বাগান গড়তে কলার চারা তুলে দেওয়া হল চাষিদের হাতে। নিজস্ব চিত্র।
টিসু কলার চাষ করে কর্মসংস্থান বাড়াতে প্রথম পর্যায়ে মুর্শিদাবাদ জেলাকে বেছে নিল রাজ্য সরকার। জেলার ৪টি ব্লক সাগরদিঘি, কান্দি, মুর্শিদাবাদ জিয়াগঞ্জ ও বেলডাঙা ২ ব্লকের গ্রামীণ ক্ষেত্রে প্রায় ২ লক্ষ লোকের কর্মসংস্থান করা সম্ভব হবে এই পাইলট প্রজেক্টে। বাড়ির আশপাশে যাদের ৫ কাঠা জমি রয়েছে তারাই এই কলা বাগান তৈরি করতে পারবেন।
রবিবার সাগরদিঘিতে বাগান তৈরির জন্য ২৪০০ পরিবারের হাতে ১০৮টি করে টিসু কলার গাছ তুলে দেওয়া হয়। মোট ৩১০২টি পরিবারকে এই বাগান তৈরির সুবিধা দেওয়া হবে এই ব্লকে। খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ দফতরের প্রতিমন্ত্রী সুব্রত সাহা বিধানসভা ক্ষেত্র থেকেই এই প্রকল্প শুরু হল।
এ দিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জেলা ও রাজ্যের বিভাগীয় আধিকারিকেরাও। সুব্রতবাবু এ দিন বলেন, “১০০ দিনের প্রকল্পের সাহায্য নিয়ে এই বাগান তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। গাছের সঙ্গে জৈব সার, কেঁচো সার, জৈব কীটনাশক ও ছত্রাক নাশক এবং রাসায়নিক সার ছাড়াও বাগান ঘেরার জন্য বাঁশ, দড়ি ও নাইলনের জালও দেওয়া হবে বাগান মালিকদের। সব মিলিয়ে ১৬,৩৫৮ টাকার সামগ্রী পাবেন প্রত্যেকে। শুধু তাই নয়,গাছ লাগানো, পরিচর্যা ও সেচের জন্য ৯৩টি শ্রম দিবসের মজুরি বাবদ বাগান মালিককে নিজের বাগানে কাজ করার জন্য ১৯,৮০৯ টাকাও দেওয়া হবে নগদে।” তিনি জানান, গত আর্থিক বছর থেকেই এই বাগান তৈরির প্রকল্প নেওয়া হয়, যা রবিবার সাগরদিঘিতে শুরু করা হল। এর পরে তা শুরু করা হবে জলপাইগুড়ি ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায়। খাদ্য প্রক্রিয়া করণ ও উদ্যান পালন দফতরের মতে, এক এক জন বাগান মালিক ৫ কাঠা জমিতে লাগানো বাগান থেকে প্রতি বছর ২৫ হাজার টাকা করে আয় করতে পারবেন কলা বিক্রি করে। একটি বাগান থেকে যেহেতু তিন বছর ফলন মেলে তাই সব মিলিয়ে ৭৫ হাজার টাকা আয় করা যাবে। কলা বিক্রির ক্ষেত্রেও কোনও সমস্যা হবে না। সরকারি উদ্যোগেই একটি বেসরকারি সংস্থা এই কলা কিনে নেবেন সরাসরি বাগানে এসে।
জেলার উদ্যান পালন দফতরের উদ্যোগে ১০০ দিনের প্রকল্পকে হাতিয়ার করে ২০১৩ সালে প্রথম বছরে প্রায় ৫১২৪ জন চাষি কলা বাগান তৈরি করেছিল জেলায়। তাদের উৎপাদিত সে কলা কিনতে আগ্রহ দেখিয়ে মাঠে নেমেছিল বারাসাতের একটি সংস্থা। একই ভাবে দ্বিতীয় বছরও কলা বাগান তৈরি করেন আরও ৫২৮৭ জন চাষি। চাষের নিয়ম অনুযায়ী প্রথম বছর প্রতি কাঁদিতে ৯ থেকে ১০ ছড়া কলা ফলেছিল প্রথম বছর। দ্বিতীয় বছরে সে উৎপাদন বেড়ে দাঁড়ায় গড়ে ১৫ ছড়াতে। সরকার পাশে দাঁড়ালে চাষ যে লাভজনক হয়ে উঠতে পারে তার নজির রয়েছে।