CV Anand Bose visits Murshidabad

‘সব হারিয়ে গেল’! রাজ্যপালের পা ধরে কান্নায় ভেঙে পড়লেন মুর্শিদাবাদে নিহত বৃদ্ধের স্ত্রী, পুলিশকে ঘিরেও বিক্ষোভ

রাজ্যপাল বাড়িতে আসতেই তাঁর পা ধরে কান্না মুর্শিদাবাদে সেই নিহত বৃদ্ধের স্ত্রীর। কাঁদতে কাঁদতে তিনি রাজ্যপালকে বললেন, ‘‘আমার সব হারিয়েছে। ঘুমোতে পারছি না। দয়া করে কিছু করুন।’’

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০২৫ ১৩:৩০
Share:

জাফরাবাদে রাজ্যপাল। —নিজস্ব চিত্র।

মুর্শিদাবাদে অশান্তির আবহে নিহত বৃদ্ধ এবং তাঁর ছেলের বাড়িতে গেলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। বাড়়িতে রাজ্যপাল আসতেই তাঁর পা ধরে কান্নায় ভেঙে পড়লেন জাফরাবাদের সেই নিহত বৃদ্ধের স্ত্রী। কাঁদতে কাঁদতে তিনি রাজ্যপালকে বললেন, ‘‘আমার সব হারিয়েছে। আমরা ঘুমোতে পারছি না। আপনি দয়া করে কিছু করুন।’’

Advertisement

সব শুনে রাজ্যপাল বোসও সাহায্যের আশ্বাস দিলেন। নিহতের পরিবারকে দিয়ে এলেন ‘শান্তিকক্ষ’ (পিস রুম)-এর নম্বরও। বোস বলেন, ‘‘এলাকায় শান্তি ফিরিয়ে আনা হবে। ফোন নম্বর দেওয়া রইল। প্রয়োজনে আপনারা সরাসরি ফোন করবেন।’’ প্রসঙ্গত, জোড়া খুনে রাজ্য পুলিশ ইতিমধ্যেই তিন জনকে গ্রেফতার করেছে। বাকি জড়িতদেরও পাকড়াও করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন রাজ্য পুলিশের এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সুপ্রতিম সরকার।

নয়া ওয়াকফ আইন নিয়ে অশান্তির জেরে মুর্শিদাবাদের শমসেরগঞ্জ, সুতি এবং ধুলিয়ানের অনেক বাসিন্দা গঙ্গা পেরিয়ে ও পারে মালদহে আশ্রয় নিয়েছেন। শুক্রবার তাঁদের সেই শিবিরে গিয়েছিলেন রাজ্যপাল। শনিবার তিনি যান মুর্শিদাবাদের শমসেরগঞ্জের উপদ্রুত এলাকায়। সেখানে তিনি দুই নিহতের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন। নিহত বৃদ্ধের স্ত্রী রাজ্যপালকে জানান, তাঁরা খুবই আতঙ্কে রয়েছেন। অশান্তির সময় তাঁদের বাড়িতে লুটপাট চলেছে। তাঁদের দাবি, নিরাপত্তার স্বার্থে এলাকায় বিএসএফের স্থায়ী ক্যাম্প বসানো হোক। স্থানীয়দের সঙ্গেও কথা বলেছেন রাজ্যপাল। সকলের অভিযোগ শোনার পর তিনি বলেন, ‘‘রাজ্য সরকারের ভূমিকা নিয়ে কিছু অভিযোগ রয়েছে। তাঁরা যাতে সরাসরি ফোন করতে পারেন, সেই নম্বর দেওয়া হয়েছে। শান্তি প্রতিষ্ঠাই প্রধান লক্ষ্য। রাজ্য সরকারকে বলব, উপযুক্ত পদক্ষেপ করুন।’’ নিহতের বাড়িতে রাজ্যপাল যাওয়ার আগে সেখানে গিয়েছিলেন মালদহের ইংরেজবাজারের বিজেপি বিধায়ক শ্রীরূপা মিত্র।

Advertisement

জাফরাবাদের নিহত বৃদ্ধের স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন জাতীয় মহিলা কমিশনের সদস্যেরাও। সব শুনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারটিকে সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন তাঁরা। ধুলিয়ানের বেতবোনাতেও গিয়েছিলেন মহিলা কমিশনের প্রতিনিধিরা। সেখানে তাঁদের পা ধরে কান্না ভেঙে পড়েছিলেন স্থানীয় মহিলাদের একাংশ। স্থায়ী বিএসএফ ক্যাম্পের আর্জি জানান তাঁরা। পরে কমিশনের এক সদস্য বলেন, ‘‘দেশবাসী ও কেন্দ্রীয় সরকার আপনাদের পাশে আছে। বিএসএফ আপনাদের নিরাপত্তার দায়িত্ব নেবে।’’

রাজ্যপাল ধুলিয়ানেও গিয়েছিলেন। সেখান থেকে তিনি বেরিয়ে যাওয়ার পরেই স্থানীয়দের একাংশ পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেন। তাঁদের দাবি, পুলিশ রাজ্যপালকে তাঁদের কাছে আসতে দেননি। যার ফলে নিজেদের অভিযোগের কথা রাজ্যপালকে জানাতে পারেননি তাঁরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে বিএসএফও। যদিও পুলিশের বক্তব্য, রাজ্যপালের সফরসূচি তাঁরা তৈরি করেন না। রাজ্যপাল কোথায় দাঁড়াবেন আর কোথায় দাঁড়াবেন না, তা তাঁদের জানার কথা নয়। স্থানীয়দের ঘণ্টাখানেক অবস্থান বিক্ষোভের পর সেখানে যান রাজ্যপাল। কথাও বলেন বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement