বিপজ্জনক: বহরমপুর প্রাঙ্গন মার্কেট। নিজস্ব চিত্র
দেওয়াল জুড়ে তারের জঙ্গল। বিদ্যুত-সিসিটিভি-ফোন, কোনটা যে কার বোঝার উপায় নেই।
মেরামতির কাজে বার কয়েক ইলেকট্রিশিয়ান এসেছেন বটে, তবে তার খুঁজে না পেয়ে ফিরে গিয়েছেন বলেই বাজারের কর্তারা মাথা নিচু করে জানিয়েছেন। তা হলে? তাঁদেরই এক জন ফুট কাটছেন, ‘‘আগুন লাগলে দমকল কর্মীরাও পালানোর পথ পাবেন না!’’
বহরমপুরের মোহনা বাস টার্মিনাসের পাশেই পেল্লাই চারতলা বাড়িটি প্রাঙ্গণ মার্কেট বলেই পরিচিতি। তার দেওয়াল যদি তারের দখলে থাকে তা হলে জেনে রাখুন তার প্রবেশ পথের দখল নিয়েছে সাইকল আর মোটরবাইক।
চারতলা সেই বাজারের প্রায় আড়াইশো দোকান। বাজারে হরেক কিসিমের সামগ্রীর দোকান। প্রাঙ্গণ বাজারের সামনে দিয়ে শহরে প্রবেশের রাস্তা। সে পথটুকু পার হতে সময় লেগে যায়। সে পথে দমকলের প্রয়োজন পড়লে যে কী হবে তা নিয়েই এখন প্রশ্ন উঠেছে।
প্রাঙ্গণ মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক সুকুমার সাহা বলেন, “বিদ্যুতের তার আমরা নিয়মিত পরীক্ষা করি। ও নিয়ে ভাববেন না।’’ কিন্তু তাঁর আশ্বাসে কি ভয় দূর হচ্ছে? দোকানিদের সঙ্গে কথা বলে কিন্তু তা মনে হল না। আর অগ্নি নির্বাপন ব্যবস্থা? বাজার কর্তৃপক্ষ ‘সব ব্যবস্থা রয়েছে’ দাবি করলেও তার কোনও খোঁজ কিন্তু মেলেনি।
প্রাঙ্গণ মার্কেট থেকে ঢিল ছোড়া দূরে রয়েছে ইন্দিরা সুপার মার্কেট। ১৯৮৯ সালে মার্কেটটি তৈরি করে বহরমপুর পুরসভা। ১৭৪ টি স্টল রয়েছে। বছর দশেক আগে এই বাজারে আগুন লেগে একটি দোকান পুড়ে গিয়েছিল। এর পরেও হুঁশ ফেরেনি পুরসভার। সেখানেও জতুগৃহের মত অবস্থা। সুপার মার্কেটের করিডর জুড়ে রয়েছে পিচবোর্ডের প্যাকেট ভর্তি নানা সামগ্রী, ইলেক্ট্রনিক্স সামগ্রীও ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। পাশেই সিড়ির পাশে খোলা আকাশের নিচে রয়েছে বিদ্যুতের মিটার বোর্ড।
ব্যবসায়ী প্রদীপ পাণ্ডে বলেন, “বাগড়ি মার্কেটের আগুনের পর আতঙ্ক আরও বেড়ে গিয়েছে। আগুন লাগলে কোথায় পালাব ভেবেই পাচ্ছি না।’’
ইন্দিরা সুপার মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি গৌরচন্দ্র বসাক বলেন, “এর আগে একবার আগুন লেগেছিল। বাজারের বিদ্যুতের মিটার ও তার খুব খারাপ অবস্থায় আছে।” তাঁর দাবি, পুরসভাকে বিষয়টি জানিয়েও কাজ হয়নি।
যদিও বহরমপুর পুরসভার চেয়ারম্যান নীলরতন আঢ্য বলছেন, “শুধু ইন্দিরা সুপার মার্কেট নয়, শহরের সমস্ত বাজারের অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নিয়ে বৈঠক করা হবে। তার পরে এবিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”