—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
দু’দিন লাগাতার বৃষ্টির জেরে পড়শি জেলা বীরভূম সহ রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় জল থইথই করছে। তবে গত দু’দিনের বৃষ্টিপাত মুর্শিদাবাদে আশীর্বাদ নিয়ে এসেছে। এমনিতে গ্রীষ্মের দাবদাহের জেরে মাঠঘাট ফেটে চৌচির হয়েছিল। জুন থেকে বর্ষা ঢুকে গেলেও সে ভাবে মুর্শিদাবাদে বৃষ্টিপাত হয়নি। যার জেরে ধান চাষ করতে গিয়ে যেমন কৃষকেরা বিপাকে পড়েছেন, তেমনই পাট পচানোর জল পাচ্ছেন না। এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার রাত থেকে ভারী বৃষ্টিপাত হওয়ায় হাসি ফুটেছে মুর্শিদাবাদের কৃষকদের। যেখানে চলতি বছরের বৃষ্টিপাতের ঘাটতি ছিল ৪৩.৩ মিলিমিটার। সেখানে গত দু’দিন ৯৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হওয়ায় বৃষ্টিপাতের ঘাটতি কমে দাঁড়িয়েছে ৩০ মিলিমিটারে। ফলে মাঠে মাঠে ধান লাগানোর গতি বেড়েছে। তবে কৃষক থেকে শুরু করে কৃষি দফতরের কর্তারা বলছেন, জেলায় আরও বৃষ্টিপাতের প্রয়োজন। তবেই পাট পচানোর মতো জল মিলবে খাল বিলে।
সেচ দফতরের কর্তারা জানিয়েছেন, মুর্শিদাবাদের সমস্ত নদীতেই জলস্তর বিপদসীমার অনেক নীচে রয়েছে। গঙ্গা বা অন্য কোনও নদীতে ভাঙনও নেই। মুর্শিদাবাদের অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) চিরন্তন প্রামাণিক বলেন, ‘‘এমনিতেই এ বছর বৃষ্টির ঘাটতি রয়েছে। যার জেরে এক রাত ভাল বৃষ্টিপাত হলেও এখনও খাল বিল পুকুর জলাশয় প্রায় জলশূন্য। এই বৃষ্টিতে ক্ষয়ক্ষতির কোনও খবর আমাদের কাছে নেই।’’
তবে লাগাতার বৃষ্টির জেরে বহরমপুর-সহ জেলার বিভিন্ন এলাকায় রাস্তাঘাট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। খানাখন্দে ভর্তি হয়েছে অনেক রাস্তা। অনেককেই কাদা পাঁক ঠেলে সেই রাস্তায় যাতয়াত করতে হচ্ছে। কিছু কিছু নিচু এলাকায় জল জমেছে। ডোমকল শহরের বেশ কিছু এলাকায় নিকাশি ব্যবস্থা না থাকায় জল জমেছে। অনেক গ্রামের নিচু জায়গায় জল জমেছে। তবে জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ সামসুজ্জোহা বিশ্বাস বলেন, ‘‘দু’দিনের বৃষ্টিতে বিভিন্ন এলাকায় বেশ কিছু রাস্তাঘাট খারাপ হয়েছে। সে সব তথ্য আসছে। সব এলাকার তথ্য এলে তা খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করা হবে।’’
কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে শুক্রবার সকাল ৮ টা পর্যন্ত জেলায় প্রায় ৭২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে শনিবার সকাল ৮ টা পর্যন্ত জেলায় প্রায় ২৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। শুক্রবার পর্যন্ত রাজ্য কৃষি দফতরের রিপোর্ট অনুযায়ী মু্র্শিদাবাদে ৪৯.৬১ শতাংশ জমিতে ধান লাগানো হয়েছে। দু’দিনের বৃষ্টিতে মাঠঘাটে ধান লাগানোর মতো জল জমেছে। এ দিন জেলা কৃষি দফতরের কর্তারা মাঠ পরিদর্শন করেছেন। মুর্শিদাবাদের উপকৃষি অধিকর্তা (প্রশাসন) মোহনলাল কুমার বলেন, ‘‘গত দু’দিনের বৃষ্টিপাত মুর্শিদাবাদের কৃষিক্ষেত্রে আশীর্বাদ হয়েছে।’’