সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। —ফাইল চিত্র।
বামকর্মীর মৃত্যুর জন্য পুলিশকে দায়ী করেছিল স্থানীয় সিপিএম। বৃহস্পতিবার দলের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেন, অসুস্থ হয়ে পড়া বামকর্মী উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় ভুগতেন। প্রশ্ন ওঠে, তা হলে কি নিজেদের বক্তব্য থেকে পিছু হঠল সিপিএম? আনন্দবাজার অনলাইনের তরফে যোগাযোগ করা হলে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম ব্যাখ্যা দেন, ‘‘এ ভাবে বক্তব্যের অংশ তুলে ধরলে বিষয়টিকে বিকৃত করা হয়। ওখানে পুলিশ টিয়ার গ্যাস চালিয়েছিল, লাঠিচার্জও করেছিল। অসুস্থ হওয়ার কারণ ওটাই। অনেকেই অসুস্থ হয়েছিলেন। কিন্তু আনওয়ারুলের পরিবারে অনেকেই উচ্চ রক্তচাপে ভোগেন। তাঁরও ছিল। অসুস্থ হওয়ার কারণ টিয়ারগ্যাস। আর হাসপাতালে পরিকাঠামো নেই বলেই একটা জায়গা থেকে আর একটা জায়গায় স্থানান্তর করতে গিয়ে মৃত্যু হয়েছে।’’
মঙ্গলবার মুর্শিদাবাদের বহরমপুরে সেলিমের নেতৃত্বে আইন অমান্য কর্মসূচি করেছিল বামেরা। সেই মিছিলে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। ছোড়ে কাঁদানে গ্যাসের সেলও। এর পরেই মিছিলে থাকা এক বামকর্মী অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তাঁর মৃত্যু হয়। স্থানীয় সিপিএম নেতৃত্ব এই ঘটনার জন্য দায়ী করেছিলেন পুলিশকে। তাঁরা বলেন, পুলিশের ছোড়া কাঁদানে গ্যাসেই অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন ওই বামকর্মী।
যদিও তৃণমূল এই ঘটনাকে কটাক্ষ করে বলেছে, বামেদের নাটকের ডিরেক্টর অনেক, কে কখন কোন চরিত্রে অভিনয় করেন, ওঁরাই জানেন না। তৃণমূলের মুর্শিদাবাদ জেলা সভাপতি অপূর্ব সরকার বলেন, ‘‘এ হল দেউলিয়া রাজনীতির নিদর্শন।’’
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার দুপুরে সেলিমের নেতৃত্বে বাম শ্রমিক এবং খেতমজুর সংগঠনের ডাকে ১০ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে বহরমপুরের টেক্সটাইল মোড়ে আইন অমান্য কর্মসূচির ডাক দিয়েছিল একাধিক বাম শাখা সংগঠন। সেই মিছিলকেই আটকাতে ত্রিস্তরীয় বলয় তৈরি করে পুলিশ। বামকর্মীদের সঙ্গে ধস্তাধস্তিও হয়। পুলিশ লাঠি চার্জ করার পাশাপাশি কাঁদানে গ্যাসের সেল ফাটায় বলে অভিযোগ করে বামেরা। অভিযোগ, বহু বাম নেতা-কর্মী অসুস্থও হয়ে পড়েন। ওই দিনই রাত ১১ টা নাগাদ স্থানীয় নেতৃত্ব দাবি করেন, ‘‘ডোমকলের সারাংপুর অঞ্চলের সাহাবাজপুর গ্রামের বাসিন্দা আনারুল ইসলামের মৃত্যু হয়েছে। পুলিশের ছোড়া কাঁদানে গ্যাসে অসুস্থ হয়ে পড়েছিল সে।’’
ঘটনার দু’দিন পর মৃত সিপিএম কর্মীর বাড়িতে গিয়ে দেখা করেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সেলিম। পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাসও দেন।