তুষারে ঢাকা পড়েছে অভিযাত্রীদের ক্যাম্প। ম্যাকের সৌজন্যে প্রাপ্ত
প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে পৃথিবীর অষ্টম উচ্চতম শৃঙ্গ জয় না করেই ফিরে আসতে হল ‘মাউন্টেনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন অব কৃষ্ণনগর’ (ম্যাক) অভিযাত্রীদের। তুষারঝড় ও বরফ-ধস সত্ত্বেও কার্যত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে একাধিক বার চেষ্টা করেও তাঁদের নেমে আসতে হয়। রবিবারই দলটি নদিয়ায় ফিরেছে।
নেপালের গণ্ডকী প্রদেশের গোর্খা জেলায় ৮১৬৩ মিটার উঁচু মানাসলু পর্বতশৃঙ্গ উচ্চতার নিরিখে বিশ্বে অষ্টম। ম্যাক সূত্রের খবর, সেপ্টেম্বরের শেষে সেই শৃঙ্গ জয় করার উদ্দেশ্যে পর্বতারোহণ শুরু করেছিল দলটি। কিন্তু প্রাকৃতিক বিপর্যয় শুরু হয়। তাতে অন্য দলের এক অভিযাত্রী ও দু’জন শেরপা মারা যান। ম্যাকের সদস্যেরা বিপর্যয়ের মধ্যে অভিযান জারি রাখার চেষ্টা করলেও পর পর দুই শেরপার মৃত্যুসংবাদ ও পরিস্থিতির প্রতিকূলতার জেরে তাঁদের শেরপারা আর এগোতে চাননি। ফলে শেষ পর্যন্ত অন্যান্য অভিযাত্রী দলের মতো তাঁরাও ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হন।
এই অভিযানে ম্যাকের তরফে নেতৃত্বে ছিলেন এভারেস্ট-জয়ী প্রথম অসামরিক বাঙালিদের অন্যতম বসন্ত সিংহরায়। সঙ্গে ছিলেন কৃষ্ণনগরের বাসিন্দা অসীম মণ্ডল, প্রশান্ত সিংহ, রানাঘাটের রুম্পা দাস, সুমিত্রা দেবনাথ ও সুব্রত ঘোষ।
গত ৩১ অগস্ট তাঁরা কৃষ্ণনগর থেকে যাত্রা শুরু করেন। ৬ সেপ্টেম্বর শুরু হয় পায়ে হাঁটা। এর পর দু’জন শেরপাকে সঙ্গে নিয়ে ২৫ সেপ্টেম্বর শুরু হয় পর্বতশৃঙ্গ জয়ের উদ্দেশে যাত্রা। তাঁদের জন্য চতুর্থ ক্যাম্পে ১৪টি অক্সিজেন সিলিন্ডার ও খাদ্যসামগ্রী নিয়ে যাচ্ছিলেন তিন জন শেরপা। মাঝপথে বরফে ধস নামে। তাতে অন্য শেরপাদের সঙ্গে ওই তিন জনও আহত হন। খোয়া যায় সিলিন্ডারগুলি। এর মধ্যে আবার তুষারঝড় শুরু হয়। ফলে সকলেই বেসক্যাম্পে নেমে আসতে বাধ্য হন।
এ দিন বাড়ি ফিরে রুম্পা বলেন, “পরে কিছু সিলিন্ডার উদ্ধার হয়। ওই পরিস্থিতিতেও দু’জন শেরপা আমাদের সঙ্গে উপরে উঠতে রাজি হন। ঠিক হয়, আমি আর প্রশান্ত সিংহ অভিযান শেষ করব। সেই মতো যাত্রা শুরুও করি। কিন্তু তৃতীয় ক্যাম্পে আমরা ফের প্রবল প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মধ্যে পড়ি। দু’জন শেরপার মৃত্যু হয়। ফলে শেষ পর্যন্ত অন্যান্য অভিযাত্রী দলের সঙ্গে আমরাও নেমে আসতে বাধ্য হই।”