নির্দিষ্ট জায়গা না ছেড়ে বহুতলে নির্মাণের অভিযোগ রানাঘাটের জনবহুল রেল বাজারে। শুক্রবার। ছবি সুদেব দাস।
রানাঘাট শহর জুড়ে নিয়ম না মেনে বহুতল নির্মাণ করা নিয়ে সিপিএম ও বিজেপি আগেই সরব হয়েছিল। এ বার সরব হয়েছেন তৃণমূল নেতাদের একাংশও।
রানাঘাট শহরের প্রাণকেন্দ্র চৌরঙ্গি মোড় থেকে স্টেশন যাওয়ার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পথ সুভাষ অ্যভিনিউ। এই রাস্তার এক দিকে রয়েছে প্রধান বাজার। সেই ঘিঞ্জি বাজারের ভিতরেই একটি পুরনো ভবনের পাশে প্রায় কোনও জায়গা না ছেড়ে নির্মাণ কাজ চলছে একটি বহুতলের। সেটি এক তৃণমূল নেতার বলে দাবি স্থানীয় ব্যবসায়ীদের।
পুরভবনের দিক থেকে স্টেশনের দিকে যেতে সুভাষ অ্যভিনিউ থেকে বাঁ দিকে গিয়েছে সরু এক ফালি গলি। সেই গলি ধরে কিছুটা এগোলেই ডান দিকে আরও একটি গলি। তার শেষে ফের ডান দিকে মাত্র তিন ফুটের রাস্তা। তার পাশেই একটি পাঁচতলা বাড়ি নির্মাণের কাজ চলছে।
স্থানীয় সূত্রের দাবি, ওই বহুতল নির্মাণের সঙ্গে যুক্ত কুপার্স ১০ নম্বর ওয়ার্ডের প্রাক্তন পুরপ্রতিনিধি মৌমিতা সমাদ্দারের স্বামী বাবুসোনা সমাদ্দার। তিনি কুপার্স শহর তৃণমূলের সভাপতি দিলীপকুমার দাসের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। যদিও দিলীপের বক্তব্য, "নিয়ম না মেনে বহুতল নির্মাণ আমি সমর্থন করি না। বাবুসোনা আমাদের দলের হলেও অন্যায় সমর্থনযোগ্য নয়।" বাবুসোনা অবশ্য দাবি করেন, "নিয়ম মেনে নির্মাণ কাজ চলছে। পুরসভা থেকে যাবতীয় অনুমতিও নিয়েছি। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ আনা হচ্ছে।"রানাঘাটের সংযুক্ত ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি তথা তৃণমূল নেতা পিন্টু সরকারের দাবি, "রেল বাজার চত্বর জতুগৃহে পরিণত হয়েছে। রাতারাতি গজিয়ে উঠছে একের পর এক বহুতল। যে নকশা দেখিয়ে পুরসভা থেকে অনুমোদন নেওয়া হয়। সেই মত পরবর্তীতে আর ভবন নির্মাণ হয় না।"
ব্যবসায়ীদের একাংশের অভিযোগ, বহুতল ভেঙে পড়া ছাড়াও অগ্নিকাণ্ড ঘটলে বাজারের ভিতরে দমকল পৌঁছতে পারবে না। বিকল্প জলাশয়ের ব্যবস্থাও নেই। সেন্ট্রাল রেলগেটের কাছে জিএনপিসি রোডের পাশেও সম্প্রতি একটি বহুতল নির্মাণে নিয়মের তোয়াক্কা করা হয়নি বলে অভিযোগ। এ ছাড়া সিদ্ধেশ্বরীতলা, তালপুকুর পাড়া, ছোট বাজার, ভাংড়াপাড়া এলাকাতেও একাধিক বহুতলে নিয়ম ভাঙা হয়েছে বলে অভিযোগ।
পুরসভা কী করছে?
রানাঘাটের পুরপ্রধান কোশলদেব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "নিয়ম না মানায় একাধিক বহুতল নির্মাণ আমরা বন্ধ করেছি। অনেক ক্ষেত্রে জরিমানাও হয়েছে। যখন যেমন অভিযোগ আসে, সেই মতো ব্যবস্থা নিই।"