গৌতম পাল
পরিবেশকর্মী এক চিকিৎসকের বাড়িতে বোমা মারল দুষ্কৃতীরা। শুক্রবার রাত একটা নাগাদ এই ঘটনা ঘটে শান্তিপুরে। আক্রান্ত পরিবেশকর্মীর নাম গৌতম পাল। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় শান্তিপুর থানায় পুলিশ। তদন্ত শুরু করেছে।
এ বারই কিন্তু প্রথম নয়। এর আগেও ২০১৪ সালে গৌতমবাবুর বাড়িতে বোমা মারা হয়েছিল। গত বছরও তাঁর চেম্বারে ঢুকে তাঁকে জোর করে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছিল স্থানীয় কিছু দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। সেই ঘটনায় পুলিশ এক জনকে গ্রেফতার করে। কিন্তু তার পরেও ছবিটা বদলায়নি। নিয়মিত হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে দাবি গৌতমবাবুর।
দীর্ঘদিন ধরে গৌতমবাবু ও তাঁর সংগঠনের সদস্যরা শান্তিপুরে অবৈধ ভাবে মাটি কাটা, পুকুর বোজানো-সহ একাধিক আমবাগানের গাছ কাটা নিয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে আসছেন। গত বছরও তাঁদের আন্দোলনের জেরে শান্তিপুর শহরের একাধিক আমবাগানের গাছ কাটা বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছিল পুলিশ। শুধু তা-ই নয়, শান্তিপুরের পরিবেশ রক্ষার জন্য একাধিকবার কলকাতা হাইকোর্টে মামলাও করেন গৌতমবাবু। তাঁর দাবি, ‘‘আমাদের আন্দোলনের জেরেই শাসক দল আশ্রিত স্থানীয় প্রোমোটাররা পুকুর বোজানো বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছেন। আমবাগানের গাছ কাটা বন্ধ করতে বাধ্য করেছি। আমার বিশ্বাস এ সবের বদলা নিতেই বাড়িতে বোমা মেরেছে ওরা।’’ তাঁর কথায়, ‘‘এর আগেও একই ঘটনা ঘটেছিল। অবৈধ ভাবে নদীর চর থেকে মাটি কাটা বন্ধ করতে আন্দোলনে নেমেছিলাম। সে বারও বাড়িতে বোমা মারা হয়েছিল।’’
কী ঘটেছিল গত কাল? গৌতমবাবু বলেন, ‘‘বাড়িতে একাই থাকি। রাত পৌনে একটা নাগাদ টিভি বন্ধ করে সবে শুতে গিয়েছি, পরপর দু’টো বোমার শব্দ। আমি ভাবতে পরিনি যে আমার বাড়িতেই বোমা পড়েছে। সকালে উঠে দেখি সিঁড়ির ঘরের দেওয়ালে বোমার চিহ্ন। পোড়া দড়ি পড়ে রয়েছে। বাথরুম আর সিঁড়ির ঘরের জানালার কাচ ভেঙে চার দিকে ছড়িয়ে আছে।’’
গৌতমবাবু জানান, হাইকোর্ট তাঁকে নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু তার পরেও অবস্থার কোনও পরিবর্তন হয়নি। তাঁর কথায়, ‘‘তৃণমূল আশ্রিত প্রোমোটাররা যতই ভয় দেখানোর চেষ্টা করুক না কেন, দমিয়ে রাখতে পারবে না।’’ যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন শান্তিপুর পুরসভার পুরপ্রাধান তৃণমূলের অজয় দে। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের দলের কেউ কোনও দিন এ সব গাছ কাটা বা পুকুর বোজানোর সঙ্গে যুক্তই ছিল না।’’
পুলিশ অবশ্য চুপ। রানাঘাটের এসডিপিও ইন্দ্রজিৎ বসু শুধু এই বলেই থেমে গিয়েছেন যে— ‘‘খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়েছিল। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’’ যেমন আগের ঘটনাগুলোর সময়
বলা হয়েছিল।