মার-ঝাড়ু: সাফাই অভিযানে হাত লাগিয়েছেন বিদেশিনীরা। নিজস্ব চিত্র
যে ভয়টা ছিল, সেটাই হল।
উৎসব শেষ। কিন্তু শহরের আনাচে কানাচে পড়ে রয়েছে দোলের স্মৃতি বিজরিত প্লাস্টিকের গ্লাস, প্যাকেট, শোলার থালা, এঁটো-কাঁটা, আরও কত কী!
কারণ দোলের ছুটিতে ভক্তের দল মায়াপুর-নবদ্বীপ ঘুরে-বেড়িয়ে যাওয়ার আগে পুণ্যভূমিতে উজাড় করে দিয়ে গিয়েছেন পার্থিব-অপার্থিব আবর্জনা। ভাঙা-উৎসবে সেই জঞ্জাল সাফ করতে গিয়ে নাজেহাল পুরসভা।
নবদ্বীপ এমনিতেই ঘন জনবসতিপূর্ণ শহর। বারো মাসে তেরো পার্বণের উপরেই এই শহরের জীবনজীবিকা নির্ভর করে। রাস, দোল, রথের মতো শহরের নিজস্ব উৎসবের সঙ্গে দেড়শোর বেশি মঠমন্দিরে নিয়মিত উৎসব হয়। দোলের সময় যেমন প্রায় পনেরো দিন ধরে লাখো মানুষ ভিড় করে। তার উপর বছরভর পর্যটকের যাতায়াতের জন্য আবর্জনার পরিমাণ এই শহরে এমনিতেই বেশি। সাধারণ সময় যেমন তেমন। কিন্তু কোনও উৎসব শেষ হলেই শহরের পাহাড় প্রমাণ আবর্জনা পরিষ্কার করতে গিয়ে নাভিশ্বাস ওঠে পুরসভার। তার মধ্যে আবার আবর্জনার একটি বড় অংশ জুড়ে প্লাস্টিক-জাত অপচনশীল দ্রব্য।
এ সবের পাশাপাশি শহরের সংকীর্ণ রাস্তার দু’ধারে গৃহস্থ বাড়ি থেকে নিত্যদিনের জঞ্জাল ছুঁড়ে ফেলার কু-অভ্যাস তো রয়েইছে। শহরটাকে প্রতিদিন আরও কদর্য করে তোলে যা।
এই অবস্থায় নবদ্বীপ পুরসভা শহর পরিষ্কার করতে সাহায্য নিচ্ছে ‘গারবেজ কমপ্যাক্টর’ নামে অত্যাধুনিক যন্ত্রের। নবদ্বীপ পুরসভার স্যানিটারি ইন্সপেক্টর দিব্যেন্দু আচার্য জানিয়েছেন, এমনিতে প্রতিদিন গড়ে ৬০ থেকে ৬২ মেট্রিক টন আবর্জনা জমা হয়। উৎসবের সময় আবর্জনার পরিমাণ আরও আট থেকে দশ মেট্রিক টন বেড়ে যায়।
নবদ্বীপে সতেরোটি ট্র্যাক্টর এবং একশো ভ্যান রিক্সা চিরাচরিত পদ্ধতিতে আবর্জনা সংগ্রহ করে ডাম্পিং গ্রাউন্ডে নিয়ে যায়। কিন্তু ক্রমশ বেড়ে চলা লোকসংখ্যা, বাজার, দোকান, বাড়ি ইত্যাদির কারণে প্রচলিত ওই পদ্ধতি যথেষ্ট হচ্ছিল না। তাই এ বার এক সঙ্গে দু’টি যন্ত্র নামানো হয়েছে পথে। পুরপ্রধান বিমানকৃষ্ণ সাহা বলেন, “সারা দিনে তিন দফায় কাজ করছে যন্ত্র। শহরের ক্রমবর্ধমান জঞ্জাল খুব স্বল্প সময়ে সাফ হয়ে যাচ্ছে এর ফলে।” খুব শিগগিরি পুরনো চেহারায় ফিরে আসবে নবদ্বীপ।