নিজস্ব চিত্র।
সমাজমাধ্যমের দেওয়ালে কচ্ছপের ছবি দেওয়াই কাল হল। নিষিদ্ধ কচ্ছপ বেআইনি ভাবে বিক্রির অভিযোগে গ্রেফতার হলেন নিমাই নাথ নামে এক ব্যক্তি। শনিবার দুপুরে নবদ্বীপ থেকে তিনটি কচ্ছপ-সহ ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়। তিনি নবদ্বীপ গঙ্গানগরের বাসিন্দা।
বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার দুপুরে ধৃত নিমাইয়ের সমাজমাধ্যমে কচ্ছপের ছবি দেখতে পান নবদ্বীপের এক পরিবেশ সংগঠনের সদস্য ঋজু বিশ্বাস। দেখেই তাঁর সন্দেহ হয়। ঋজু বলেন, “আমি নেট ঘেঁটে দেখি ওই কচ্ছপ ধরা বা কাছে রাখা সম্পূর্ণ আইন বিরুদ্ধ। এরপর ওঁর সঙ্গে যোগাযোগ করে নিজের পরিচয় গোপন করে জানাই আমি অ্যাকোরিয়ামের জন্য কচ্ছপ কিনতে চাই। একজোড়া কচ্ছপের প্রতিটির জন্য ১২০০ টাকা চাইলেও দরাদরি করে ঠিক হয় ২১০০ টাকা।” এরপর শনিবার বেলার দিকে কচ্ছপ বিক্রি করার জন্য ওই ব্যক্তি তাঁকে নবদ্বীপের গঙ্গার পূর্বপাড়ে স্বরূপগঞ্জে যেতে বলেন। সেই মতো পরিবেশ সংগঠনের জনাপাঁচেক সদস্য সেখানে গিয়ে অপেক্ষা করতে থাকেন। শনিবার দুপুরের দিকে বিক্রির জন্য ব্যাগে করে কচ্ছপ নিয়ে ওই ব্যক্তি হাজির হতেই তারা পুলিশ এবং বন দফতরকে খবর দেন। প্রথমে তাকে নবদ্বীপ থানায় নিয়ে আসা হয়। এরপর বিকেল নাগাদ কৃষ্ণনগরের রেঞ্জ অফিসার-সহ বন দফতরের অন্যান্য কর্মীরা এসে তিনটি কচ্ছপ-সহ নিমাই নাথকে নিজেদের হেফাজতে নেন। রেঞ্জার দেবাশিস বিশ্বাস বলেন, “ওই কচ্ছপগুলি সিডিউল একের অন্তর্গত প্রাণী। যাদের ধরা, পোষা বা বিক্রি করা গর্হিত অপরাধ। এই অপরাধে অভিযুক্তের তিন বছরের জেল হতে পারে।” বন দফতর ধৃত নিমাই নাথের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিচ্ছে বলে জানা গিয়েছে।
এই প্রসঙ্গে নেচার অ্যান্ড ওয়াইল্ড লাইফ কনজারভেশন ট্রাস্ট্রের সভাপতি সনজিৎ ঘোষ বলেন “আমরা বিষয়টি জানতে পারি ওয়াইল্ড লাইফ ক্রাইম কন্ট্রোল ব্যুরোর সূত্রে। সেই মতো আমাদের সদস্যরা ওই ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করে এবং কচ্ছপগুলিকে উদ্ধার করা হয়। যে কচ্ছপ উদ্ধার হয়েছে সেগুলি ওয়াইল্ড লাইফ প্রোটেকশন অ্যাক্ট – ১৯৭২ অনুযায়ী সিডিউল ১ এর পার্ট ২ এর ৮ ও ৯ নম্বর তালিকাভুক্ত প্রাণী। যাদের ধরা, পোষা, বিক্রি করা বা মারলে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা হয়। বিচারে তিন থেকে সাত বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে।”