আর্মস রুট

মুঙ্গের টু ডোমকল, ভায়া ফরাক্কা

অস্ত্র-কারবারে এই হল চেনা রুট। কারবারে হাত পাকাতে এই রুটেই চলাচল। কিন্তু মুঙ্গের থেকে রুটটা টেনে হিঁচড়ে এই প্রান্তিক জেলার অজ মফস্সলে এসে থামে কেন? 

Advertisement

সুজাউদ্দিন বিশ্বাস

ডোমকল শেষ আপডেট: ০৩ মার্চ ২০১৯ ০৬:০৩
Share:

মুঙ্গের টু ডোমকল। ভায়া কালিয়াচক, ফরাক্কা।

Advertisement

অস্ত্র-কারবারে এই হল চেনা রুট। কারবারে হাত পাকাতে এই রুটেই চলাচল। কিন্তু মুঙ্গের থেকে রুটটা টেনে হিঁচড়ে এই প্রান্তিক জেলার অজ মফস্সলে এসে থামে কেন?

প্রশ্নটা রাখা গিয়েছিল পুলিশ কর্তাদের কাছে। মৃদু হেসে জেলায় দীর্ঘ দিন দায়িত্ব সামাল দেওয়া এক কর্তা বলছেন, ‘‘প্রশ্নটা আপনার জেলার রাজনীতির কারবারিদের কাছে করতে পারতেন। নির্বাচনের আগে চড়তে থাকে দাম, বাড়ে কারবারিদের ব্যস্ততা। এটুকুই ধরিয়ে দিতে পারি আপনাকে।’’

Advertisement

আর তাই, কখনও সড়কপথ, কখনও রেলপথ আবার পুলিশের হাত থেকে রেহাই পেতে জলপথকেও বেছে নেয় কারবারিরা। যদিও জেলা পুলিশের কর্তারা জানাচ্ছেন, সাধারণত মুঙ্গের থেকে কালিয়াচক হয়েই মুর্শিদাবাদে অস্ত্র যাই। আবার কখনও কখনও ঝাড়খণ্ডের বংশবাটি হয়েও এই জেলায় পা রাখে আধুনিক অস্ত্রের সরবরাহকারীরা।

রুট প্রায় একই রকম থাকলেও কৌশলে ঘনঘন বদল ঘটায় অস্ত্র কারবারিরা। মাঝে মাঝে ট্রেন বদল, সড়ক পথে হলে বাস বদল বা অনেক সময় ট্রাকে করেও গোপনে চলে আসে অস্ত্র। তা ছাড়া পুলিশ ও সাধারণ মানুষের নজর এড়াতে অস্ত্রের এক একটা অংশ খুলে খুলে নিয়ে এসে জোড়াতালিটা দেওয়া হয় কালিয়াচক কিংবা ফরাক্কায়। কেবল তাই নয়, খুব ঘন ঘন বদলে যায় কারবারিদের মুখ। যাতে সেই মুখ চেনা না হয়ে যায়। যাতে সহজেই পুলিশ তাকে ‘টার্গেট’ করতে

না পারে। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলছেন, ‘‘একটা সময় মুঙ্গের থেকে পুরোপুরি তৈরি অস্ত্রই আসত এই জেলায়। পরে নজর ঘোরাতে অস্ত্রের আলাদা আলাদা অংশ আনতে শুরু করে কারবারিরা। অন্য ব্যবসার আড়ালে অস্ত্রের এই খোলা অংশ জেলায় নিয়ে এসে মুঙ্গেরের দক্ষ কারিগর দিয়েই তৈরি করা হত আধুনিক দামি আগ্নেয়াস্ত্র।’’

তবে মুঙ্গেরের ছোঁয়ায় অনেকেই এই জেলার দক্ষ কারিগর তৈরি হয়েছে যারা নিজেরাই অস্ত্রের অংশ এনে ঘরে বসেই জুড়ে দিচ্ছে আস্ত নাইনএমএম কিংবা সেভেনএমএম।

কোনও রাখঢাক না রেখে এক কারবারি বলছে, ‘‘একটা সময় পাচারকারীদের কাছে আমাদের অস্ত্রের কদর ছিল। এখন সীমান্তে পাচারের সেই রমরমা আর নেই। ফলে এখন আমাদের ভরসা রাজনীতি।’’

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, একটা সময় ডোমকল এলাকায় সকেট বোমার প্রচলন ছিল। সেটা তৈরি ও বহন করা দু’টোই ঝুঁকির। ফলে সকেটের আর বাজার নেই। তারই জায়গা নিয়েছে সেভেন কিংবা নাইনএমএম। কারবারিদের আরও দাবি, বোমার বাজার এখনও আছে। তবে আগের মতো নয়। কারণ, বোমায় ঝক্কি অনেক বেশি। ফলে পিস্তলই এখন বাবুদের ‘পয়লা পসন্দ’।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement