উদ্ধার হওয়া বোমা। চাপড়ায়। —নিজস্ব চিত্র।
দু’দিন আগে চাপড়া থানার পুলিশের হাতে ধরা পড়েছিল এলাকার কুখ্যাত দুষ্কৃতী মাসুদ মণ্ডল ওরফে হাতকাটা মাসুদ। সঙ্গে ধরা পড়ে আরও পাঁচ দুষ্কৃতী। মাসুদকে জিজ্ঞাসাবাদ করে গোপন আস্তানায় লুকিয়ে রাখা আটটি বোমা রবিবার রাতে উদ্ধার করল চাপড়া থানার পুলিশ।
সূত্র মারফত খবর পেয়ে হানা দিয়ে শুক্রবার রাতে চাপড়া থানার বাদলাঙ্গী মোড় এলাকা থেকে মাসুদ-সহ ছয় দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করার পর মাসুদের কাছ থেকে পুলিশ জানতে পারে বাদলাঙ্গী এলাকার গোপন আস্তানায় কতগুলি বোমা লুকিয়ে রাখা আছে। রবিবার রাতে তার নির্দেশ করা ঠিকানায় গিয়ে, একটি নির্মীয়মান দোকানঘর থেকে বোমাগুলি উদ্ধার করে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতদের বিরুদ্ধে এর আগেও বিভিন্ন জায়গায় খুন, খুনের চেষ্টা, ডাকাতি-সহ একাধিক অভিযোগ ছিল। ধৃতদের মধ্যে মাসুদ মণ্ডল চাপড়ার কুখ্যাত দুষ্কৃতী বলে পরিচিত। তার বিরুদ্ধে চাপড়া থানাতেই নানা সময়ে একাধিক অভিযোগ দায়ের হয়েছে। ২০১১ সালে এপ্রিল মাসে অস্ত্র আইনে অভিযোগ দায়ের হয় তার বিরুদ্ধে। ২০১৪ সালের নভেম্বর, ২০১২-এর জুলাই, ২০১৪ মার্চ মাসে তার বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে অভিযোগ দায়ের হয়েছিল। ২০১৪ সালের মার্চ মাসে চাপড়া থানা এলাকায় একটি খুনের মামলাতেও অভিযুক্ত ছিল মাসুদ। চাপড়া থানায় একাধিক অভিযোগের পাশাপাশি করিমপুর থানা এলাকাতেও তার বিরুদ্ধে মাদক আইনে অভিযোগ হয়। নিষিদ্ধ কাশির ওষুধ পাচারের অভিযোগ ছিল সে বার তার বিরুদ্ধে। অন্য দিকে, আরেক জন ধৃত রবিউলের বিরুদ্ধে নাকাশিপাড়া থানায় মাদক আইনে অভিযোগ ছিল আগেই। ধুবুলিয়া থানায় তার বিরুদ্ধে ডাকাতির ঘটনায় অভিযোগ ছিল। এ ছাড়াও খুনের চেষ্টা ঘটনায় অভিযুক্ত ছিল সে। পুলিশ জানাচ্ছেন, ধৃতদের মধ্যে মাসুদ মণ্ডল, রবিউল মণ্ডল এবং সমীর শেখ সম্প্রতি চাপড়া থানা এলাকায় বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর এবং সম্পত্তি নষ্টের ঘটনায় উপযুক্ত ছিল। তারা পলাতক ছিল দীর্ঘ দিন ধরে। তাদের খুঁজছিল পুলিশ। বাকি তিন দুষ্কৃতী তাহের আলি মণ্ডল, সাজামল মণ্ডল এবং আলিম মণ্ডলের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ ছিল।
তবে সে দিন একসঙ্গে এতজন কুখ্যাত অপরাধী কী উদ্দেশ্যে বাদলাঙ্গী মোড় এলাকায় জড়ো হয়েছিল, সেটাই এখন ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, ডাকাতির উদ্দেশ্যে তারা জড়ো হয়েছিল। তবে এর সঙ্গে অন্য কোনও অপরাধমূলক কাজেরও পরিকল্পনা ছিল কিনা, তা-ও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। যে দিন ওই দুষ্কৃতীদের গ্রেফতার করা হয়, সে দিনও তাদের কাছ থেকে আগ্নেয়াস্ত্র, গুলি এবং বোমা, ধারালো অস্ত্র উদ্ধার হয়েছিল। কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার কে অমরনাথ বলেন, ‘‘ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। সমস্ত বিষয় খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’