হাসপাতালপাড়ার নিকাশিনালার এই হাল।
আসাননগর বাজার থেকে গোবিন্দপুর ইটভাঁটা পর্যন্ত রাস্তার অবস্থা বেহাল। পথ চলাই দায়। অথচ এই রাস্তাটাই ভরসা ছ’টি গ্রামের মানুষের। শুনেছিলাম প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনার টাকায় রাস্তা তৈরি হবে। তার কী অবস্থা?
দীপক সাহা, আসাননগর বাজার
প্রধান: আমি প্রধানের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই শুনছি যে এই রাস্তাটা প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনার প্রকল্পে অনুমোদন হয়ে আছে। এই প্রকল্পের দায়িত্ব জেলা পরিষদের। আমাদের কোনও ভূমিকা নেই। তাই সঠিক ভাবে কিছু বলতে পারব না। নিজেদের উদ্যোগে কিছু দিন আগেই ১৭ লক্ষ টাকা খরচ করে রাস্তা সংস্কার করেছি। তবে শুনছি রাস্তাটা নাকি হবে।
• আমাদের পঞ্চায়েতে পাইপ লাইনের মাধ্যমে পানীয় জল সরবরাহ করার ব্যবস্থা আছে। কিন্তু কল দিয়ে জল পড়ে যায়। এতে আখেরে পানীয় জল নষ্টই হচ্ছে। পঞ্চায়েত থেকে জল সংরক্ষণ করে নির্দিষ্ট সময়ে সরবরাহ করার কোনও ব্যবস্থা কি করা যায়?
জয়ন্ত সাহা, আসাননগর
• সমস্যাটা আমাদের চোখে পড়েছে। কিন্তু জল সরবরাহের দায়িত্বে জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতর। তবে কিছু দায়িত্ব পঞ্চায়েতগুলোর হাতে তুলে দেওয়া হবে। তখন বিষয়টা নিয়ে চিন্তাভাবনা করে দেখব।
পঞ্চায়েতের পানীয় জলের জন্য ২২টি কল আছে। কিন্তু বেশির ভাগ কলই খারাপ হয়ে পড়ে আছে। পঞ্চায়েতের তরফে কি সেগুলো ঠিক করার কোনও পরিকল্পনা আছে।
বিশ্বজিৎ বিশ্বাস, চাঁদেরপোল
• চাঁদেরপোলে যে জলের কলটি রয়েছে, সেটির জলে আর্সেনিক মিলেছে। সেই কারণেই ওই কলটা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বাকি কলগুলো আমরা মেরামত করে দেব।
সলমানপাড়ায় বেহাল রাস্তা।
আসাননগর বাজারে নিকাশি ব্যবস্থার অবস্থা বেহাল। সামান্য বৃষ্টিতেই জল জমে যায়। একই সঙ্গে ৬টি বুথেরও একই অবস্থা। এ দিকে, নিকাশি নালাটা অর্ধেক তৈরি করে ফেলে রাখা হয়েছে। এই বিষয়ে কী ভাবছে পঞ্চায়েত?
কৃষ্ণচন্দ্র মোদক, ভাটাপাড়া
• বেলতলার দিকে কিছু পরিবার পিডব্লিউডির জমির উপরে বসবাস করছে। তাঁদের জন্য স্থায়ী জায়গার ব্যবস্থা না করে তাঁদের ওখান থেকে তোলা যাচ্ছে না। সেই জমিও আমরা পাচ্ছি না। তাই বাকি নিকাশি নালার কাজ করতে পারছি না। তবে বিকল্প ব্যবস্থার কথা ভাবা হচ্ছে।
আসাননগর এলাকার যে বাইপাস ড্রেন রয়েছে, সেটা কাঁচা। ফলে জল বের হয় না। সামান্য বৃষ্টিতে এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ে। এর হাত থেকে রেহাই দেওয়া মতো কোনও স্থায়ী পরিকল্পনা কি পঞ্চায়েত থেকে করা হচ্ছে?
বিশ্বজিৎ বিশ্বাস, বাগানপাড়া
• নতুন অর্থ বছরে ওই ড্রেনটি পাকা করা হবে। সেই মতো দেড় লক্ষ টাকাও অনুমোদন করা হয়েছে।
আসাননগর বাজারে কোনও নির্দিষ্ট ময়লা ফেলার জায়গা নেই। ফলে সকলে রাস্তার ধারে, নর্দমায় ময়লা ফেলে।
স্বপন বিশ্বাস, ভাটাপাড়া
• সরকার থেকে আমাদের পচনশীল ও অপচনশীল দ্রব্যকে আলাদা করে রাখতে বলেছে। এতে জৈব সার তৈরি হয়। আয়ও হয়। কিন্তু জায়গার অভাবে সেটা করতে পারছি না।
পঞ্চায়েত থেকে রাস্তায় আলোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেই আলো অন্ধকার নামলে সঠিক সময় জ্বালানো হলেও, দিনের বেলায় নেভানো হয় না। যাঁদের এটা দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তাঁরা কি সঠিক ভাবে কাজ করছে না? এতে তো বিদ্যুতের অপচয় হচ্ছে।
উৎপল মুখোপাধ্যায়, বেলতলাপাড়া
• আমরা পয়সা দিয়ে কাউকে রাখিনি। কেউ কেউ স্বেচ্ছায় কাজটা করে দেন। এলাকার মানুষেরও দায়িত্ব আছে। যাঁদের বাড়ির সামনে সুইচ, তাঁদেরই উচিত দিনের বেলা বন্ধ করে দেওয়া।
আসাননগর বাজার থেকে মুসলিমপাড়া পর্যন্ত যে রাস্তা পিচের হয়েছে তার বেশ কিছুটা অংশ খুবই বেহাল। ওই অংশটায় সাইকেল চালিয়ে যাওয়ায় খুব কষ্টকর।
বিমল বিশ্বাস,হাসপাতালপাড়া
• বিষয়টা সংসদ সভায় তুলে ধরুন। আমরা গ্রাম সভায় তুলে ধরব। ওই এলাকার সদস্যরা যদি ওই রাস্তা সংস্কারের বিষয়টি অগ্রাধিকার দেন, তা হলে সেটাই করা হবে।
আমাদের বুথটা খুবই বড়। কিন্তু দু’জন সদস্য। শুধু তা-ই নয়, গ্রামের ভিতর দিয়ে যে রাস্তা চলে গিয়েছে, সেটা দিয়ে সিংহভাগ সদস্যই যাতায়াত করেন। কারোরই অজানা থাকার কথা নয়। এই রাস্তা চলে দিয়েছে দফরপোতা হয়ে ভীমপুর। প্রায় চারটি গ্রামের মানুষ যাতায়াত করেন। দীর্ঘদিন সংস্কার হয়নি। পিচ উঠে গিয়ে মাটি বেড়িয়ে গিয়েছে। সংস্কার কি হবে না?
চিরঞ্জীব বিশ্বাস, পুরাতনবাজার
• রাস্তাটি প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা প্রকল্পে অনুমোদন করা আছে। ফলে আমরা পঞ্চায়েতের তরফে কোনও টাকা খরচ করতে পারছি না। কারণ সে ক্ষেত্রে আমাদের পুরো টাকাটাই নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে। একটু সময় দিন, কাজ হয়ে যাবে।
আমাদের আসাননগর প্রাথমিক হাসপাতালে চিকিৎসা ব্যবস্থা খুব খারাপ। ডাক্তাররা হাসপাতাল চত্বরের ভিতরেই চেম্বার করে রোগী দেখতে ব্যস্ত। হাসপাতালে তাঁদের পাওয়াই যায় না। সেই সঙ্গে দুর্ব্যবহার। সাধারণ মানুষ সঠিক পরিষেবা পাচ্ছেন না।
সুষমা বিশ্বাস, কাশিপুর
• আমরা ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিককে বলেছিলাম বিষয়টি। উনি এসে চিকিৎসকদের বারণও করে গিয়েছিলেন। তার পরও যদি অবস্থার কোন পরিবর্তন না হয়ে থাকে, তা হলে জেলা কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে।
আসাননগরে বাস রাস্তার উপরে হাট বসে। ফলে হাটবারে ব্যাপক যানজট তৈরি হয়। দুর্ঘটনা লেগেই থাকে। অ্যাম্বুল্যান্স পর্যন্ত আটকে যায়।
মহাদেব বিশ্বাস, ঢাকুরিয়াপোতা
• আমরাও বিষয়টা নিয়ে অনেক দিন ধরেই চিন্তাভাবনা করছি। কিন্তু স্থায়ী হাট বসানোর জন্য কোনও জায়গা পাওয়া যাচ্ছে না।
হাসপাতাল বা পঞ্চায়েতের নিজস্ব অ্যাম্বুল্যান্স নেই। অনেক টাকা খরচ করে গাড়ি ভাড়া করে জেলা হাসপাতালে রোগী নিয়ে যেতে হয়।
রমেশ চন্দ্র পাল, হাসপাতালপাড়া
• আগের বিধায়ক সুশীল বিশ্বাস যে অ্যাম্বুলেন্স দিয়েছিলেন, সেটা আছে দফরপোতায়। বর্তমান বিধায়ক অবনীমোহন জোয়ারদারের কাছে একটা অ্যাম্বুল্যান্স চাওয়া হবে।
ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য