Jiban Krishna Saha

‘কষ্টে বড় হয়েছে জীবন, অন্যের কষ্টের কারণ হতে পারে না’! বিধায়ক পুত্রকে আদর্শ সন্তান বলছেন মা

জীবনকৃষ্ণ নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে ১৭ বছর পর মায়ের সঙ্গে প্রথম বার দেখা করতে যান। সেই ছেলে দুর্নীতিতে যুক্ত হতে পারেন, তা মানতেই পারছেন না মা বেলারানি সাহা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০২৩ ১৭:০৬
Share:

ছেলে অনেক বছর থাকতেন বাবার কাছে। অনেক কষ্টে তিনি বড় হয়েছেন। সেই ছেলে খারাপ কিছু করতে পারে না বলে বিশ্বাস মা বেলারানির। —নিজস্ব চিত্র।

জীবনকৃষ্ণ সাহা তখন খুব ছোট। সবে স্কুল যাওয়া শুরু করেছে। তখনই পারিবারিক অশান্তির জেরে শ্বশুরবাড়ি ছাড়তে হয়েছিল তৃণমূল বিধায়কের মাকে। সেই থেকেই খড়গ্রামের বাপের বাড়িতে থাকেন বেলারানি সাহা। আর জীবনকৃষ্ণ নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে ১৭ বছর পর মায়ের সঙ্গে প্রথম বার দেখা করতে যান। সেই ছেলে নিয়োগ দুর্নীতিতে সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন, তা মেনেই নিতে পারছেন না বড়ঞার তৃণমূল বিধায়কের মা। জীবনকৃষ্ণের বাবা বিশ্বনাথ সাহা ছেলেকে নিয়ে তিতিবিরক্ত। ছেলেকে নিয়ে তাঁর অভিযোগের অন্ত নেই। তবে মা কাঁদতে কাঁদতে বলছেন, যে ছেলে এত কষ্টে মানুষ হয়েছে, সে কখনও অন্যের কষ্টের কারণ হতে পারে না।

Advertisement

বাবা-মায়ের বিচ্ছেদের পর জীবনকৃষ্ণ ছোটবেলায় বাবার কাছে থাকতেন। ২৩ বছর বয়স থেকে তিনি মায়ের সঙ্গে থাকা শুরু করেন। তার আর একটা কারণ ছিলেন সৎমা। এক সময় বীরভূমের সাঁইথিয়া থেকে পাকাপাকি ভাবে মুর্শিদাবাদের বড়ঞার বাড়িতে থাকতে শুরু করেন জীবনকৃষ্ণ। সেই বাড়ি থেকেই সোমবার গ্রেফতার হন তিনি।

ছেলেকে নিয়ে বলতে গিয়ে মা বেলারানি ফিরে যান অতীতে। বলেন, জীবনকৃষ্ণের যখন ৭ বছর বয়স, তখনই তাঁকে মারধর করে বাড়ি থেকে বার করে দিয়েছিলেন স্বামী। কোলের দুই সন্তানকে বাড়িতে রেখে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসতে বাধ্য হন তিনি। তার পর থেকে অনেক বছর ছেলেমেয়ের সঙ্গে তাঁকে যোগাযোগ রাখতে দেওয়া হয়নি। পরে ছেলেমেয়েরা বড় হয়ে অবশ্য মায়ের কাছে যাতায়াত শুরু করেন।

Advertisement

বেলারানি বলেন, ‘‘জীবন চাকরি পাওয়া ইস্তক আমাকে মাঝেমধ্যেই টাকাপয়সা পাঠায়। আমার মোট তিন ছেলে এবং দুই মেয়ে। তবে আমার চোখে আদর্শ ছেলে জীবনকৃষ্ণ।’’

কিন্তু ছেলে যে দুর্নীতির দায়ে জড়িয়েছেন? শুনেই কেঁদে ফেলেন তিনি। বলেন, ‘‘ওর বাবা ওকে খেতে দেয়নি, পড়তে দেয়নি। অনেক কষ্ট করে ও বড় হয়েছে। কষ্ট কী জিনিস, ও বোঝে। তাই আমি বিশ্বাস করি, ও কখনও কারও কষ্টের কারণ হতে পারে না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement