প্রচার বেথুয়াডহরিতে। নিজস্ব চিত্র
অবশেষে পথে নামলেন ওঁরা!
বৃহস্পতিবার বেথুয়াডহরি অভয়ারণ্যে পিকনিক করতে আসা লোকজনের কাছে গিয়ে কেউ অনুরোধ করছেন, ‘‘সাউন্ড-বক্সের আওয়াজটা একটু কমিয়ে দেন প্লিজ। বনের প্রাণীগুলো বড় কষ্ট পাচ্ছে।’’
ফরাক্কার গঙ্গাপাড় কিংবা রঘুনাথগঞ্জের সবুজ দ্বীপে ঢোকার মুখেও দাঁড়িয়ে আছেন কয়েক জন। হাসি মুখে তাঁরাও বলছেন, ‘‘প্লাস্টিকের থালা-গেলাস ভিতরে নিয়ে যাবেন না।’’ পিকনিকের মরসুমে রীতিমতো তটস্থ থাকে অভয়ারণ্যের পশু-পাখি। আতঙ্কে থাকেন পিকনিক স্পট লাগোয়া এলাকার লোকজন। ডিজে বক্সের দৌরাত্ম্য, বেপরোয়া ভাবে গাড়ি চালানো, পিকনিক শেষে চারদিকে ছড়ানো ছেটানো প্লাস্টিকের থালা-গেলাস—যার নিট ফল দূষণের পাশাপাশি দুই জেলাতেই বাড়ছে দুর্ঘটনা।
বিপজ্জনক এই প্রবণতা রুখতে এ বার নদিয়ায় স্থানীয় প্রশাসন, স্কুল পড়ুয়াদের নিয়ে প্রচারে নামল বন দফতর। শীতকালে ছুটির দিনে দূরদূরান্ত থেকে বেথুয়াডহরিতে পিকনিক করতে আসেন বহু মানুষ। অভয়ারণ্য লাগোয়া জমিতে তারস্বরে মাইক বাজিয়ে, যেখানে সেখানে প্লাস্টিক ফেলে শেষ হয় পিকনিক। আনন্দের এই অত্যাচারে হাঁফিয়ে ওঠে গোটা পরিবেশটাই।
বন দফতরের কর্তারা বলছেন, ‘‘বন্য প্রাণীদের কথাটা একবার ভাবুন! কী যন্ত্রণা তাদের সহ্য করতে হয়। তাছাড়া তারস্বরে মাইক বাজিয়ে গাড়িগুলো যে ভাবে রাস্তা দিয়ে ছোটে তাতে যে কোনও মুহূর্তে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। সম্প্রতি বেথুয়াডহরি থেকে পিকনিক সেরে দিগনগরে ফেরার সময় দুর্ঘটনায় আট জন মারা গিয়েছেন।’’
২৬ জানুয়ারি বেথুয়াডহরি গার্লস হাইস্কুল ও চক হাতিশালা উচ্চ বিদ্যালয়ের পড়ুয়া, শিক্ষক ও স্থানীয় প্রশাসনকে সঙ্গে নিয়ে ডিএফও রানা দাস বেরিয়েছিলেন। পিকনিকে আসা লোকজনের হাতে লিফলেট ধরিয়ে তিনি অনুরোধ করলেন, ‘‘সাউন্ড বক্স জোরে বাজাবেন না। যেখানে সেখানে প্লাস্টিকও ফেলবেন না।’’
শীতে পিকনিকের সৌজন্যে ফরাক্কায় বাড়ছে প্লাস্টিক দূষণ। তা রুখতে ব্যরাজ এলাকায় ঢোকার মুখেই প্লাস্টিকের থালা, গেলাস, কাপ
আটক করা হচ্ছে। পিকনিক সেরে ফেরার পথে সব সামগ্রী ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। সবুজ দ্বীপে নিষিদ্ধ করা হয়েছে ডিজে বক্স।