নদীতে ডুবুরি নামিয়ে খোঁজ চলছে। শনিবার। নিজস্ব চিত্র।
ভাইকে আগেভাগে সাবধানে নদীতে স্নান করিয়ে পাড়ে তুলে দিয়েছিলেন তরুণ। এর পরে নিজে নদীতে স্নান করতে নেমেই তলিয়ে গেলেন দাদা। শনিবার সকালের এই ঘটনায় নিখোঁজ তরুণের শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনও খোঁজ মেলেনি।
বালুরঘাট থেকে শান্তিপুর থানার প্রফুল্লনগরে মামার বাড়ি বেড়াতে এসেছিলেন উনিশ বছরের দীপ দে। এলাকার স্থানীয় পুজোর প্রতিমা ভাসানের সময়ে ভাগীরথী নদীতে স্নান করতে নেমে তলিয়ে যান বছর উনিশের ওই তরুণ। তাঁর সন্ধানে তল্লাশি শুরু হয়। তবে শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্তও কোনও হদিস মেলেনি।
শনিবার ভোরেই বালুরঘাট থেকে শান্তিপুর থানার নবলা পঞ্চায়েতের প্রফুল্লনগর এলাকায় মামার বাড়িতে বেড়াতে আসেন দীপ। সঙ্গে ছিল তাঁর বছর আটেকের ভাই দেব। তাঁদের মামাবাড়ির এলাকায় শীতলা পুজো হয়। সেই পুজো উপলক্ষেই মামাবাড়ি এসেছিল দুই ভাই। বালুরঘাট থেকে বাসে চেপে শনিবার ভোর রাতে ফুলিয়ায় আসেন দীপ এবং তাঁর ভাই। শনিবারের পুজোয় অংশ নেন।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকালে এলাকার বাসিন্দারা গঙ্গাযাত্রা করেন। আগের বছরের প্রতিমা ভাসানের পাশাপাশি স্নান সেরে নতুন প্রতিমা নিয়ে আসা হয়। এ দিন সকালেই সকলে বেরিয়ে পড়েন সেই কাজে। তবে ভোর রাতে এসে ঘুমিয়ে পড়ায় কিছুটা দেরিতেই ভাই দেবকে নিয়ে বয়রাঘাটে পৌঁছোন দীপ। সেখানে অন্যদের সঙ্গে দেখাও হয়। এর পর ঘাটে নিজে দাঁড়িয়ে থেকে ভাইকে স্নান করান দীপ। ভাইকে নিজে পাড়েও তুলে দেন। এর পরেই নিজে স্নান করার জন্য ভাগীরথীতে ডুব দেন। তার পরে আর ওঠেননি তরুণ। আশপাশের অন্যরা তা দেখে সঙ্গে সঙ্গে ঝাঁপিয়ে পড়েন নদীতে। তবে পাওয়া যায়নি দীপকে।
প্রাথমিক ভাবে ঘাটে উপস্থিত সকলে তল্লাশি করেন। পাশাপাশি, খবর দেওয়া হয় পুলিশ এবং ব্লক প্রশাসনকেও। বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর তরফে সেখানে নামানো হয় ডুবুরি। স্থানীয় বাসিন্দা এবং ডুবুরি নিয়ে তল্লাশি শুরু হয়। তবে শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত খোঁজ মেলেনি ছেলেটির।
জানা গিয়েছে, দীপ তাঁর জ্যেঠুর ডেকরেটর ব্যবসায় সহযোগিতা করছিলেন। সঙ্গে নিজেও কাজ করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। ইতিমধ্যেই খবর পাঠানো হয়েছে বালুরঘাটে দীপের বাড়িতেও। বিপর্যয়ের খবর পেয়ে শনিবার সকালেই বাসে চেপে সান্তিপুরে উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন তাঁর বাবা। দীপের সম্পর্কিত মামি রমা দাস বলেন, “কী ভাবে যে এ সব হয়ে গেল! ছেলেটা সবে কিছু ক্ষণ আগেই বেড়াতে এসেছে। ভাইকেও স্নান করাল। এখনও ভাবতে পারছি না।”