প্রতীকী চিত্র।
সকালে তৃণমূলের প্রার্থী অপূর্ব সরকারের রোড-শো। বেলা একটু গড়াতেই হুড-খোলা জিপে প্রচার করেন অধীর চৌধুরী।
রবিবাসরীয় সকাল যদি যুযুধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বী কংগ্রেস ও তৃণমূল দখল নেয়, তাহলে বিকেলের পড়ন্ত বেলায় সিপিএমের মিছিলের লাল পতাকায় ঢাকা পড়ে বেলডাঙার রাস্তা। এ ভাবেই রবিবার সকাল থেকে সন্ধ্যা সরগরম ছিল বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্রের অধীনে থাকা বেলডাঙা পুরসভা থেকে বেলডাঙা-১ ব্লকের বিভিন্ন এলাকা।
এ দিন সকাল আটটা নাগাদ বেলডাঙা পুরসভার সামনে থেকে পায়ে হেঁটে প্রচার শুরু করেন বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী অর্পূব সরকার। তাঁর সঙ্গে ছিলেন কয়েকশো দলীয় কর্মী-সমর্থক। গরমের হাত তেকে রেহাই পেতে তাঁদের মাথায় ছিল তৃণমূলের প্রতীক বসানো টুপি। হাতে ছিল ছাতা। মমতার মুখের ছবি বসানো টি-শার্ট পুরুষদের পরনে এবং মহিলারা পরেছিলেন ঘাস ফুল আঁকা শাড়ি। ওই পদযাত্রায় মহিলাদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
অপূর্ব সরকারের সঙ্গে ওই রোড-শোতে পায়ে পা মিলিয়েছিলেন রেজিনগরের বিধায়ক রবিউল আলম চৌধুরি, নদিয়ার কালীগঞ্জের বিধায়ক হাসানুজ্জামান, বেলডাঙার পুরপ্রধান ভরত ঝাওর-সহ বিভিন্ন নেতৃত্ব। এ দিন পদযাত্রা কলেজ মাঠ হয়ে হাটপাড়া ছুঁয়ে বেলডাঙা বাজারে প্রবেশ করে। পরে বেলডাঙা পুরসভার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে প্রচার চালান অর্পূব। রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময়ে তৃণমূল প্রার্থীকে লক্ষ করে ফুল ছড়ান দলীয় কর্মী-সমর্থকেরা।
ফুলের পাপড়ি ছড়ানো হয়েছে অধীর চৌধুরীকে লক্ষ করেও। বেলডাঙা পুর-এলাকা যখন দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন তৃণমূলের প্রার্থী। তখন বেলা গড়াতেই রেজিনগরের ছেতিয়ানি মোড় থেকে হুড-খোলা গাড়িতে প্রচার শুরু হয় কংগ্রেসের। ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর থেকে কাপাসডাঙা হয়ে বেলডাঙা প্রবেশ করেন কংগ্রেস প্রার্থী অধীর চৌধুরী। এ দিন তিনি হুড খোলা জিপে এলাকা ঘুরে প্রচার চালান তিনি। গাড়িতে তাঁর সঙ্গী ছিলেন বেলডাঙার বিধায়ক সফিউজ্জামান-সহ বিভিন্ন কংগ্রেস নেতৃত্ব।
কংগ্রেসের ওই প্রচারে ছিল বেশ কয়েকটি গাড়ি। ওই গাড়ি কাপাসডাঙা হিজুলি হয়ে বেগুনবাড়ি এলাকায় ঢুকতেই এলাকার মানুষ ফুল ছিটিয়ে অধীর চৌধুরীকে স্বাগত জানান। পরে বেলডাঙা হরেকনগর মোড়ে এসে বেলডাঙা মাঝপাড়া হয়ে বেলডাঙা শহরে ঢোকার মুখেই অদীর চৌধুরীকে সামনে পেয়ে এলাকার কয়েকজন মহিলা তাঁদের বাড়ির সামনে ড্রেনের দশা নিয়ে যেমন নালিশ জানান। তেমনি সরকারি প্রকল্পে ঘর মিলছে না বলেও অভিযোগ করেন।
অধীর চৌধুরী দাঁড়িয়ে তাঁদের যাবতীয় অভিযোগ খুব মন দিয়ে শোনেন। পরে সেখান থেকে বেলডাঙা শহরের কিছু এলাকা ঘুরে মাড্ডা গ্রামে পৌঁছন। সেখান থেকেই রামেশ্বরপুর হয়ে বহরমপুর ফেরেন তিনি। এ দিন মোটরবাইকে ও পায়ে হেঁটে অসংখ্য কর্মী-সমর্থক অধীর চৌধুরির সঙ্গী ছিলেন।
‘গুরু’ ও ‘শিষ্য’ দুজনে ভোট প্রচারের আলো শুষে নেওয়ার পরে এ দিন বিকেলের দিকে বেলডাঙা সিআরজিএস হাইস্কুলে কর্মী সভা করে সিপিএম। সেখান থেকে বেলডাঙা শহরের কলেজ মোড়, পাঁচরাহা হয়ে বড়ুয়া মোড় যায় প্রায় কয়েকশো কর্মী-সমর্থকের মিছিল। মিছিল থেকে কংগ্রেস প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার স্লোগান ওঠে। তখন মিছিলে ছিলেন সিপিএমের জেলা ও স্থানীয় নেতৃত্ব।
সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য শমীক মণ্ডল বলছেন, ‘‘তৃণমূল ও বিজেপি প্রার্থীকে পরাজিত করতে বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্রে কংগ্রেসকে ভোট দেওয়ার জন্য এ দিন মিছিল থেকে আবেদন করা হয়েছে।’’