Kalyani JNM Hospital

জেএনএমে নজর নেই আনাগোনায়, সন্দেহ নিরাপত্তায়

প্রশ্ন উঠছে, জুনিয়র চিকিৎসকেরা বিভিন্ন দাবি নিয়ে কর্মবিরতি ও আন্দোলন চালিয়ে গেলেও, তাঁদের সেই দাবিতে হস্টেলে অবাধ যাতায়াতের প্রসঙ্গ কেন তুলে ধরা হয়নি?

Advertisement

সুদেব দাস

কল্যাণী  শেষ আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৮:২৪
Share:

জেএনএমে ছাত্রাবাসের প্রবেশপথ। বুধবার কল্যাণীতে। নিজস্ব চিত্র।

হাতে স্টেথোস্কোপ, সাদা অ্যাপ্রন কিংবা বাইকে 'ডক্টর’ লোগো থাকলেই হল!

Advertisement

দিন হোক বা রাত। চাইলেই অবাধ যাতায়াত সম্ভব কল্যাণী জেএনএম মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ছাত্রাবাসে। কে, কখন সেখানে ঢুকছে বা বেরোচ্ছে সেই তথ্য লিপিবদ্ধ করে রাখতে মানা হচ্ছে না রেজিস্টার। লাগে না পরিচয়পত্রও। অভিযোগ, আবাসনের নিরাপত্তা রক্ষীদের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেন জুনিয়র ডাক্তার সংগঠনের একাংশের নেতারাই।

আর জি কর চিকিৎসক তরুণীকে ধর্ষণ ও খুনের প্রতিবাদে জেলার মেডিক্যাল কলেজগুলিতেও এক মাসের বেশি ধরে চলছে প্রতিবাদ আন্দোলন, কর্মবিরতি। কল্যাণী জেএনএমে আবার ন্যায়বিচারের দাবির সঙ্গে নিজেদের কলেজের বেশ কিছু দাবি যুক্ত হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে যে হস্টেল, হাসপাতাল ও কলেজ চত্বরে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা রাখতে হবে। বাড়াতে হবে নিরাপত্তারক্ষীর সংখ্যা। প্রতিটি বিভাগেই চিকিৎসকদের জন্য করতে হবে ‘অন কল’ ঘরের ব্যবস্থা।

Advertisement

এখন প্রশ্ন উঠছে, জুনিয়র চিকিৎসকেরা বিভিন্ন দাবি নিয়ে কর্মবিরতি ও আন্দোলন চালিয়ে গেলেও, তাঁদের সেই দাবিতে হস্টেলে অবাধ যাতায়াতের প্রসঙ্গ কেন তুলে ধরা হয়নি? নেপথ্যে কি তবে রয়েছে অন্য কোনও কারণ? কল্যাণী জেএনএমের চিকিৎসক পড়ুয়াদের জন্য রয়েছে পৃথক দু’টি ক্যাম্পাস। দু’টি ক্যাম্পাসের মূল প্রবেশপথে ২৪ ঘণ্টায় নিরাপত্তা রক্ষীরা থাকেন। জানা গিয়েছে, দিনের বিভিন্ন সময়ে এমনকি সন্ধ্যা বা গভীর রাতেও অনায়াসে চাইলেই আবাসনের ছাত্রছাত্রীরা বাইরে যাতায়াত করতে পারেন। সে জন্য তাঁদের কারও কাছে জবাবদিহি করতে হয় না। আবার চাইলেই বহিরাগতদের কেউ ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে পারেন।

হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কাছে ছাত্রাবাসের প্রধান ফটকে ছোট্ট একটি ছাউনির নীচে চেয়ারে বসেছিলেন এক নিরাপত্তা রক্ষী। নাম প্রকাশ করা যাবে না, এই শর্তে ওই নিরাপত্তা কর্মী বলেন, "কে, কখন আবাসনে আসছেন-যাচ্ছেন তার কোনও তথ্যই কাগজে-কলমে লিপিবদ্ধ থাকে না। তবে খাতা একটা আছে। তাতে জুনিয়র ডাক্তারদের জন্য বিভিন্ন সময় আসা অনলাইন ডেলিভারি নিরাপত্তা রক্ষীদের গ্রহণ করতে হয়। কার কখন, কী পার্সেল আসছে, সেটা ওই খাতায়
লিখে রাখি।"

কী ভাবে তাঁরা বোঝেন যে কে মেডিক্যাল কলেজের ছাত্রছাত্রী? কে বাইরের ছেলেমেয়ে? উত্তরে ওই নিরাপত্তা রক্ষী বলেন, "কেন! গাড়ি বা বাইকের সামনে ডাক্তারের লোগো, হাতে বা গলায় থাকা স্টেথোস্কোপ বা সাদা অ্যাপ্রন। তবে কেউ যদি এগুলোর অপব্যবহার করে, তা হলে আমাদের পক্ষে তা ধরা সম্ভব নয়।" তাঁর কথায়, "আমরা এখানে কী ভাবে কর্তব্য পালন করব, তা ওই জুনিয়র ডাক্তারদের ইউনিয়ন থেকে ঠিক করে দেওয়া হয়।"

চিকিৎসক পড়ুয়াদের অনেকেই বলছেন, আবাসনে বহিরাগতদের অবাধ আনাগোনা আটকাতে বারকোড-যুক্ত ডিজিটাল পরিচয়পত্র কিংবা বায়োমেট্রিক যন্ত্র ব্যবহার করা যেতেই পারে। জেএনএমের জুনিয়র ডাক্তার সংগঠনের নেতা বিচিত্রকান্তি বালা বলেন, “নিরাপত্তা রক্ষীরা কী ভাবে কাজ করবেন, তা সম্পূর্ণই কলেজ প্রশাসনের বিষয়। আমরা কখনই তাঁদের কাজে হস্তক্ষেপ করতে পারি না। আমরাও চাই, নিয়ম মেনে আবাসনে যাতায়াতের বিষয়টি দেখা হোক।” জেএনএমের অধ্যক্ষ মণিদীপ পাল বলেন, “হস্টেলে অবাধ আনাগোনার বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি। অবশ্যই এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement