প্রতীকী ছবি
মুর্শিদাবাদের গাঁ-গঞ্জে রক্তদান শিবির আয়োজনের ঘটনা তেমন প্রচলিত নয়। করোনা পরিস্থিতিতে ব্লাড ব্যাঙ্কগুলি ক্রমশ রক্ত শূন্য হয়ে পড়ায় এ বার সে ব্যাপারে সচেতন করতে এগিয়ে এলেন মুর্শিদাবাদের ইমাম-মুয়াজ্জিনেরা। গত সোমবার ইমাম-মুয়াজ্জিনদের সংগঠন ‘অল ইন্ডিয়া ইমাম-মুয়াজ্জিন অ্যান্ড সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশন’র পক্ষ থেকে লালবাগের তালপুকুর টিকটিকিপাড়া শিশুশিক্ষা কেন্দ্রে সম্প্রতি রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হল। রক্ত দিলেন অন্তত ৭৩ জন। জেলা প্রশাসন ও পুলিশের কর্তারা সকলেই সেই শিবিরে হাজির ছিলেন। সংগঠনের কর্মকর্তাদের দাবি, এটাই শেষ নয়, এখন থেকে প্রতিটি ব্লকে সংগঠনের পক্ষ থেকে নিয়মিত রক্তদান শিবির করার পরিকল্পনা রয়েছে তাঁদের। এ ব্যাপারে মসজিদ থেকেও বাসিন্দাদের রক্তদানের ব্যাপারে উৎসাহিত করা হবে বলেও আস্বাস দিয়েছেন তাঁরা। সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সাধারনের মধ্যে এ ব্যাপারে সচেতনতার অভাব রয়েছে। রক্তদান করা যে কতটা জরুরি, এ বার সেই বিষয়টিই বোঝানো হবে গ্রামবাসীদের।
নাবালিকা বিয়ে-বন্ধ থেকে ডেঙ্গি রুখতে প্রচার, কোভিড প্রসঙ্গে সতর্ক করা থেকে লকডাউন মেনে চলা— প্রশাসনের পাশে ইমাম মোয়াজ্জিনদের এগিয়ে আসার ঘটনা নতুন নয়। সেই তালিকায় নয়া সংযোজন রক্তদান শিবির।
সংগঠনের জেলা সম্পাদক সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘‘এক দিকে গরম, অন্য দিকে করোনা পরিস্থিতি। যার জেরে রক্তদান শিবির শিকেয় উঠেছে জেলায়। ফলে রক্তের তীব্র আকাল রয়েছে জেলায়। তাই এ ব্যাপারে প্রচার করা যে জরুরি তা উপলব্ধি করে আমরা নিজেরাই এগিয়ে এসেছি। জেলা স্তরে শিবির করা হয়েছে। আগামী দিনে আমরা প্রতিটি ব্লকে এ ভাবে রক্তদান শিবির করে মানুষের পাশে দাঁড়াতে চাই।’’
মুর্শিদাবাদের এক ইমাম বলেন, ‘‘পালস পোলিও খাওয়ানো বা বাল্যবিবাহ রোধে আমরা যে ভূমিকা পালন করেছি, রক্তদানের বিষয়েও তেমন ভূমিকা পালন করব। এটা আমাদের কর্তব্য।’’
তাঁদের এই উদ্যোগের প্রশংসা করে মুর্শিদাবাদের জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনা বলেন, ‘‘এর আগেও ওঁরা নানা সচেতনতামূলক কর্মসূচি করে সমাজের উপকার করেছেন। ফের রক্তদান শিবির করে তাঁরা সত্যিই আমাদের কাজ অনেক সহজ করে দিলেন।’’