১৯ কিলোমিটার সাঁতার প্রতিযোগিতা। ৭৬ তম ওই প্রতিযোগিতার আয়োজক মুর্শিদাবাদ জেলা সন্তরণ সংস্থা।
প্রতি বছর ওই সাঁতার প্রতিযোগিতা দেখতে জেলার বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ ভিড় করেন। মুর্শিদাবাদের পাশাপাশি নদিয়া, মালদহ থেকেও মানুষ ভিড় করেন ভাগীরথীর পাড়ে। এ দিন দুপুর থেকে ভাগীরথীর দু’পাড়ে ভিড় বাড়তে থাকে। বিকেল হতে না হতেই বহরমপুরের গোরাবাজার কলেজ ঘাট চত্বর মানুষের মাথার মিছিলে ভরে ওঠে। তাঁরা ভিড় করেছিলেন ঘরের ছেলেদের টানে। কিন্তু কলকাতার দেবরাজ শর্মা প্রথম গোরাবাজার কলেজ ঘাটের ফিনিশিং পয়েন্ট ছুঁতেই আক্ষেপ ঝরে পড়ল দু’পাড় জুড়ে।
৮১ কিলোমিটার জলপথ পার হতে কলকাতার হাটখোলা ক্লাবের দেবরাজ পাত্রের সময় লেগেছে ১০ ঘণ্টা ৫৭ মিনিট ৬ সেকেন্ড, সেখানে ১১ ঘণ্টা ২ মিনিট ২৭ সেকেন্ড নিয়ে দ্বিতীয় হন বহরমপুর সুইমিং ক্লাবের বিশ্বনাথ অধিকারী। তৃতীয় স্থান বহরমপুর সুইমিং ক্লাবের অপু সরকারের। সময় লেগেছে ১১ ঘণ্টা ২০ মিনিট ৪৫ সেকেন্ড।
এ দিন ১৯ কিলোমিটার সাঁতার প্রতিযোগিতায় মহিলা বিভাগে প্রথম হয়ে এ বার হ্যাটট্রিক করলেন সৃষ্টি উপাধ্যায়। এ বার নিয়ে টানা তিন বার তিনি জয়ী হলেন। প্রথম স্থান পেতে কলকাতা স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশনের সৃষ্টি উপাধ্যায়ের সময় লেগেছে ২ ঘণ্টা ১৩ মিনিট ৫২ সেকেন্ড। মেয়েদের মধ্যে দ্বিতীয় হয়েছেন বাংলাদেশ সুইমিং ফেডারেশনের রোমানা আখতার। সময় লেগেছে ২ ঘণ্টা ১৫ মিনিট ৩৫ সেকেন্ড। তৃতীয় বাংলাদেশ সুইমিং ফেডারেশনের সোনিয়া আখতারের সময় লেগেছে ২ ঘণ্টা ১৭ মিনিট ৫৮ সেকেন্ড।
তবে ১৯ কিলোমিটার সাঁতার প্রতিযোগিতার পুরুষ বিভাগে প্রথম স্থান পেয়েছেন সিসিসি বর্ধমান ক্লাবের প্রত্যয় ভট্টাচার্য। তাঁর সময় লেগেছে ২ ঘণ্টা ৫ মিনিট ৫৬ সেকেন্ড। দ্বিতীয় খিদিরপুর সুইমিং ক্লাবের আদ্রি শর্মা। তিনি সময় নিয়েছেন ২ ঘণ্টা ৮ মিনিট ৬ সেকেন্ড। তৃতীয় বাংলাদেশ সুইমিং ফেডারেশনের ফয়জল আহমেদ। তাঁর সময় লেগেছে ২ ঘণ্টা ৯ মিনিট ১৮ সেকেন্ড। প্রত্যয় ভট্টাচার্য বলছেন, ‘‘গত বছরও আমি প্রথম হয়েছিলাম। টানা দু’বছর প্রথম হওয়ায় ভাল লাগছে। তবে বাবা-মা আমাকে সমর্থন করায় আমার পক্ষে যা সম্ভব হয়েছে, তা অনেকের পক্ষে সম্ভব হয় না।’’ আয়োজক সংস্থার কর্তা দেবেন্দ্রনাথ দাস বলছেন, ‘‘প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলেন নেদারল্যান্ড, বাংলাদেশ, ত্রিপুরা, মহারাষ্ট্র, গুজরাত-সহ রাজ্যের প্রতিযোগী। পুলিশ ও প্রশাসনের সাহায়্য ছাড়া এই প্রতিযোগিতা সফল করা সম্ভব ছিল না।’’