কল্যাণীতে ‘ভুল’ করে ডিগ্রি বিলি এক ডজন!

বৃহস্পতিবার সমাবর্তনে যা ঘটল, তা অভূতপূর্ব। দিন কয়েক আগে পরীক্ষা নিয়ামকের দফতর থেকে যে তালিকা প্রকাশ করা হয়, তাতে দেখা যাচ্ছে, মাত্র দু’জনকে এ বছর ডি লিট ডিগ্রি দেওয়া হবে।

Advertisement

মনিরুল শেখ

কল্যাণী শেষ আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০১৮ ০১:২৮
Share:

সম্মানিত সুমন। নিজস্ব চিত্র

এ বারও সমাবর্তনে বিতর্ক এড়াতে পারল না কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়। গত বার প্রাণীবিদ্যা বিভাগে যে ছাত্রীকে মেডেল দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছিল, তাঁকে আদতে মেডেল দেওয়া হয়নি। শেষে তাঁর নামের উপরে কাগজ মেরে দেওয়া হয়েছিল। তা নিয়ে হাইকোর্টে মামলাও হয়।

Advertisement

বৃহস্পতিবার সমাবর্তনে যা ঘটল, তা অভূতপূর্ব। দিন কয়েক আগে পরীক্ষা নিয়ামকের দফতর থেকে যে তালিকা প্রকাশ করা হয়, তাতে দেখা যাচ্ছে, মাত্র দু’জনকে এ বছর ডি লিট ডিগ্রি দেওয়া হবে। দু’টিই সাম্মানিক ডি লিট। পাচ্ছেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় ও সঙ্গীতশিল্পী কবীর সুমন।

এর পরেই শুরু হয়ে যায় বিতর্ক। সন্ধ্যায় ফের ঘোষণা করা হয়, বিজ্ঞান অনুষদের ৯১ জনকে পিএইচডি ডিগ্রি দেওয়া হবে। কলা-বাণিজ্য অনুষদের ৬৩ জন, শিক্ষা অনুষদের ৩৬ জন আর ইঞ্জিনিয়ারিং, টেকনোলজি ও ম্যানেজমেন্ট অনুষদের ১৯ জনও ও পিএইচডি ডিগ্রি পাবেন। অথচ কলা ও বাণিজ্য অনুষদের অনেককেই পিএইচডি-র পরিবর্তে দেওয়া হয়েছে ডি লিট শংসাপত্র। যা দেখে হতবাক হয়ে গিয়েছেন ডিগ্রি প্রাপকেরাই। তাঁরা প্রশ্ন তুলছেন, এত বড় ভুল কী করে হল?

Advertisement

আরও পড়ুন: ছয় মাসেও সুপারিশ আসবে কি না সন্দেহ

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, অন্তত বারো জনের ক্ষেত্রে এ রকম ভুল হয়েছে বলে রাত পর্যন্ত জানা গিয়েছে। গবেষণার ভিত্তিতে এ বার কাউকে ডি লিট দেওয়ার কথা ছিল না। তা হলে ডি লিটের এতোগুলো শংসাপত্র ছাপা হল কেন?

কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক আধিকারিকের ব্যাখ্যা, এর পিছনে রয়েছে আসলে সমন্বয়ের অভাব। পরীক্ষা নিয়ামকের দফতর সূত্রে জানা যাচ্ছে, দু’টি শংসাপত্র তো ছাপানো হয় না। অন্তত গোটা তিরিশেক ছাপানো হয়েছিল। কিন্তু এক কর্মচারী ভুল করে দু’টির পরিবর্তে একাধিক ডি লিট শংসাপত্র দিয়ে ফেলেছেন।

ইতিহাস বিভাগের পিএইচডি-র পরিবর্তে ডি লিট পাওয়া এক জনের আক্ষেপ, ‘‘সমাবর্তন থেকে ডিগ্রি নেব, এই শখ অনেক দিনের। ডিগ্রিও পেলাম। কিন্তু যে ডিগ্রি পাওয়ার কথা ছিল, তা পেলাম না।’’ বাণিজ্যের এক ছাত্রেরও ক্ষোভ, ‘‘এখন তো বলা হচ্ছে, পরে ঠিক করে দেব। কিন্তু সেই ঠিক শংসাপত্র তো আর সমাবর্তন থেকে নিতে পারব না!’’

সমস্যা আরও আছে। এক শিক্ষক বলেন, ‘‘অনেকেরই হয়তো কয়েক দিনের মধ্যেই পিএইচডি শংসাপত্র কোথাও দেখাতে হবে। তাঁদের কী হবে? যাঁরা ভিন্ রাজ্য বা ভিন্ দেশে থাকেন, দিন কয়েকের ছুটি নিয়ে সমাবর্তনে এসেছেন, তাঁদেরও এখন ট্রেন বা বিমানের টিকিট বাতিল করে এখানে পড়ে থাকতে হবে। পরীক্ষা নিয়ামকের অফিসে গিয়ে পিএইচডি শংসাপত্র চাইতে হবে।

প্রশ্ন হল, ভুল শংসাপত্রগুলিতেও কিন্তু উপাচার্য শঙ্করকুমার ঘোষের সই রয়েছে। তিনিও কেন বিষয়টা দেখলেন না? এই প্রশ্নের সদুত্তর মেলেনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement