অতিথি শিক্ষকই ভরসা। নিজস্ব চিত্র
স্কুল চলছে অতিথি শিক্ষক দিয়েই। নেই কোনও স্থায়ী শিক্ষক বা শিক্ষাকর্মী। পঠনপাঠনের পাশাপাশি করণিকের কাজ— সবই অতিথি শিক্ষকদের সামলাতে হয়।
এক সময়ে স্কুলে তিন জন অতিথি শিক্ষক থাকলেও বর্তমানে এসে তা ঠেকেছে এক জনে। তিনিই ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক। তাঁকে সাহায্য করতে স্কুল থেকে অবসর নেওয়া অতিথি শিক্ষকেরা এখনও স্কুলে আসেন। অবসরপ্রাপ্ত এক অতিথি শিক্ষক অশোক বিশ্বাস বলেন, “অবসর নেওয়ার পরেও আমরা কয়েক জন স্কুলের প্রতি ভালবাসা থেকে পড়ুয়াদের পঠনপাঠনে সাহায্য করি। বিনা পারিশ্রমিকেই করি।”
স্কুলটি কল্যাণী পুরসভার ১৮নম্বর ওয়ার্ডের রথতলা এলাকায়। স্কুলের নাম কাঁচড়াপাড়া রথতলা জুনিয়র হাইস্কুল। স্থানীয় ও স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই এলাকার ছেলেমেয়েদের পঠনপাঠনের জন্য হয় উত্তর ২৪ পরগনার কোনও স্কুল, তা না হলে কল্যাণী শহরের পান্নালাল ইন্সটিটিউট অথবা বিধানচন্দ্র মেমোরিয়াল গর্ভনমেন্ট গার্লস হাইস্কুলে আসতে হত। মাঝে প্রায় চার কিলোমিটার কোনও হাইস্কুল ছিল না। ২০১৭ সালে সরকার পোষিত পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত এই স্কুলের পথ চলা শুরু হয়।
বর্তমান ওই স্কুলের ছাত্রছাত্রী প্রায় ৬০ জন। স্কুলে নিয়মিত আসে ৩০ থেকে ৩৫ জন ছাত্রছাত্রী। ওই এলাকার একটু স্বচ্ছল পরিবারের ছেলেমেয়েরা শহরের অন্য স্কুলে চলে যাচ্ছে। ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের পুরপ্রতিনিধি দেবাশিস হালদার বলেন, “স্কুলে স্থায়ী শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীর খুব তাড়াতাড়ি প্রয়োজন। না হলে স্কুলটা অচল হয়ে পড়বে।”
স্কুলের শুরুর সময় প্রথমে দু’জন, পরে আরও এক জন অতিথি শিক্ষক আসেন। তাঁদের অবসরের পরে আরও তিন জন অতিথি শিক্ষক আসেন। এঁদের মধ্যে আবার দু’জন সম্প্রতি অবসর নিয়েছেন। এখন এক জনই অতিথি শিক্ষক হিসাবে তপন দেবদত্ত রয়েছেন। তিনি স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক। তিনি বলেন, “সামনের মাসে হয়তো আরও দু’জন অতিথি শিক্ষক আসবেন। স্থায়ী শিক্ষকের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছি। শিক্ষাকর্মীর জন্যও আবেদন করব।”
জেলার স্কুল শিক্ষা দফতরের এক কর্তা বলছেন, ‘‘উচ্চ প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগ না হলে স্থায়ী শিক্ষক দেওয়া সম্ভব নয়। অতিথি শিক্ষক দিয়ে চালাতে হবে।’’ আর নদিয়া জেলার বিদ্যালয় পরিদর্শক দিব্যেন্দু পাল বলেন, “স্কুলের বিষয়গুলি নিয়ে খোঁজ নিচ্ছি।”