মুর্শিদাবাদের লালবাগে তৈরি হচ্ছে চোলাই। নিজস্ব চিত্র
পুলিশি অভিযানও চলছে। বিরাম নেই চোলাই তৈরিরও। জেলার এক প্রান্তে যখন জ্যারিকেন উল্টে চোলাই নষ্ট করছে পুলিশ ও আবগারি দফতর, অন্য প্রান্তে তখন বোতলবন্দি হচ্ছে সদ্য তৈরি করা চোলাই!
শান্তিপুরের বিষমদ-কাণ্ডের আঁচ লেগেছে পড়শি জেলা, মুর্শিদাবাদেও। শুরু হয়েছে অভিযান। এ দিকে প্রশাসনের তৎপরতা দেখে কৌশল বদলেছে চোলাই কারবারিরাও! সারা রাত জেগে তৈরি করার পরে সাইকেলে জ্যারিকেনবন্দি চোলাই নিয়ে বাজারে বেরিয়ে পড়ছে কারবারিরা! পরে বেলা একটু গড়ালে আড়মোড়া ভেঙে পুলিশ যখন গ্রামে যাচ্ছে, তত ক্ষণে ভাটি গুটিয়ে উনুন নিভিয়ে উধাও কারবারিরা। এ যেন বজ্র আঁটুনি, ফস্কা গেরো!
বৃহস্পতিবার মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন থানার পুলিশ চোলাই মদের ভাটি ভাঙার অভিযান চালায়। তার পরেও মুর্শিদাবাদ ও নবগ্রাম থানায় গভীর রাত থেকে চলেছে চোলাই মদ তৈরির কাজ। শুক্রবার সকালে মুর্শিদাবাদ থানার ডাহাপাড়া পঞ্চায়েত এলাকায় বাঁশবনে ঘেরা পুকুর পাড়ের ধারে উনুন জ্বালিয়ে চলছে চোলাই মদ তৈরির কাজ। ‘‘পুলিশের অভিযানের ভয়ে এই ঠান্ডায় রাত জেগে চোলাই তৈরি করতে হচ্ছে’’, কবুল করছেন এক কারবারি।
শুক্রবারেও অভিযান চালিয়ে নওদার পাটিকাবাড়ি থেকে অজয় দত্ত ও কার্তিক মাঝি নামে দুই চোলাই কারবারিকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। নবগ্রাম থানার পুলিশ চোলাইয়ের ঠেকে অভিযান চালিয়ে লালু কোনাই নামে এক জনকে গ্রেফতার করেছে। এ দিন নবগ্রামের রাইন্ডা, জামাইপাড়া, দফরপুর ও খেঁকুল এলাকায় অভিযান চালিয়ে নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে চোলাই তৈরির কাঁচামাল। বাজেয়াপ্ত করেছে চোলাই মদ ও মদ তৈরির সরঞ্জাম। এছাড়া কান্দি মহকুমার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রায় ২৫০ লিটার চোলাই মদ নষ্ট করেছে বলে পুলিশের দাবি। এছাড়াও জেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে আবগারি দফতর প্রায় ৯০০ লিটার চোলাই মদের কাঁচামাল উদ্ধার করেছে। বাজেয়াপ্ত হয়েছে ৭০ লিটার চোলাই মদ।
মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার মুকেশ কুমারের দাবি, গত তিন দিনে জেলায় আটটি মামলা করে ১৬ জনকে ধরা হয়েছে। নষ্ট করা হয়েছে ৮ হাজার লিটার চোলাইয়ের উপকরণ।