—প্রতীকী চিত্র।
কম্বল কেনার বিতর্কিত দরপত্র বাতিল করে নতুন করে দরপত্র ডাকল মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদ। জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে কম্বল কেনার দরপত্র ডাকা হয়। তার পরে শুরু হয় বিতর্ক। সেই বিতর্কের পরে ১৩ জানুয়ারি নতুন করে দরপত্র ডাকা হয়েছে।
কংগ্রেসের দাবি, দিন কয়েক আগে বহরমপুর রবীন্দ্রসদনে পঞ্চায়েত দফতরের পর্যালোচনা বৈঠকে কম্বল কেনার দরপত্রে দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছিলেন জেলা পরিষদ সদস্য তথা জেলা যুব কংগ্রেসের সভাপতি তৌহিদুর রহমান সুমন।
তার পরের দিন তিনি এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করেছিলেন। তার পরেই সেই দরপত্র বাতিল করে তৌহিদুরের দাবিকে কার্যত মান্যতা দিল তৃণমূল পরিচালিত মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদ।
তবে মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের সভাধিপতি তৃণমূলের রুবিয়া সুলতানা বলেন, ‘‘শীতকালে জরুরি ভিত্তিতে কম্বল কেনার জন্য দরপত্র ডাকা হয়েছিল। তখন সংবাদপত্র বিজ্ঞাপন দেওয়ার প্রয়োজন ছিল। কিন্তু এটা অফিসের আধিকারিদের ভুল ছিল। আধিকারিকদের সেই ভুল সংশোধন করার কথা বলেছি।’’
গত ৯ জানুয়ারি বহরমপুরে রবীন্দ্রসদনে রাজ্যের পঞ্চায়েত দফতরের মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার এবং পঞ্চায়েত দফতরের প্রধান সচিব পি উল্গানাথনের সামনে জেলা পরিষদে প্রায় ১০ লক্ষ টাকার কম্বল কেনার দরপত্রে দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছিলেন মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের সদস্য তথা যুব কংগ্রেস সভাপতি তৌহিদুর রহমান সুমন। যা শুনে সেই বৈঠকেই পঞ্চায়েত দফতরের কর্তারা তাঁকে লিখিত ভাবে অভিযোগ জানাতে বলেছিলেন। তার পরের দিনই মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের দরপত্রে দুর্নীতি করা হচ্ছে বলে লিখিত অভিযোগ জানান সুমন। তিনি মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের এক্সিকিউটিভ অফিসারের কাছে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করেন। তার কপি রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রী, মুখ্যসচিব এবং পঞ্চায়েত দফতরের সচিবকে দেন।
তৌহিদুর রহমান সুমন লিখিত অভিযোগে জানিয়েছেন, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী বরাদ্দকৃত অর্থ এক লক্ষ টাকা হলেই অনলাইনে টেন্ডার করতে হবে। কিন্তু সরকারি নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদ গত ৩ জানুয়ারি ২৬০০ কম্বল কেনার জন্য একটি কোটেশন ইনভাইট করেছে। ৬ জানুয়ারি দরপত্র ফেলা হয়েছে এবং সে দিনই ওয়ার্ক অর্ডার দেওয়া হয়েছে। আমরা জানি কোটেশনের জন্য সাত দিন (কার্যকরী) সময় দিতে হয়। সেই সঙ্গে বরাদ্দকৃত অর্থ পাঁচ লক্ষ টাকার উপরে হলে দৈনিক বাংলা ও ইংরেজি কাগজে বিজ্ঞাপন দিতে হয় এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকারের টেন্ডার ওয়েবসাইটে আপলোড করতে হয়। এক্ষেত্রে মাত্র এক দিন কার্যকারী দিন দেওয়া হয়েছিল।
সুমন বলেন, ‘‘আমার প্রশ্ন হল সরকারের তৈরি নীতিকে সরকারি দল পরিচালিত জেলা পরিষদ কী করে অমান্য করে ৯ লক্ষ ৮৮ হাজার টাকার কোটেশন করতে পারে?’’
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সুমন বলেন, ‘‘কম্বল কেনার দরপত্রে আমি দুর্নীতির অভিযোগ করেছিলাম। সেই দরপত্র বাতিল করে আমার অভিযোগ যে সত্য ছিল, তার প্রমাণ দিল জেলা পরিষদ।’’