প্রতীকী ছবি।
উচ্চ মাধ্যমিকের প্রথম দিনের পরীক্ষা মোটামুটি নির্বিঘ্নেই মিটল। তবে এ দিন পরীক্ষা দিতে আসেননি অনেক পরীক্ষার্থীই। খোঁজখবর নিয়ে বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষকরা জানতে পেরেছেন, অনুপস্থিতদের মধ্যে অধিকাংশই ছাত্রী। তাদের অনেকেরই বিয়ে হয়ে গিয়েছে। ইতিমধ্যে তাঁদের অনেকে মা-ও হয়ে গিয়েছেন।
শনিবার পরীক্ষা শুরু হতে দেখা যায়, হরিহরপাড়ার পদ্মনাভপুর হাইমাদ্রাসার ৬০ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে অনুপস্থিত পাঁচ জন ছাত্রী। অ্যাডমিট কার্ড না নেওয়ায় শিক্ষকরা তাদের ব্যাপারে খোঁজ নিয়েছিলেন। তাঁরা জানতে পারেন, অতিমারি কালেই ওই পাঁচ ছাত্রীর বিয়ে হয়ে গিয়েছে। তিন দিন আগে তাঁদের একজনের সন্তানও হয়েছে। ওই মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক মাইনুল ইসলাম বলেন, ‘‘ ফর্ম পূরণের সময় আমরা অনেক ছাত্রছাত্রীর বাড়ি গিয়ে জানতে পারি, ছাত্ররা অনেকে ভিন রাজ্যে কাজে চলে গিয়েছে। ছাত্রীদেরও বিয়ে হয়ে গিয়েছে।’’ হরিহরপাড়ার গোবরগাড়া হাইমাদ্রাসাতেও একই ঘটনা সামনে এসেছে। শিক্ষকরা দেখেন, ১১১ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ছ’জন ছাত্রী অ্যাডমিট কার্ড নিতে আসেননি। তাঁরা জানতে পারেন, তাঁদের প্রত্যেকেরই বিয়ে হয়ে গিয়েছে। এর মধ্যে চার জন আসন্নপ্রসবা। পরীক্ষা শুরুর পর তাঁদের দু’জনকে পরীক্ষাকেন্দ্রে আনা গেলেও বাকি চার জন পরীক্ষায় বসেননি, জানান মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক বকুল আহমেদ। নওদার টুঙ্গি এসএস হাই স্কুলের ১০১ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে পরীক্ষা দেননি সাত জন। তাঁরা সকলেই ছাত্রী। তাঁদেরও বিয়ে হয়ে গিয়েছে বলে খবর। হরিহরপাড়া হাই স্কুলের ২০০ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে পরীক্ষা দেননি চার জন। ওই চার ছাত্রীরও বিয়ে হয়ে গিয়েছে বলে জানতে পেরেছেন স্কুলের শিক্ষকরা।
হরিহরপাড়ার এক স্কুলের প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘‘করোনা আবহে দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ থাকায় অনেক ছাত্রীর বিয়ে হয়ে গিয়েছে। তাদের অনেকেই পরীক্ষা দেয়নি।’’ ওয়াকি বহাল মহলের ধারণা, ‘কন্যাশ্রী’ ও ‘রূপশ্রী’ প্রকল্প চালু হওয়ায় জেলায় ছাত্রের তুলনায় ছাত্রীর সংখ্যা বেড়েছে। তা সত্ত্বেও অভিভাবকদের একাংশের অসচেতনতার জন্যেই নাবালিকা মেয়েদের বিয়ে হয়ে যাচ্ছে। ছাত্রীদের এ ভাবে মাঝপথে পড়াশোনা ছেড়ে দেওয়ার ঘটনা সে কারণেই বাড়ছে বলে মনে করা হচ্ছে।