সোনার গয়না। নিজস্ব চিত্র
দিন কয়েক আগে জেলায় তাপমাত্রার পারদ ছুঁয়েছিল ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তার সঙ্গেই চড়েছে সোনার দামও। তবে গত কয়েক দিনে প্রকৃতি সদয় হওয়ায় পারদ অনেকটা নামলেও সোনার দামে লক্ষ্যণীয় পতন নেই। কোনও দিন দাম বাড়ে, কোনও দিন বা সামান্য একটু কমে। সোনার দামের এই হেরফেরে ভরা বিয়ের মরসুমেও ধুঁকছেন স্বর্ণকাররা।
তাঁদের দাবি, অতিমারির সময় থেকেই সোনা-রুপোর গয়নার বিক্রিবাটায় মন্দা চলছে। অন্যবার নববর্ষ, অক্ষয় তৃতীয়া, ইদ কিংবা বিয়ের মরসুমে বাজার চাঙ্গা হলেও এ বার তার কোনও চিহ্ন নেই। উঠছে না সোনার বাজার। কারবারিরা জানাচ্ছেন, গত বছর এই সময় ১০ গ্রাম পাকা সোনার দাম (জিএসটি ছাড়া) ছিল ৫১,৭০০ থেকে ৫৩,৮০০ টাকার মধ্যে। সেটাই এ বছর ৬০,০০০ থেকে ৬১,০০০ টাকায় ঘোরাফেরা করছে। পরিসংখ্যান দেখলেই বোঝা যায়, সোনার দাম এক বছরে কতটা লাফিয়ে বেড়েছে। যাঁরা সোনার গয়না তৈরি করান বা সোনা সঞ্চয় করে ঘরে তুলে রাখেন, তাঁরা সোনার দাম কতটা থিতু হয়, তা দেখেই গয়না কেনার পথে হাঁটতে চাইছেন।
বিক্রেতারা জানান, অনেক ক্রেতাই তাঁদের কাছে এসে বলছেন, সোনার দাম কমলে তবেই তাঁরা গয়না করানো বা কেনার কথা ভাববেন। সোনার দাম একটু কমছে, পরদিনই বেড়ে যাচ্ছে, ফলে ক্রেতারা বাজারমুখো হচ্ছেন না। অনেক ক্রেতা আছেন যাঁরা বাংলা নববর্ষ, অক্ষয় তৃতীয়ার সময় নিয়ম মেনে সামান্য হলেও সোনা কেনেন। কিন্তু বর্তমানে সোনার দাম এতটাই বেশি যে তাঁরা বাজারে পা রাখছেন না। কিন্তু যাঁদের বাড়িতে বিয়ের অনুষ্ঠান, তাঁরাও কি কিনছেন না? এক সোনার ব্যবসায়ী বলেন, ‘‘তারা সোনা বাধ্য হয়ে কিনছেন বটে, তবে পরিমাণে অনেক কম। সব ক্ষেত্রেই অনুরোধ আসছে, হালকার মধ্যে গয়না বানানোর জন্যে।’’ নবারুণ বিশ্বাস নামে এক ব্যক্তির কথায়, “সামনেই মেয়ের বিয়ে। কিন্তু এখন সোনার যা দাম, তাতে আরেকটু অপেক্ষা করে কেনাটাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে। যদি শেষ পর্যন্ত দাম না কমে, তবে হালকা গয়নাই কিনে নেব। এ ছাড়া উপায় নেই।’’ আর ক্রেতাদের এই মনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন ছোট স্বর্ণশিল্পীরা। যাঁরা সোনার গয়না ভেঙে নতুন গয়না তৈরি করে দেন, বা সামান্য সোনা দিয়ে অলঙ্কার তৈরি করেন। বেলডাঙা বঙ্গীয় স্বর্ণশিল্পী সমিতির সম্পাদক অভিমূন্য কর্মকার বলেন, “নববর্ষ, অক্ষয় তৃতীয়া, ইদ মিটেছে, এখন বিয়ের মরসুম চলছে। কিন্তু সোনার দামের ওঠানামা যে ভাবে চলছে, তাতে ক্রেতারা অপেক্ষার পক্ষপাতী। ছোট স্বর্ণশিল্পীদের দোকানে সমস্যার শেষ নেই। স্বর্ণশিল্পীদেরও ঠিক মতো কাজ জুটছে না।”