আইটিআই কলেজে গণনা কেন্দ্রে চূড়ান্ত পর্যায়ের প্রস্তুতি শেষ। নিজস্ব চিত্র
প্রার্থী মার খাওয়ার পরে বিজেপি বলছে, গণতন্ত্র আক্রান্ত। তৃণমূলের পাল্টা দাবি, বিজেপি প্রার্থীই বুথে-বুথে উত্তেজনা তৈরির চেষ্টা করছিলেন। দু’পক্ষের মাটি কামড়ে লড়াই ভোটের দিনভর স্পষ্ট বোঝা গিয়েছিল। তার ফল আখেরে কী হয়েছে, জানা যাবে আজ ইভিএম খোলার পরেই।
আজ, বৃহস্পতিবার কালিয়াগঞ্জ এবং খড়্গপুরের পাশাপাশি করিমপুর বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচনের ভোট গণনা। গোটা রাজ্যের নজর থাকবে সে দিকে। বিশেষ করে বিজেপি প্রার্থী জয়প্রকাশ মজুমদার আক্রান্ত হওয়ার পরে করিমপুরই আলোচনার কেন্দ্রে। জয়প্রকাশই শেষ হাসি হাসেন, নাকি তৃণমূল নিজের গড় ধরে রাখে, তা নিয়ে কৌতূহল তুঙ্গে।
জয়প্রকাশের উপরে হামলার অভিযোগে ইতিমধ্যেই ছ’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মূল অভিযুক্ত তারিকুল শেখ-সহ পাঁচ জন মঙ্গলবার জামিনে ছাড়া পেয়ে গিয়েছিলেন। ওই দিন বিকেলে থানারপাড়ার পণ্ডিতপুর রামনগর থেকে ধৃত সুকুমার সর্দারকে বুধবার তেহট্ট আদালতে হাজির করানো হয়েছিল। আগের পাঁচ জন যেমন জামিনে ছাড়া পেয়েছিলেন, সুকুমারও পেয়েছেন। কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার অতিরিক্ত সুপার (গ্রামীণ) কৃশানু রায় জানান, রাত পর্যন্ত আর কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।
সোমবারের ভোটে মোট ২৬১টি বুথে লাখ দুয়েকের বেশি ভোটার তাঁদের মত জানিয়েছেন। চার প্রার্থী—তৃণমূলের বিমলেন্দু সিংহ রায়, বিজেপির জয়প্রকাশ মজুমদার, বাম-কংগ্রেস জোটের গোলাম রাব্বি ও ভারতীয় ন্যায় অধিকার রক্ষা পার্টির দোলা সাহা রায়ের মধ্যে কে বিধায়ক হবেন, তা নির্ধারিত হয়ে গিয়েছে। তা দুপুরের মধ্যেই স্পষ্ট হয়ে যাবে।
ইতিমধ্যেই করিমপুর ফার্মে নবনির্মিত আইটিআই কলেজে গণনা কেন্দ্রে চূড়ান্ত পর্যায়ের প্রস্তুতি শেষ। এ দিন পর্যবেক্ষকদের নিয়ে গণনা কেন্দ্রে সব ব্যবস্থা খতিয়ে দেখেন জেলাশাসক বিভু গোয়েল ও তেহট্ট মহকুমাশাসক অনীশ দাশগুপ্ত। নিরাপত্তার দায়িত্বে পুলিশের পাশাপাশি এক কোম্পানি আধা সেনা রয়েছে। প্রচুর সিসিটিভি ক্যামেরায় মুড়ে ফেলা হয়েছে গোটা এলাকা। জেলাশাসক বলেন, “সমস্ত প্রস্তুতি শেষ। নিরাপত্তায় কোনও ফাঁক রাখা হয়নি। গণনা কেন্দ্রের চারপাশে যথারীতি ১৪৪ ধারা জারি থাকবে।”
প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ভোট গণনা শুরু হবে সকাল ৮টা থেকে। নিয়মমাফিক, প্রথমে পোস্টাল ব্যালট গোনা হবে। তার পরে দু’টি ঘরে ১০টি করে টেবিলে মোট ২০টি টেবিলে ইভিএমের গণনা শুরু হবে। মোট ১৪ রাউন্ড গণনা হবে। পোস্টাল ব্যালট এবং ইভিএমের ভোট গোনার শেষে প্রার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করে যে কোনও পাঁচটি বুথের ভিভিপ্যাট-এর স্লিপ গুনতি করা হবে। এর পরে চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করবেন নির্বাচন কমিশনের আধিকারিক।
জেলাশাসক জানান, গণনা পর্ব সুষ্ঠু ও অবাধ করতে ত্রিবলয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়েছে। গণনার সঙ্গে যুক্ত প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক দলের কর্মীরা ছাড়া অন্যদের গণনা কেন্দ্রে প্রবেশ নিষেধ। প্রথম বলয়ে দায়িত্বে থাকবে আধা সেনা। দ্বিতীয় বলয়ে থাকবে আধা সেনা ও রাজ্য পুলিস। শেষ বলয়ে রাজ্য পুলিশ। প্রথম বলয় পর্যন্ত মোবাইল ফোন নিয়ে যাওয়া যাবে। শেষ বলয়ে নির্বাচন কমিশনের অনুমতি সাপেক্ষে সংশ্লিষ্ট আধিকারিক ছাড়া আর কেউ মোবাইল সঙ্গে রাখতে পারবেন না।