গত এক বছরে মুর্শিদাবাদ জুড়ে প্রায় সাড়ে চারশো বেআইনি অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। সঙ্গে হাজার দু’য়েক গুলি ও বোমা। বিস্ফোরক উদ্ধার হয়েছে চার কুইন্টালের উপরে।
জেলা পুলিশ সূত্রে খবর, বেশিরভাগ অস্ত্রই এসেছে বিহার ও মালদহের দিক থেকে। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলছেন, “অস্ত্র ও বোমার বিস্ফোরক আসছে মুঙ্গের থেকে। তার পরে সেগুলি মালদহ হয়ে ঢুকছে নদিয়া-মুর্শিদাবাদে। আর সেই কারণেই ওই রুটগুলির উপরে কড়া নজর রাখা হয়।”
জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছর মার্চ মাস থেকে এ বছর মার্চ পর্যন্ত মুর্শিদাবাদ জেলায় ৪৫৯টি বেআইনি অস্ত্র এবং ১০৩০ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। ওই ঘটনায় ৪৯৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আবার জেলায় ৪০৪ কেজি বিস্ফোরক এবং ১০৫২ টি বোমা উদ্ধার করা হয়েছে। এই ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে ৪৭ জনকে।
মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার মুকেশ কুমার বলেন, “বেআইনি অস্ত্র কারবার রুখতে আমরা তৎপর। জেলায় বেআইনি অস্ত্র ঢুকলেই সোর্স মারফত আমাদের কাছে খবর আসে। সেই অনুযায়ী অস্ত্র উদ্ধারের পাশাপাশি অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয়।” জেলা পুলিশের এক কর্তা বলছেন, ‘‘এখন অবশ্য নাইনএমএম বা সেভেনএমএমের অদলে তৈরি পিস্তল পুরোটাই তৈরি হয়েই আসে মুঙ্গের থেকে। কারণ, এগুলো খুলে আনলে ফের জোড়া লাগানো মুশকিল। তার জন্য দরকার দক্ষ কারিগর। সেই কারিগর এলাকায় নেই।
তবে সব সময় যে মুঙ্গেরের উপরেই ভরসা করে এই কারবার চলে এমনটাও নয়। অনেক সময় সেখান থেকে চড়া দরে দক্ষ করিগর এনে নিজেদের এলাকাতেই তৈরি করা হয় অস্ত্র। তাতে পুলিশি সমস্যা যেমন এড়ানো যায়। তেমনি দক্ষ কারিগরদের হাত ধরে প্রশিক্ষণও নেওয়া যায় ঘরে বসেই।
সেই অস্ত্রও দেদার বিকোচ্ছে বলেও জানা গিয়েছে। ফলে কখনও বাড়ির একটি ঘরে বা কোনও কারখানার আড়ালে দিব্যি তৈরি হচ্ছে অস্ত্র। তবে জেলা পুলিশ সুপারের দাবি, ‘‘জেলায় কোথাও অস্ত্র তৈরি হয় না। বাইরে থেকে তৈরি হওয়া অস্ত্র ঢুকছে। তবে ডোমকলে ছোট আকারে একটি অস্ত্র কারখানা তৈরির চেষ্টা হয়েছিল। সেটাও জানতে পেরে আমরা অবিলম্বে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করেছি।’’