নীলরতন আঢ্য। ফাইল চিত্র
রাজনীতি তাঁর রক্তে। বহরমপুর পুরসভার সঙ্গে তাঁর বংশ পরম্পরায় অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক। আজ, বৃহস্পতিবার দুপুর ২টোয় সেই সম্পর্কে ছেদ পড়তে চলেছে।
নির্বাচিত কাউন্সিলদের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় এবং নতুন করে নির্বাচন না হওয়ায় বহরমপুর মহকুমাশাসক দীপাঞ্জন মুখোপাধ্যায়কে বহরমপুর পুরসভার দায়িত্ব তুলে দেবেন বিদায়ি পুরপ্রধান নীলরতন আঢ্য। পুরভবন প্রাঙ্গণে ম্যারাপ বাঁধা হয়েছে ২৮ জন কাউন্সিলরের বিদায়ি অনুষ্ঠানের জন্য।
তৃণমূল নিয়ন্ত্রিত ‘মুর্শিদাবাদ জেলা পৌর কর্মচারী ফেডারেশন’-এর পক্ষ থেকে বিদায়ি পুরপ্রধান ও বিদায়ী কাউন্সিলরদের সম্বর্ধনা দেওয়া হবে। নীলরতনের পিতামহ নগেন্দ্রনাথ আঢ্য ১৪ বছর এবং বাবা অমূল্যরতন আঢ্য ১৭ বছর কাউন্সিলর ছিলেন। প্রয়াত অমূল্যরতনের ছেলে নীলরতন কাউন্সিলর নির্বাচিত হন ১৯৮১ সালে। তিনি বলেন, ‘‘২৪ কি ২৫ বছর বয়সে প্রথম কাউন্সিলর হয়েছিলাম।’’
তার পর থেকে টানা ১০ বার তিনি কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। তিনি প্রথম উপ-পুরপ্রধান হন ১৯৯৮ সালে। আড়াই বছর পর তাঁকে উপ-পুরপ্রধানের পদ থেকে সরে যেতে হয়। পরে ২০০২ সালের জুন মাসে তাঁকে পুরপ্রধান করা হয়। টানা ৩৮ বছরের কাউন্সিলর নীলরতন কখনও নির্বাচনে হারেননি। তবে তাঁর কাউন্সিলর জীবনে এ বার নিয়ে তিন বার ছেদ পড়ল।
প্রথম বার ১৯৯১ সালে। পুরমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য বহরমপুর পুরবোর্ড ভেঙে দিয়ে প্রশাসক নিয়োগ করে ছিলেন। মাসখানেকের মধ্যে কলকাতা হাইকোর্ট প্রশাসক নিয়োগের নির্দেশ খারিজ করে দিয়ে কাউন্সিলদের হাতে পুরবোর্ডের দায়িত্ব তুলে দেয়।
নীলরতন বলেন, ‘‘১৯৯৮ সালে পুরবোর্ডর মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে নির্বাচন না করায় মাসখানেক কাউন্সিলর ছিলাম না। মাস খানেক পরে ভোটে আবার কাউন্সিলর নির্বাচিত হই।’’ ২০১৬ সলের ১৮ সেপ্টেম্বর তিনি সংখ্যাগরিষ্ঠ কাউন্সলিরদের সঙ্গে নিয়ে তৃণমূলে যোগ দেন। বর্তমান পুরবোর্ডের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আজ। নির্বাচন না হওযায় আজ দুপুরের পর থেকে তিনি আর কাউন্সিলর নন। পুরপ্রধানও নন।
প্রায় চার দশকের কাউন্সিলর জীবনের মধ্যে সাড়ে ১৬ বছর তিনি পুরপ্রধান ছিলেন। বহরমপুর টাউন তৃণমূল সভাপতি নাড়ুগোপাল মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘তাঁর আমলে তৈরি হয়েছে ‘মোহনা’ বাস টার্মিনাস, রাজপথে জলের এটিএম, ৭টি মার্কেট কমপ্লেক্স, ভাগীরথী পাড়ের ফুটপাথ, ব্যারাক স্কোয়ার মাঠে জগিং ট্র্যাক। লালদিঘি, ব্যারাক স্কোয়ার মাঠ, এফইউসি মাঠ ও ওয়াইএম মাঠের সৌন্দর্যায়ন। তালিকা দীর্ঘ।’’