লালবাগে বসেছে জল-যন্ত্র। নিজস্ব চিত্র
সেই চেনা ছবি। গরম পড়তে না পড়তেই পানীয় জলের যোগানে টান। এলাকা মুর্শিদাবাদ পুরসভা।
তবে সেই চেনা ছবিতে এ বার ছোট্ট একটি বদল এসেছে এ বার। রাস্তার ধারে বসেছে একটি নতুন যন্ত্র। ব্যাঙ্কের এটিএম যন্ত্রের মতোই দেখতে এ যন্ত্র। আসলে এটি এটিএম। তবে কার্ড ঘষে টাকা বেরোয় না এই যন্ত্র থেকে। বরং টাকা দিতে হয়। তেব বেশি নয়। মাত্র এক টাকা। আর তাতেই মিলছে এক লিটার পরিশ্রুত পানীয় জল।
পুরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডে একটি রাষ্ট্রায়াত্ত ব্যাঙ্কের শাখার পাশেই রাস্তার ধারে বসেছে ‘ওয়াটার ভেন্ডিং মেশিন’ বসিয়েছে পুরসভা। তাতে ব্যাঙ্ক গ্রাহক থেকে বহিরাগত পর্যটক এবং পথচলতি মানুষ সকলেই ওই যন্ত্র থেকে জল সংগ্রহ করে নিজেদের তেষ্টা মেটাচ্ছেন। যন্ত্রটি বসানোর পর থেকে জল কেনার হিড়িক পড়েছে শহরের বাসিন্দাদের মধ্যে।
পুরপ্রধান বিপ্লব চক্রবর্তী জানান, এক টাকার কয়েন ওই মেশিনের মধ্যে ফেললেই এক লিটার পরিশ্রুত পানীয় জল মিলবে। দু’টাকা ফেললে পাওয়া যাবে দু’লিটার জল। পুরসভার নিজস্ব খাতের প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ টাকা ব্যয়ে কেনা হয়েছে ওই যন্ত্র। তৃণমূল পরিচালিত মুর্শিদাবাদ পুরসভা আরও চারটি জল-যন্ত্র কিনেছে। সেগুলি পুরসভার বিভিন্ন জনবহুল ও ব্যস্ত এলাকায় বসানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। পুরপ্রধান জানান, প্রতি বছর এই শহরে কয়েক লক্ষ পর্যটক ভিড় করেন। বেড়াতে এসে তাঁদের যাতে জলের জন্য হয়রান না হতে হয়, সে জন্য জলের যন্ত্র বসানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।
লালবাগ হেরিটেজ অ্যান্ড কালচারাল ডেভলপমেন্ট সোসাইটির সম্পাদক স্বপন ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘ঐতিহাসিক নির্দশনগুলিতে পরিশ্রুত পানীয় জলের কোনও ব্যবস্থা নেই। পুরসভা জলের যন্ত্র বসানোর উদ্যোগ নিলে বিশেষ করে বহিরাগত পর্যটকদের দারুণ উপকার হবে।’’
নামি সংস্থার এক লিটার জলের দাম পড়ে ২০ টাকা। সেখানে এক টাকায় এক লিটার পরিশ্রুত পানীয় জল পাওয়ায় খুশি বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষক ও পড়ুয়ারা। শহরের এক বাসিন্দা বলেন, খুচরো নিতে চান না দোকানদাররা। ফলে বাড়িতে এক টাকার কয়েন ভাঁড়ারে পড়ে রয়েছে বিস্তর। এ বার সেগুলির সুরাহা হবে। আবার তার বিনিময়ে পরিস্রুত জলও মিলবে। এর থেকে ভাল ব্যবস্থা আর কী হতে পারে!
শহরের এক পান-বিড়ি দোকানের মালিক আবার ওই যন্তের জল বোতলে ধরে রেফ্রিজারটরে ঠান্ডা করে পর্যটকদের তিন টাকা প্রতি লিটার বিক্রি করছেন। ভালই সাড়া মিলছে বলে তিনি জানান।