Krishnanagar-Karimpur rail project

দু’মাসে দু’বার সমীক্ষা, দিনের আলো দেখবে কি কৃষ্ণনগর-করিমপুর রেল প্রকল্প? প্রশ্ন দুই জনপদে

চলতি বছরের অগস্ট মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকেই শুরু হয়েছে কৃষ্ণনগর-করিমপুর রেলপথ সমীক্ষার কাজ। রেল মন্ত্রক সূত্রে খবর, পাঁচটি সমীক্ষক দল এই সমীক্ষা চালাচ্ছে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ২০:১৬
Share:

ছবি: আনন্দবাজার আর্কাইভ।

তা হলে কি সত্যিই বাস্তবায়িত হতে চলেছে কৃষ্ণনগর-করিমপুর রেল প্রকল্প? শুক্রবার প্রস্তাবিত রেলপথের আরও এক বার সমীক্ষা ঘিরে এই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে জেলার দুই জনপদে।

Advertisement

চলতি বছরের অগস্ট মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকেই শুরু হয়েছে কৃষ্ণনগর-করিমপুর রেলপথ সমীক্ষার কাজ। রেল মন্ত্রক সূত্রে খবর, পাঁচটি সমীক্ষক দল এই সমীক্ষা চালাচ্ছে। তাদেরই একটি দল সমীক্ষা চালিয়েছে শুক্রবার। সমীক্ষার দায়িত্বে থাকা এক আধিকারিক ইন্দ্রনাথ মিশ্র বলেন, ‘‘আমরা সমীক্ষা শেষ করে মন্ত্রকে রিপোর্ট জমা দেব। এর বেশি কিছু বলতে পারব না।’’ তবে রেল সূত্রেই জানা গিয়েছে, কৃষ্ণনগর-করিমপুর ১১ নম্বর রাজ্য সড়কের সঙ্গে প্রায় সমান্তরাল ভাবেই এগোবে রেলপথটি।

গত জানুয়ারি মাসে রেলওয়ে বোর্ডের জয়েন্ট ডিরেক্টর পূর্ব রেলের ডিভিশন ম্যানেজারকে চিঠি লিখে ‘কৃষ্ণনগর-করিমপুর’ রেলপথের সমীক্ষা শুরুর কথা জানান। রেল মন্ত্রক সমীক্ষার কাজের জন্য দু’কোটি টাকা বরাদ্দও করে। সেই সময় তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র দাবি করেন, ২০১৬ সালে বিধায়ক নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই তিনি এই রেল যোগাযোগ স্থাপনে সচেষ্ট হয়েছিলেন। করিমপুর এই লাইনের প্রান্তিক স্টেশন হবে, ফলে তেমন বাণিজ্যিক পরিবহণ সম্ভব না হওয়ায় রেলমন্ত্রক এতে এত দিন আগ্রহ দেখায়নি। গত বছর ১৮ অক্টোবর রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবের সঙ্গে দেখা করে তিনি দীর্ঘ বৈঠক করেন এবং চিঠিতে ফের এই প্রস্তাব দেন। ফেসবুকেও মহুয়া লিখেছিলেন, “রেলমন্ত্রক আমার এই ডাকে সাড়া দিয়ে দু’কোটি টাকা ব্যয়ে কৃষ্ণনগর-করিমপুর রেললাইনের সার্ভের কাজ শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।”

Advertisement

নদিয়ার প্রান্তিক জনপদ করিমপুরে রেল চালানোর দাবি বহু দিনের। তা না হওয়ায় কার্যত কৃষ্ণনগর-করিমপুর রাজ্য সড়কের উপর পরিবহণ সম্পূর্ণ নির্ভরশীল। বিভিন্ন সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, ১৯০৫ সালে ইস্টার্ন বেঙ্গল স্টেট রেলওয়ে কোম্পানির ইঞ্জিনিয়ার ক্যাপ্টেন সি এল ম্যাগনিয়াক এবং মি রেডিস প্রথম কৃষ্ণনগর থেকে বহরমপুর ভায়া করিমপুর রেলপথের সমীক্ষা করেছিলেন। তার পর থেকে বেশ কয়েক বার নানা উদ্যোগ হলেও রেলপথ আজও করিমপুর ছোঁয়নি।

করিমপুরবাসীর আক্ষেপ, কংগ্রেস আমলে রেলমন্ত্রী গনি খান চৌধুরী পরে লালুপ্রসাদ যাদব, রামবিলাস পাসোয়ান, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়— সকলেই রেল মন্ত্রকের দায়িত্ব পাওয়ার পরে বিভিন্ন সময়ে এই রেলপথ তৈরির কথা তুলেছেন। লোকসভার অধিবেশনে কাগজপত্র আদান-প্রদান হয়েছে। প্রত্যেক নির্বাচনের আগে মঞ্চের বক্তৃতায় ফিরে এসেছে এই প্রসঙ্গ। কিন্তু ধামাচাপা পড়েছে সমস্ত ফাইল। প্রত্যেক বছর রেলবাজেটের আগে করিমপুর চাতকের মতো চেয়ে থেকেছে, কিন্তু রেললাইন মেলেনি।

তবে পর পর দু’মাসে দু’বার রেলপথের সমীক্ষায় খুশির হাওয়া বয়ে গিয়েছে কৃষ্ণনগর ও করিমপুরে। কৃষ্ণনগরের বাসিন্দা নবীন মজুমদার বলেন, ‘‘এই রেলপথ চালু হলে জেলার আর্থিক উন্নয়নও হবে।’’ করিমপুরের ভূমি দফতরের কর্মী নয়নিকা দাস বলেন, ‘‘নিত্যদিন সড়কপথে কৃষ্ণনগর অফিসে যাতায়াত করতে হয়। আর্থিক ও শারীরিক সমস্যা বেড়েই চলেছে। রেলপথ হলে অন্তত কিছুটা কষ্ট কমবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement