বহরমপুরের হোটেলে হোটেলে তল্লাশি চালিয়ে বেশ কয়েক জন নাবালিকাকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। গ্রেফতার হয়েছে ১৫ জন। —প্রতীকী চিত্র।
দীর্ঘ দিন ধরেই খবর আসছিল। আচমকা মুর্শিদাবাদের বহরমপুরে পুলিশি অভিযান শুরু হল হোটেলে হোটেলে। সেখান থেকে উদ্ধার করা হল বেশ কয়েক জন নাবালিকাকে। একই সঙ্গে মধুচক্র চালানোর অভিযোগে গ্রেফতার করা হল পনেরো জনকে। যদিও শনিবার রাতে বহরমপুরে উদ্ধার হওয়া নাবালিকাদের প্রকৃত সংখ্যা এখনও প্রকাশ করতে চাইছে না পুলিশ। ওই অভিযানে পুলিশের সঙ্গে ছিল রাজ্যের ‘চাইল্ড ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’।
পুলিশ সূত্রে খবর, গত ৩০ নভেম্বর তারা খবর পায় ফরাসডাঙ্গা এলাকার ৪টি হোটেলে স্থানীয় এবং বাইরের কিছু নাবালিকাকে নিয়ে এসে মধুচক্র চালানো হচ্ছে। একই অভিযোগ পান ‘চাইল্ড ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’-এর চেয়ারপার্সন সৌমা ভৌমিক। তিনিও এ নিয়ে পুলিশের কাছে যান। এর পর হোটেলগুলিতে তল্লাশির ছক কষে পুলিশ। শনিবার সেই মতো রাত ৯টা নাগাদ বহরমপুরের সন্দেহভাজন হোটেলগুলিতে তল্লাশি চালায় পুলিশ।
এ রাজ্যে নারী পাচারের অন্যতম হটস্পট জেলা মুর্শিদাবাদ। আর এই কাজ বহরমপুর থেকে রমরমিয়ে চলার আভাস পাচ্ছিল পুলিশ। শনিবারের ঘটনার প্রেক্ষিতে সমাজকর্মীরা বলছেন, আর্থিক অবস্থা, কাজের অভাব এবং নতুন প্রজন্মের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত চাহিদা তাদের বিপথে ঠেলে দিচ্ছে। মুর্শিদাবাদের পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার সুরিন্দর সিংহ বলেন, ‘‘নারী সুরক্ষায় মুর্শিদাবাদ জেলা পুলিশ বাড়তি গুরুত্ব দেবে। তা ছাড়া নাবলিকাদের ভুল বুঝিয়ে তাদের কোনও অসাধু চক্রে যাতে না জড়ানো হয়, সে বিষয়ে সচেষ্ট থাকবে।’’ ‘চাইল্ড ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’-এর চেয়ারপার্সন বলেন, “গ্রাম থেকে গরিব, অল্পবয়সি মেয়েদের নিয়ে এসে এখানে দেহব্যবসা করানো হচ্ছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। এর একটি বৃহত্তর আর্থসামাজিক প্রেক্ষিত রয়েছে। এই নাবালিকাদের পুনর্বাসন ও পরিবারের আর্থিক বিষয়টি সুনিশ্চিত করার ব্যাপারে সরকার চেষ্টা করবে।’’
শিশু ও সমাজকল্যাণ দফতর সূত্রে খবর, উদ্ধার হওয়া নাবালিকাদের আপাতত ঠাঁই হবে হোমে। পুলিশি সহায়তায় তাদের পরিবার-পরিজনের খোঁজ চলছে।