অস্বাভাবিক মৃত্যু হল এক বধূর। মঙ্গলবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে নবদ্বীপের মহিশুড়ায়। মৃতার নাম ফিরদৌসী বিবি (২৮)। এ দিন তাঁকে বাপের বাড়িতে গলার ফাঁস লাগানো অবস্থায় ঝুলতে দেখা যায়। ওই ঘটনায় মৃতার বাবা আনজুর শেখ নবদ্বীপ থানায় মেয়ের মৃত্যুর জন্য দায়ী করে জামাই, শ্বশুর, শাশুড়ি সহ মোট পাঁচজনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
মৃতার বাপের বাড়ির লোকজনের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে বাপের বাড়ি থেকে টাকা আনার জন্য শ্বশুরবাড়ির লোকেরা তাঁর উপর শারীরিক এবং মানসিক অত্যাচার চালাত। গত বৃহস্পতিবার তিন সন্তান-সহ তাঁকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। ফিরদৌসী বিবি মহিশুড়ায় তাঁর বাপের বাড়িতে এসে ওঠেন। রবিবার সকালে শাশুড়ি আলিয়া বিবি এবং এক বিবাহিত ননদ মহিশুড়ায় ফিরদৌসীর বাপের বাড়িতে এসে তাঁর কাছ থেকে জোর করে তিন সন্তানকেই নিয়ে চলে যায়। মৃতার বাবা আনজুর শেখ বলেন, “তারপর থেকে মেয়ে খাওয়া দাওয়া ছেড়ে দেয়। মানসিক ভাবে ভেঙ্গে পড়ে। মঙ্গলবার দুপুরে মেয়ে আত্মঘাতী হয়।’’
বছর আটেক আগে মাঝেরচড়ার বাসিন্দা আইদুল্লা শেখের ছেলে সুজাউদ্দিনের সঙ্গে ফিরদৌসির বিয়ে হয়। বিয়ের সময় নগদ টাকা, সোনা, গাইগরু এবং অনান্য জিনিস পণ হিসেবে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বিয়ের এক বছর পর থেকেই মেয়ের উপর আরও টাকাপয়সার জন্য শ্বশুরবাড়িতে শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতন শুরু হয়। আনজুর বলেন, “এর আগেও অত্যাচার সইতে না পেরে মেয়ে চলে আসে। উভয় পরিবারের মধ্যস্থতায় আবার ফিরে গিয়েছে। কিছুদিন ধরে অত্যাচার চরমে ওঠে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘মেয়ে যে দিন শেষবারের মতো চলে আসে সে দিন পুড়িয়ে মারবে বলে মেয়ের গায়ে কেরোসিন ঢেলে দিয়েছিল ওরা। কিন্তু পালিয়ে এসেও বাঁচতে পারল কই। আমি এর বিচার চাই।” পুলিশ জানিয়েছে অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে। এখনও কেউ গ্রেফতার হয়নি।