নির্দলকে তৃণমূলে যোগ দেওয়ানো ঘিরে উত্তেজনা। —নিজস্ব চিত্র
পঞ্চায়েত ভোটে জেতা এক নির্দল প্রার্থীর বাড়িতে গিয়ে বৃহস্পতিবার বেজায় বিপাকে পড়লেন রাজ্যের কারামন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস। ওই নির্দল প্রার্থীকে ভাঙানোর চেষ্টা হচ্ছে, এই অভিযোগে গ্রামবাসীরা ঘেরাও করেন তাঁকে। শেষমেশ বিশাল পুলিশ বাহিনী গিয়ে তাঁকে সেখান থেকে বার করে আনে।
এ দিন দুপুরে ঘটনাটি ঘটে ভীমপুর থানার পোড়াগাছা গ্রাম পঞ্চায়েতের গলাকাটা ভাতজাংলা গ্রামে। এই গ্রাম থেকে ভোটে জিতেছেন নির্দল প্রার্থী অসীমা বিশ্বাস। তবে ভোটে জেতার পর থেকেই তাঁকে নিয়ে তৃণমূল ও বিজেপি’র মধ্যে দড়ি টানাটানি হচ্ছে। কারণ, পোড়াগাছা গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৯টি আসনের মধ্যে তৃণমূল আটটি এবং বিজেপি আটটি পেয়েছে। জিতেছেন দুই নির্দল প্রার্থী। আর ভোটের আগেই এক প্রার্থী মারা যাওয়ায় সেই আসনে নির্বাচন হয়নি। ফলে নির্দল প্রার্থীদের দলে পেতে তৃণমূল ও বিজেপি’র মধ্যে টক্কর চলছে বলে স্থানীয় সূত্রের খবর।
এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার তাঁর বাড়িতে হাজির হন কারামন্ত্রী। তাঁর আসার খবর ছড়িয়ে পড়তেই অসীমার বাড়ির সামনে জড়ো হতে শুরু করেন গ্রামবাসীরা। কিছুক্ষণ পর বাড়ি ঘিরে তাঁরা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। ফলে সেখানে আটকে থাকেন উজ্জ্বল। খবর পেয়ে বিশাল বাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যায় ভীমপুর থানার পুলিশ। মূলত পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। সেখান থেকে বেরিয়ে আসেন মন্ত্রী।
গ্রামবাসীদের একাংশের দাবি, বিক্ষোভ হয়েছিল বলেই খালি হাতে ফিরতে হয়েছে কারামন্ত্রীকে। অসীমাকে তৃণমূলে ভাঙিয়ে নিয়ে যেতেই উজ্জ্বল এ দিন সেখানে গিয়েছিলেন বলে তাঁদের দাবি। ওই গ্রামবাসীদের বক্তব্য, তৃণমূলকে হারানোর জন্যই তাঁরা অসীমাকে ভোট দিয়েছিলেন। তাই তাঁদের সঙ্গে আলোচনা না করে তিনি তৃণমূলে যোগ দিতে পারবেন না। যদিও মন্ত্রী বলেন, “আমি মোটেই ওঁকে (অসীমা) আমাদের দলে যোগ দেওয়ার কথা বলতে যাইনি। আমার পাশের গ্রাম। তাই সেখানকার সদস্যের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকার করতেই গিয়েছিলাম।’’ বিজেপির নদিয়া (উত্তর) সাংগঠনিক জেলা সভাপতি মহাদেব সরকার বলেন, “ওই নির্দল সদস্যকে জোর করে ভয় দেখিয়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়ানোর জন্য মন্ত্রী গিয়েছিলেন। কিন্তু গ্রামের মানুষ রুখে দিয়েছেন। আমরা বলে দিচ্ছি, জোর করে আর ওই পঞ্চায়েত তৃণমূল দখল করতে পারবে না।” তবে উজ্জ্বলের দাবি, গ্রামের মানুষ তাঁদের সঙ্গেই রয়েছেন। তিনি জানান, বিজেপি চক্রান্ত করে অশান্তি বাধানোর চেষ্টা করেছিল। কিন্তু গ্রামবাসীরা প্রতিরোধ করেন।