খুনের হুমকি দিয়ে তন্ময় ফের গ্রেফতার

এক আত্মীয়কে খুনের অভিযোগ ছিল তার বিরুদ্ধে। পুলিশ তাকে গ্রেফতারও করেছিল। কিন্তু জামিন পেয়ে ফিরে আসার পরে সে উল্টে নিহত কিশোরের পরিবারকেই মামলা তুলে নেওয়ার হুমকি দিতে শুরু করেছিল বলে অভিযোগ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ০৯ মার্চ ২০১৭ ০২:২৯
Share:

এক আত্মীয়কে খুনের অভিযোগ ছিল তার বিরুদ্ধে। পুলিশ তাকে গ্রেফতারও করেছিল। কিন্তু জামিন পেয়ে ফিরে আসার পরে সে উল্টে নিহত কিশোরের পরিবারকেই মামলা তুলে নেওয়ার হুমকি দিতে শুরু করেছিল বলে অভিযোগ।

Advertisement

শান্তিপুরের বড় কুলিয়া গ্রামে সৌরভ-খুনে অন্যতম অভিযুক্ত তন্ময় বিশ্বাসকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগে ফের গ্রেফতার করল পুলিশ। দিন কয়েক আগেই সৌরভের বোনকে স্কুলের পথে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে ভয় দেখানোর অভিযোগ উঠেছিল তার বিরুদ্ধে। উদ্দেশ্য ছিল, ভয় দেখিয়ে মামলা তুলিয়ে দেওয়া।

পুলিশ সূত্রের খবর, মঙ্গলবার মাঝরাতে গোবিন্দপুর এলাকার এক বন্ধুর বাড়িতে হানা দিয়ে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। বুধবার রানাঘাট আদালতে হাজির করানো হলে তাকে চোদ্দো দিন জেল হাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

গত বছর সরস্বতী পুজোর পরের দিন খুন হয়েছিল বড় কুলিয়ার বছর সতেরোর সৌরভ বিশ্বাস। চাঁদা তোলা থেকে শুরু করে পুজোর সব রকম আয়োজনের সঙ্গে সে জড়িত ছিল। সন্ধ্যায় মণ্ডপে বক্স বাজিয়ে নাচগান চলছিল। সৌরভও সেখানে কিছুক্ষণ ছিল। তার পরে আর তাকে দেখা যায়নি। গায়েব হয়ে যায় সে।

টানা ছ’দিন নিখোঁজ থাকার পরে বাড়ির কাছেই একটি বিলের মাটি খুঁড়ে সৌরভের মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তদন্তে জানা গিয়েছিল, ওই রাতে দুই বন্ধু ফোন করে তাকে ডেকে নিয়ে গিয়েছিল। পুজোর কাজকর্ম সেরে ক্লান্ত থাকায় সৌরভ প্রথমে যেতে চায়নি। কিন্তু বন্ধুরা চাপাচাপি করায় শেষমেশ সে রাজি হয়ে যায়।

পুলিশের অনুমান, পুষে রাখা রাগ মেটাতে অন্ধকার মাঠে ঝিলের ধারে আকণ্ঠ মদ খাইয়ে সৌরভকে খুন করা হয়েছিল। যে দুই বন্ধু তাকে ডেকে নিয়ে গিয়েছিল, তাদের এক জনের নাম কর্ণ মজুমদার, তারও বয়স বছর সতেরো। তদন্তে নেমে ওই সময়েই কর্ণকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। কিন্তু প্রধান অভিযুক্ত তন্ময় পালিয়ে যায়। দীর্ঘদিন পুলিশ আর তার কোনও খোঁজ পায়নি।

খোঁজ মেলে মাস দেড়েক আগে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সে দিন সন্ধ্যায় তন্ময় মত্ত অবস্থায় গ্রামে ঢুকে পড়েছিল। গ্রামের লোকজন তাকে পাকড়াও করে মারধর
শুরু করে দেন। খবর পেয়ে পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। কর্ণ নাবালক হলেও তন্ময় প্রাপ্তবয়স্ক। পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। প্রথমে হাজতে পাঠানো হলেও কিছু দিন পরেই জামিনে ছাড়া পেয়ে যায় সে।

আর তার পরেই ফের গোলমাল শুরু করে তন্ময়। গ্রামের বাসিন্দাদের একাংশের ধারণা, এক বার পুলিশের ভাত খেয়ে আসায় আরও বেপরোয়া হয়ে গিয়েছিল তন্ময়। এমনিতে মুক্তি পাবে না বুঝে গ্রামে ঢুকে সে হুমকি দিতে শুরু করে। গত সোমবার স্কুলে যাওয়ার পথে সৌরভের মেজো বোন সুরভিকে সে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে শাসায়, সৌরভকে খুনের মামলা না তুললে ‘জানে মেরে দেবে’ বলে হুমকিও দেয় বলে অভিযোগ।

এর পরেই সৌরভের পরিবারের তরফে শান্তিপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। সৌরভের বাবা গণেশ বিশ্বাস বলেন, “ওগ্রেফতার হওায়াতে আমরা খুশি। আমরা চাই, দুই খুনি শাস্তি পাক।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement