সপ্তাহের প্রথম ছুটির দিনে ভিড় দোকানে দোকানে। নিজস্ব চিত্র
একদিকে বকরি ইদের রোশনায়। সকাল থেকে সন্ধ্যা নানা অনুষ্ঠানের ভিড়ে সরগরম নদিয়া-মুর্শিদাবাদের গলি থেকে রাজপথ। পাশ কাটিয়ে আর একটি ভিড়ও শনিবার পথ করে নিয়েছিল। বিভিন্ন দিক দিক থেক আসা সে ভিড়ের পথ গিয়ে মিশেছিল বাজারের পোষাকের দোকানগুলিতে। কারণ, শুরু হয়ে গিয়েছে পুজোর কাউন্ট ডাউন।
ইদের শনিবারেই ঝিম ধরা পুজোর বাজারটা যেন চটকা ভেঙে জেগে উঠল। মাস পয়লার পরের দিন শনিবারে ইদ পড়ায় শনি-রবি জোড়া ছুটির সদ্ব্যবহারে উঠে পড়ে বাজারে ছুটলেন চাকরিজীবিরা। দোকানে দোকানে উপচে পড়া ভিড়। বড় রাস্তায় যানজটে পুজোর বাজারের সেই চেনা ছবি দেখে স্বস্তির নিশ্বাস ফেললেন ছোট-বড় ব্যবসায়ীরা।
খুশি খুশি গলায় নবদ্বীপের বস্ত্র ব্যবসায়ী রাজেশ অগ্রবাল বলেন “আমাদের অনুমান ছিল শনিবার থেকেই পুজোর বাজার জমতে শুরু করবে। সেটাই হল। এদিন সকাল থেকেই কেনাকাটা শুরু করেছেন মানুষ।” শনিবারের আগে পর্যন্ত বাজারের হাল দেখে ইদ এবং পুজোর মতো দুটি পরবের কোনও আন্দাজ মেলেনি।
ইদের দিন থেকেই কিন্তু দেখা গেল অন্য ছবি। বেলা বাড়তেই দোকানে দোকানে ভিড় জমতে শুরু করে। নদিয়ার কৃষ্ণনগর, রানাঘাট, চাকদহ, কল্যাণী, মুর্শিদাবাদের বহরমপুর, কান্দি, রঘুনাথগঞ্জ, জঙ্গিপুর— সর্বত্রই এক ছবি।
সকাল থেকে নিঃশ্বাস ফেলার সময় পাননি মুর্শিদাবাদের অন্যতম প্রধান বস্ত্র ব্যবসায়ী খাগড়ার শেখর মারোঠী। তিনি জানান, “শনিবার সকল থেকে আমাদের তিনশো কর্মচারী এবং ছয়টি কাউন্টার মিলিয়ে হিমশিম খাচ্ছি।’’ তিনি জানান, এ দিন যেমন পুজোর বাজারে বেরিয়েছেন চাকুরীজীবীরা। ইদের জন্য অনেকেই বিদেশ বা ভিন রাজ্য থেকে শুক্রবার রাতে বা শনিবার ফিরেছেন। তাঁরাও আজই ভিড় জমিয়েছেন দোকানে।
কান্দির বস্ত্র ব্যবসায়ী মহিতোষ দত্ত বা সন্দীপ চক্রবর্তী জানান বৃষ্টি কিছুটা বিঘ্ন ঘটালেও এই মরশুমে এখনও পর্যন্ত সেরা বেচাকেনা হয়েছে শনিবার। প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক বড়োঞার দীনেশ দাস বলেন “পুজোর বাজার নিয়ে চিন্তায় ছিলাম। হাতে বেতন আসতেই সেটা সেরে ফেললাম। একটা বড় কাজ মিটল।’’
শুক্রবার অনেক রাতে দুবাই থেকে দমদম বিমানবন্দরে নেমেছেন তিওরখালির আসাদুল শেখ। শনিবার নমাজ সেরেই সোজা কৃষ্ণনগর। আসাদুল বলেন, “বাজারে এখন ভরপুর স্টক। সবে পুজোর বাজার লেগেছে। দারুন কেনাকাটা করেছি।”
পোষাক ব্যবসায়ী দীপক সাহা বলেন, “গত কয়েকদিন ধরে বাজারের হাল দেখে একটু ঘাবড়েই গিয়েছিলাম। কিন্তু শনিবার বাজারের মেজাজ দেখে মনে হল, ঠিকঠাকই এগোচ্ছে।”