নাবালকের পকেটে মাদক, গ্রেফতার তিন জন

মাদক কিংবা জাল টাকা— পাচারে স্বল্পবয়সী বাচ্চাদের ব্যবহারের ঘটনায় ফের স্পষ্ট হয়ে উঠল পুলিশের চোখে ধুলো দিতে এ এক নয়া পদ্ধতি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

সুতি শেষ আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০১৯ ০১:৫৯
Share:

প্রতীকী ছবি

টোপ সেই নাবালক!

Advertisement

মাদক কিংবা জাল টাকা— পাচারে স্বল্পবয়সী বাচ্চাদের ব্যবহারের ঘটনায় ফের স্পষ্ট হয়ে উঠল পুলিশের চোখে ধুলো দিতে এ এক নয়া পদ্ধতি।

কখনও তাদের ব্যাগে মাদকের প্যাকেট, কখনও বা ঘাসের বস্তায় জাল টাকার নোটের তাড়া, সীমান্ত এলাকায় এমনই ‘শিশু পাচারকারী’ ধরা পড়ছে আকছাড়। সুতি থানার পুলিশ এ বার ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে সাজুর মোড় থেকে যে তিনজনকে গ্রেফতার করেছে তাদের মধ্যেই ছিল এক সদ্য-বালক।

Advertisement

রবিবার গভীর রাতে ওই তিন জনকে গ্রেফতার করে মিলেছে প্রায় দু’ লক্ষ টাকার জাল নোট এবং ১৫০ গ্রাম হেরোইন। পুলিশ জানায়, ধৃত দুই যুবক সিরাজুল ইসলাম ও সামসুদ্দিন আহমেদের সঙ্গেই ছিল ওই নাবালক ছেলেটি। মালদহের বৈষ্ণবনগরের হাজিপাড়া গ্রাম থেকে ওই জাল নোট ও মাদক নিয়েই তারা মুর্সিদাবাদে ঢুকেছিল। জেরায় অষ্টম শ্রেণির ছাত্র ওই বালক জানিয়েছে, তার বাড়ি বাজিপাড়ার কাছেই অনন্তপুর পিরপাড়া গ্রামে।

ওই রাতে সাজুর মোড়ে বাস থেকে নামে তারা। পাশেই জাতীয় সড়কে প্রতি দিনের মতই ছিল পুলিশি টহল। সঙ্গে একটি বাচ্চা ছেলে থাকায় পুলিশ তেমন সন্দেহের তালিকায় রাখবে না তাদের, এমনই ছিল কৌশল। কিন্তু অত রাতে ব্যাগ হাতে তাদের জাতীয় সড়কে দেখে সন্দেহ হয় পুলিশের। শুরু হয় জিজ্ঞাসাবাদ। আর তখনই বেগতিক বুঝে ওই বালকের হাতে জাল টাকার ব্যাহটি গুঁজে দিয়ে পালানোর চেষ্টা করে দুই যুবক। পুলিশ অবশ্য তিন জনকেই আটক করে। আর তখনই দেখা যায়, ওই বালকের পকেটে রয়েছে হেরোইনের প্যাকেট।

পুলিশি জেরায় ওই বালক জানায়, চার ভাইবোনের মধ্য়ে সে ছোট। দাদা দশম শ্রেণিতে পড়ে। তার বাবা পেশায় রাজমিস্ত্রি। নুন আনতে পান্তা ফুরানো অবস্থা তাদের।

পুলিশের প্রশ্নের সামনে কেঁদে ওঠে ওই বালক। জানায় পড়শি ওই যুবকেরা তাকে পাঁচ হাজার টাকা দেওয়ার লোভ দেখিয়ে তার কাছে ‘কিছু’ রাখতে চায়। নিতান্তই পকেটে ‘কিছু’ রাখলে এত টাকা পাবে ভেবে রাজিও হয়ে য়ায় সে।

পুলিশ জানায়, নাবালককে ‘ক্যারিয়ার’ হিসেবে ব্যবহার করে মাদক কারবার চালানোর ঝুঁকি কম। পুলিশ সচরাচর এই স্বল্প বয়সীদের পাচারকারী হিসেবে সন্দেহ করে না। সেই সুযোগটাই নিতে চায় আসল পাচারকারী।

পুলিশের রেকর্ড বলছে—এক সময় নাবালককে সামনে রেখে জাল টাকা ও মাদক পাচারের রমরমা ছিল লালগোলা এলাকায়। মাঝে বেশ কিছু দিন তা বন্ধ ছিল। ফের তা শুরু হয়েছে।

জঙ্গিপুরের এসডিপিও প্রসেনজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘নাবালক ছেলে মেয়েদের যে কোনও অপরাধে অত্যন্ত লঘু দন্ড দেওয়া হয়। জুভেনাইল আদালতে বিচার হয় তাদের। ফলে কোনও বড় ধরনের শাস্তি তাদের দেওয়া হয় না। এই কারণেই নাবালকদের এই কাজে লাগানোর চেষ্টা করছে পাচারকারীরা।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement